করোনাকাল কাটিয়ে চট্টগ্রামে এবার সাড়ম্বরে বুদ্ধ পূর্ণিমা
১৫ মে ২০২২ ১৫:২৭
চট্টগ্রাম ব্যুরো: করোনাভাইরাসের (কোভিড-১৯) সংক্রমণ কমে আসায় দুই বছর পর চট্টগ্রামে এবার সাড়ম্বরে বুদ্ধ পূর্ণিমা উদযাপন হচ্ছে। মন্দিরে-মন্দিরে সম্মিলিত প্রার্থনা, শোভাযাত্রাসহ নানা ধর্মীয় আয়োজনে মেতেছেন বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীরা। বিভিন্ন ধর্মের নানা শ্রেণিপেশার মানুষও এতে একাত্ম হচ্ছেন।
রোববার (১৫ মে) সকাল থেকে নগরীর নন্দনকানন বৌদ্ধবিহারসহ বিভিন্ন মন্দিরে ভক্তদের আনাগোনা শুরু হয়। বিহারে পূজা এবং ভিক্ষুদের সেবা দিয়ে জগত ও জীবের মঙ্গল কামনায় প্রার্থনায় অংশ নিচ্ছেন তারা।
গৌতম বুদ্ধের জন্ম, বুদ্ধত্বলাভ ও বুদ্ধের মহাপরিনির্বাণ ত্রিস্মৃতি বিজড়িত বৈশাখী পূর্ণিমা বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের কাছেই বুদ্ধপূর্ণিমা নামে পরিচিত। প্রতিবছর বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীরা এই দিনটিকে জাকজমকভাবে পালন করে থাকেন। করোনাভাইরাসের সংক্রমণ পরিস্থিতিতে গত দুই বছর চট্টগ্রামে সামাজিক দূরত্ব মেনে সীমিত আকারে বুদ্ধ পূর্ণিমার আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন হয়েছিল।
চট্টগ্রাম জেলায় ৩২৪টি ও নগরীতে ৩১টিসহ মোট ৩৫৫টি বৌদ্ধমন্দিরে প্রতিবছর বুদ্ধ পূর্ণিমা অনুষ্ঠিত হয়। এসব মন্দিরে দিনব্যাপী ত্রিপিটক পাঠ চলছে। উপাসক ও উপাসিকাদের পঞ্চশীল ও অষ্টশীল দেওয়ার পাশাপাশি সন্ধ্যার পর থেকে শুরু হবে সম্মিলিত প্রার্থনা ও মোমবাতি প্রজ্বলন।
এদিকে বুদ্ধ পূর্ণিমা উপলক্ষে সকালে শোভাযাত্রা বের করে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন। নগরীর আন্দরকিল্লায় পুরাতন নগর ভবন থেকে বের হওয়া শোভাযাত্রার উদ্বোধন করেন চসিকের ভারপ্রাপ্ত মেয়র গিয়াস উদ্দিন।
বক্তব্যে ভারপ্রাপ্ত মেয়র গিয়াস উদ্দিন বলেন, ‘গৌতম বুদ্ধের আদর্শ ধারণ ও লালন করে আমাদের এই দেশকে শান্তির দেশ হিসেবে গড়ে তুলতে সবাইকে ভূমিকা রাখতে হবে। সম্প্রীতিময় আদর্শ সমাজ গঠনে সবার ভূমিকা অপরিহার্য। হাজার বছর ধরে আমাদের এই ভূখণ্ডে সব ধর্মের মানুষ উৎসবমুখর পরিবেশে নিজ-নিজ ধর্মের আচার অনুষ্ঠান নির্বিঘ্নে পালন করে আসছে। বাংলাদেশের সংবিধানে সবার সমঅধিকার নিশ্চিত করা হয়েছে। এই দেশে ধর্ম যার যার উৎসব সবার।’
এতে আরও বক্তব্য রাখেন- চসিকের ওয়ার্ড কাউন্সিলর জহরলাল হাজারী, পুলক খাস্তগীর, নির্বাহী প্রকৌশলী জয়সেন বড়ুয়া, বোধিমিত্র বড়য়া, জ্যাতিপ্রিয় বড়ুয়া, বিভাস বড়ুয়া, বিক্রম বড়ুয়া, রিপন বড়ুয়া।
এদিকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ ক্যাম্পাসে শনিবার শোভাযাত্রা করেছে চমেক বৌদ্ধ ছাত্র সংসদ ও চমেক বৌদ্ধ পূর্ণিমা উদযাপন পরিষদ। শোভাযাত্রার উদ্বোধন করেন ইউএসটিসির সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ডা. প্রভাত চন্দ্র বড়ুয়া। এসময় চমেক অধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. সাহেনা আক্তার, চমেক হাসপাতালের উপ-পরিচালক ডা. অংসুই প্রু মারমা, বিএমএ চট্টগ্রামের সাধারণ সম্পাদক ডা. মো. ফয়সল ইকবাল চৌধুরী, চমেক উপাধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. হাফিজুল ইসলাম, চমেক শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ডা. মনোয়ারুল হক শামীম, চমেক হাসপাতালের শিশু স্বাস্থ্য ও নবজাতক বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ডা. জগদীশ চন্দ্র দাশ, রেডিওলজি অ্যান্ড ইমেজিং বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ডা. সুভাষ মজুমদার, অ্যানেসথেসিয়া বিভাগের অধ্যাপক ডা. হারুন অর রশীদ, চর্ম ও যৌন রোগ বিভাগের প্রধান ডা. সাইফুল ইসলাম, চমেক শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক ডা. প্রণয় কুমার দত্ত ছিলেন।
সারাবাংলা/আরডি/এনএস