Wednesday 11 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

চেহারাই বদলে গেছে তিতুমীর কলেজের ব্যবস্থাপনা বিভাগের


২৩ ফেব্রুয়ারি ২০২২ ১২:৫৩

কলা ভবনের একতলা সিঁড়ি পেরিয়ে বাঁ-পাশে ব্যবস্থাপনা বিভাগ। সিঁড়ি পেরিয়ে করিডোরের মুখে তাকালেই এখন চোখে পড়ছে নানার প্রজাতির গাছ। পুরো করিডোরটাই যেন আগের চেয়ে সজ্জিত। আনুসাঙ্গিক পরিবর্তনে অফিস কক্ষও বেশ পরিপাটি। অমুল পরিবর্তন এসেছে সেমিনার কক্ষে। বই যেমন বেড়েছে, বসে পড়ার পরিবেশও উন্নত হয়েছে অনেকটা। নতুন বর্ষের শিক্ষার্থীদের আগমনের আগে রাজধানীর সরকারী তিতুমীর কলেজের ব্যবস্থাপনা বিভাগের চেহারাই যেন পাল্টে গেছে।

প্রফেসর শামীমা পারভীন বিভাগ প্রধান হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকেই অবকাঠামোগত পরিবর্তন লক্ষ্য করা গেছে। গত বছরের আগস্টে সরকারি তিতুমীর কলেজের ব্যবস্থাপনা বিভাগের বিভাগ প্রধান হিসেবে দায়িত্বে পান শামীমা পারভীন। জানালেন, দায়িত্বে বসার পর থেকেই প্রয়োজনীয় পরিবর্তনের উদ্যোগ নিয়েছেন তিনি। শিক্ষা কার্যক্রমে সহায়ক উপকরণ দিয়ে সাজিয়ে তুলতে চেয়েছেন ব্যবস্থাপনা বিভাগকে। কয়েক মাসের ব্যবধানে দেখা গেল সেটারই প্রতিফলন।

সেমিনার কক্ষ ঘুরে দেখা গেল অনেক বই বেড়েছে আলমারিগুলোতে। আলমারিগুলোও এখন বেশ পরিপাটি। সংস্করণ করা হয়েছে চেয়ার, টেবিল। নতুন রংয়ে চকচকে দেয়ালে শোভা পাচ্ছে ব্যবস্থাপনার বিখ্যাত সব মনীষীদের ছবি, অর্জনের গল্প এবং গুরুত্বপূর্ণ বাণী। কৃত্রিম আলো ও বাতাসের ব্যবস্থাও বাড়ানো হয়েছে।

সারাবাংলার সঙ্গে আলাপকালে শামীমা পারভীন বলছিলেন, ‘আমি দায়িত্ব নেওয়ার পর যখন প্রথম সেমিনারে গেলাম তখনই সিদ্ধান্ত নেই যে সেমিনারে কাজ করব। সেমিনার অন্য রকম ছিল। কোভিডের কারণে দীর্ঘদিন বন্ধ থাকাটা এতে একটা ভূমিকা রেখেছে। আমি বই বাড়ানোর উদ্যোগ নিয়েছি এবং শিক্ষার্থীদের পড়ার পরিবেশ আরও সুন্দর করে তুলতে যা যা অবকাঠামোগত উন্নয়নের প্রয়োজন আমি সেটা করার চেষ্টা করেছি এবং এখনো করছি। এতে আমার সহকর্মী শিক্ষক-শিক্ষিকাদের ভালো সহযোগিতা পেয়েছি আমি। আমার ইচ্ছা আছে সেমিনারকে আরও সুন্দর করে তোলার কাজ আমি অব্যাহতই রাখব। বিশেষ করে নতুন নতুন বই আমি নিয়মিতই কিনতে চাই। সামনে আমাদের নতুন বর্ষের শিক্ষার্থীরাও আসবে।’

তিনি বলেন, ‘আমি আমাদের অফিস রুমেও দরকারি কিছু কাজ করেছি। খাবার পানি বা বই রাখার স্থানগুলো সংস্করণের চেষ্টা করেছি। আবার ছাত্রদের খাবার পানির সু-ব্যবস্থা নিশ্চিতসহ সামনের করিডোরটি সুন্দর করে রাখার চেষ্টা করছি। কিছু গাছ কেনা হয়েছে, আরও কিছু গাছ আসবে। আমি মনে করি ব্যবস্থাপনা বিভাগ থাকবে পরিপাটি এবং শিক্ষাবান্ধব। ব্যবস্থাপনা বিভাগেই যদি অব্যবস্থাপনা থাকে তাহলে তো হলো না!’

কোভিডকালীন সময়ে অনলাইনে ব্যবস্থাপনা বিভাগের ক্লাস পরিচালনা করা হয়েছে। কলেজ খোলা থাকার সময়ে নিয়ম করে ক্লাস নেওয়া হয় অফলাইনে। পুরো বিষয়টি মনিটরিং করেন শামীমা পারভীন। সম্প্রতি ক্লাস বরাদ্দের ব্যবস্থাও করেছেন তিনি। তবে আক্ষেপও ঝরল বিভাগীয় প্রধানের কণ্ঠে। শামীমা পারভীন বলেছেন, ‘আমাদের ক্লাসরুমের সংকট। আমাদের যারা শিক্ষক-শিক্ষিকা আছেন সকলেই ক্লাস নিতে খুবই আগ্রহী। আমি নিজেও ক্লাসরুম মুখী। কিন্তু দেখা যায় অনেক সময় আমরা পর্যাপ্ত ক্লাসরুম পাই না। ক্লাসরুম সংকটের কারণে অনেক কিছু প্ল্যান করতে পারি না। আমাদের তো অনেক শিক্ষার্থী। পর্যাপ্ত ক্লাসরুম থাকলে আমরা শিফট করেও ক্লাস নিতে পারত, কিন্তু সেটা আসলে হয়ে উঠে না। আশা করছি, ক্লাসরুম সংকটের এই সমস্যা দ্রুতই সমাধান হবে।’

সেমিনারকে সাজিয়ে তোলার প্রসঙ্গে ব্যবস্থাপনা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ড. রাজিব আহসান বলেন, ‘আমাদের তো শিক্ষক সংকট, ক্লাসরুম সংকট। তাহলে শিক্ষকদের সংস্পর্শে এতো শিক্ষার্থী কিভাবে আসবে? একটা উপায় হতে পারে সেমিনারকে উন্নত করা। আমরা যদি সেমিনারে বিভিন্ন বই রাখতে পারি বা বিভিন্ন পত্র-পত্রিকা থাকল, সেটা ভালো হয়। যারা সেমিনারে বসতে চায় তাদের জন্য যদি একটা ভালো পরিবেশ করতে পারি তাহলে একটা সাইড দিয়ে এগুনো হলো। সেসব দিক চিন্তা করে আমরা সেমিনারে কাজ করছি। কাজ এখনো শেষ হয়নি। সেমিনারে অনেককিছু করার পরিকল্পনাই আমাদের আছে।’

উল্লেখ্য, সরকারি তিতুমীর কলেজের ব্যবস্থাপনা বিভাগে সব বর্ষ মিলিয়ে শিক্ষার্থী সংখ্যা প্রায় ৪ হাজার। বিপরীতে শিক্ষক আছেন ১১ জন এবং ক্লাসরুম ৪ টি। যা অধিক সংখ্যক শিক্ষার্থীর জন্য অপ্রতুল।

সরকারি তিতুমীর কলেজ


বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ
সম্পর্কিত খবর