Friday 22 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

নিপুণ-জায়েদ বিবাদ: স্থিতাবস্থার আদেশ কঠোরভাবে অনুসরণের নির্দেশ

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট
১৪ মার্চ ২০২২ ১১:৪৯

নিপুণ‌ ও জায়েদ খান, ফাইল ছবি

ঢাকা: বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির নির্বাচনে সাধারণ সম্পাদক পদ নিয়ে চেম্বার আদালতের আদেশ কঠোরভাবে (স্ট্রিক্টলি) অনুসরণের নির্দেশ দিয়েছেন আপিল বিভাগ। এর আগে সাধারণ সম্পাদক পদ নিয়ে হাইকোর্টের রায়ের ওপর স্থগিতাদেশ এবং স্থিতাবস্থা জারি করেছিল চেম্বার আদালত।

নিপুণ আক্তারের বিরুদ্ধে জায়েদ খানের করা আদালত অবমাননার অভিযোগের ওপর আবেদনের শুনানি নিয়ে সোমবার (১৪ মার্চ) প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন আপিল বেঞ্চ এ আদেশ দেন।

বিজ্ঞাপন

আদালতে জায়েদ খানের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী আহসানুল করীম ও নাহিদ সুলতানা যুথি। নিপুণ আক্তারের পক্ষে ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী রোকনউদ্দিন মাহমুদ।

আদেশের পর জায়েদ খানের আইনজীবী আহসানুল করীম বলেন, চেম্বার জজ যে আদেশ (স্থিতাবস্থা) দিয়েছেন, সেটি স্ট্রিক্টলি (কঠোরভাবে) ফলো করতে বলেছেন সর্বোচ্চ আদালত। ওই স্থিতাবস্থার আগে জায়েদ খান অফিসে বসেছিলেন এবং কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছিলেন। এখন আপিল বিভাগ যেহেতু স্থিতাবস্থা স্ট্রিক্টলি ফলো করতে বলেছেন, তার অর্থ— জায়েদ খান এই চেয়ারে কন্টিনিউ করবেন।

নিপুণের আইনজীবী রোকন উদ্দিন মাহমুদ অবশ্য দ্বিমত পোষণ করছেন আহসানুল করীমের সঙ্গে। রোকন উদ্দিন বলেন, নিপুণ চেয়ারে আছেন। তিনিই থাকবেন।

আরও পড়ুন-

বিজ্ঞাপন

চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির সাধারণ সম্পাদকে কে দায়িত্ব পালন করবেন, তা নিয়ে বিবাদ চলছে এক মাসেরও বেশি সময় ধরে। গত ২৮ জানুয়ারি চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির নির্বাচনে সাধারণ সম্পাদক পদে জয় পান চিত্রনায়ক জায়েদ খান। পরদিন আরেক প্রার্থী নিপুণ নির্বাচনে বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগ তুলে আবেদন করলে জায়েদ খানের প্রার্থিতা বাতিল করে আপিল বোর্ড। গত ৫ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যায় জায়েদ খানের প্রার্থিতা বাতিল হওয়ায় চিত্রনায়িকা নিপুণকে এই পদে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ী ঘোষণা করেন নির্বাচনের আপিল বোর্ডের চেয়ারম্যান সোহানুর রহমান সোহান।

আপিল বোর্ডের এই সিদ্ধান্তের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে ৭ ফেব্রুয়ারি হাইকোর্ট রিট দায়ের করেন করেন জায়েদ খান। আদালত রিটের শুনানি নিয়ে নির্বাচনি আপিল বোর্ডের দেওয়া সিদ্ধান্ত স্থগিত করেন। একইসঙ্গে জায়েদ খানের প্রার্থিতা বাতিলের সিদ্ধান্ত কেন অবৈধ হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করা হয়।

পরে হাইকোর্টের দেওয়া আদেশ স্থগিত চেয়ে আপিল বিভাগের চেম্বার আদালতে আবেদন করেন নিপুণ। সেই আবেদনের শুনানি নিয়ে ৯ ফেব্রুয়ারি জায়েদ খানের প্রার্থিতা বাতিলে হাইকোর্টের দেওয়া সিদ্ধান্ত স্থগিত করেন চেম্বার আদালত। একইসঙ্গে চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির সাধারণ সম্পাদক পদে দায়িত্ব পালনের ওপর স্থিতাবস্থা জারি করা হয়। পরে ১৩ ফেব্রুয়ারি নিপুণ লিভ টু আপিল দায়ের করেন। প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগ এ আবেদনের শুনানি নিয়ে ১৪ ফেব্রুয়ারি শিল্পী সমিতির সাধারণ সম্পাদক পদে চেম্বার আদালতের জারি করা স্থিতাবস্থা বহাল রাখেন। একইসঙ্গে হাইকোর্টের আদেশের ওপর চেম্বার আদালতের জারি করা স্থগিতাদেশও বহাল রাখা হয়। পাশাপাশি এ বিষয়ে জারি করা রুল হাইকোর্টকে নিষ্পত্তি করতে নির্দেশ দেওয়া হয়।

২৩ ফেব্রুয়ারি হাইকোর্টের ওই রুলের শুনানি শুরু হয়। শুনানি শেষে ২ মার্চ বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির নির্বাচনে সাধারণ সম্পাদক পদে জায়েদ খানের প্রার্থিতা বাতিল করে নিপুণ আক্তারকে সাধারণ সম্পাদক পদে বিজয়ী ঘোষণার সিদ্ধান্ত অবৈধ ঘোষণা করেন হাইকোর্ট। পরদিন ৩ মার্চ হাইকোর্টের রায় স্থগিত চেয়ে আপিল বিভাগে আবেদন করেন নিপুণ আক্তার।

এই আবেদনের শুনানি শেষে গত ৬ মার্চ জায়েদ খানকে বহাল রাখতে হাইকোর্টের রায় চার সপ্তাহের জন্য স্থগিত করেন সুপ্রিম কোর্টের চেম্বার আদালত। একইসঙ্গে সাধারণ সম্পাদক পদে স্থিতাবস্থা বজায় রাখার নির্দেশ দেন। পাশাপাশি হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে নিপুণ আক্তারকে নিয়মিত আপিল দায়ের করতে বলেন চেম্বার আদালত। আগামী ৪ এপ্রিল এ বিষয়ে আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে শুনানির দিন নির্ধারণ করা হয়েছে।

৬ মার্চ আদেশের পর আইনজীবী আহসানুল করিম সাংবাদিকদের বলেছিলেন, আমি আদালতকে বলেছি— জায়েদ খান অফিস চালিয়ে আসছিলেন এবং সাধারণ সম্পাদক পদে সেখানে বসেছিলেন। পাশাপাশি তিনি রেজুলেশনে সাইন করেছেন। তখন আদালত বলেছেন— জায়েদ খান যেহেতু বসে গেছেন, অফিস চালাচ্ছেন, তিনিই অফিস চালিয়ে যাবেন।

এ অবস্থায় সাধারণ সম্পাদক পদে জায়েদ খানকে দায়িত্ব চালিয়ে যেতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলে জানান আইনজীবী আহসানুল করিম।

তবে নিপুণের আইনজীবী মোস্তাফিজুর রহমান খান ওই দিন বলেছিলেন, চেম্বার আদালতের আদেশে দু’টি বিষয় রয়েছে। একটি হলো— হাইকোর্টের রায়ের কার্যকারিতা চার সপ্তাহের জন্য স্থগিত করেছেন চেম্বার আদালত, আরেকটি উভয় পক্ষকে স্থিতি অবস্থা বজায় রাখতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এই সময়ের মধ্যে হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে নিপুণ আক্তারকে নিয়মিত আপিল দায়ের করতে বলা হয়েছে।

তিনি বলেন, এখন যদি হাইকোর্টের রায়ের কার্যকারিতা স্থগিত থাকে, তাহলে যে রায়ের অনুবলে জায়েদ খান বলতে চাচ্ছেন তিনি এই সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক, সেই রায়েরই কোনো কার্যকারিতা নেই। সেই রায়ের কার্যকারিতা যদি না থাকে অর্থাৎ নির্বাচনি আপিল বোর্ডের সিদ্ধান্তকে যে অবৈধ ঘোষণা করা হলো, সেই অবৈধ ঘোষণার কার্যকারিতা যদি স্থগিত থাকে; তাহলে এই মুহূর্তে নির্বাচনি আপিল বোর্ডের সিদ্ধান্ত বহাল। আর নির্বাচনি আপিল বোর্ডের সিদ্ধান্ত যদি বহাল থাকে, তাহলে নির্বাচনি আপিল বোর্ডের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী নিপুণ আক্তার বর্তমানে এই সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক।

সারাবাংলা/কেআইএফ/টিআর

চলচ্চিত্র শিল্প সমিতি জায়েদ খান নিপুণ আক্তার

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর