Saturday 28 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে কত দরিদ্র পড়েছে— জানতে চান হাইকোর্ট

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট
৩০ মে ২০২২ ১৮:৩৭

ফাইল ছবি: হাইকোর্ট

ঢাকা: বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় আইন-২০১০ অনুযায়ী দেশের ১০৫টি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে ২০১০ সাল থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত কতজন বীর মুক্তিযোদ্ধার সন্তান, দরিদ্র ও সুবিধাবঞ্চিত শিক্ষার্থীকে বিনা বেতনে পড়ার সুযোগ দেওয়া হয়েছে তা জানতে চেয়েছেন হাইকোর্ট। আগামী ৬০ দিনের মধ্যে ইউজিসিসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে এ বিষয়ে প্রতিবেদন দাখিল করতে বলা হয়েছে।

একইসঙ্গে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ২০১০ সাল থেকে এখন পর্যন্ত কত টাকা গবেষণার জন্য বরাদ্দ করা হয়েছে, এ বিষয়েও আদালতে তথ্য দাখিল করতে বলা হয়েছে। এছাড়া বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় আইনের ৯(৪) ধারা, ৯(৬) ধারা, ১২ ও ৪৯ ধারা বাস্তবায়নে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও ইউজিসির নিষ্ক্রিয়তা কেন বেআইনি ও অবৈধ ঘোষণা করা হবে না, রুলে তা জানতে চাওয়া হয়েছে।

বিজ্ঞাপন

সোমবার (৩০ মে) বিচারপতি মো. মজিবুর রহমান মিয়া ও বিচারপতি খিজির হায়াতের হাইকোর্ট বেঞ্চ রুলসহ এ আদেশ দেন।

আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী জ্যোর্তিময় বড়ুয়া। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বিপুল বাগমার। আগামী ১৪ আগস্ট এ মামলার পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য করা হয়েছে।

পরে আইনজীবী জ্যোতির্ময় বড়ুয়া বলেন, ‘প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় আইন-২০১০ এর ৯(৪) ধারা অনুযায়ী প্রতিবছর মুক্তিযোদ্ধাদের সন্তান এবং দরিদ্র মেধাবী সন্তানদের জন্য ৬ শতাংশ আসন সংরক্ষণ করার কথা রয়েছে। সেটি করা হচ্ছে না। এছাড়া আইনের ৯(৬) উপধারা অনুযায়ী প্রতি বছর বিশ্ববিদ্যালয়ের মঞ্জুরী কমিশন কর্তৃক বরাদ্ধকৃত একটি সুনির্দিষ্ট অংশ গবেষণার জন্য রাখার কথা। এই হিসাবগুলো পাঠাতে হবে ইউসিজির কাছে। ইউজিসি পরবর্তী সময়ে এই প্রতিবেদন পাঠাবে মন্ত্রণালয়ের কাছে। পরে মন্ত্রণালয় পাঠাবে সংসদীয় কমিটির কাছে। তারা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবেন। আমরা কনজুমার অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে সেটা জানার জন্য চেষ্টা করেছি।’

বিজ্ঞাপন

তিনি বলেন, ‘কনজুমার অ্যাসোসিয়েশনের অনুসন্ধানে উঠে এসেছে যে, ২০১০ সাল থেকে এখনও পর্যন্ত কোনো বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় গরীব-মেধাবী শিক্ষার্থীদের ভর্তি কোটা ও গবেষণার কাজে টাকা বরাদ্দ দেয়নি।’

তিনি আরও বলেন, ‘একই আইনের ১২ ধারা অনুযায়ী সরকারের কর্তব্য হচ্ছে আইন ভঙ্গ হলে সেই বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুমোদন বাতিল এবং সব শিক্ষা কার্যক্রম বন্ধ ঘোষণা করবে। ধারা-৪৯ এ বলা হয়েছে, এগুলো ফৌজদারি অপরাধ হিসেবে গণ্য করে তাদের বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা করতে হবে। এর পরিপ্রেক্ষিতে ৫ বছরের কারাদণ্ড ১০ লাখ টাকা জরিমানা এবং উভয় দণ্ডের ব্যবস্থা আছে। বিগত বছরগুলোতে এসব কারণে কোনো বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার কথা আমরা শুনিনি।’

এ কারণে কনজুমার অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষে গত ৩১ জানুয়ারি রাষ্ট্রপতি ও বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যদের বরাবর বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) মাধ্যমে এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য একটি আবেদন পাঠানো হয়। পরবর্তী সময়ে ইউজিসি ওই আবেদনটি মন্ত্রণালয়ে পাঠায়। এ বিষয়ে ইউজিসি কোনো তথ্য সরবরাহ না করায় হাইকোর্টে রিট দায়ের করা হয়। এরপর গত ২৫ এপ্রিল সংশ্লিষ্টদের প্রতি আইনি নোটিশ পাঠানো হয়। এসব বিষয়ে যথাযথ পদক্ষেপ না নেওয়ায় পরবর্তী সময়ে কনজুমার অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষে স্থপতি মোবাশ্বের হোসেন হাইকোর্টে রিট দায়ের করেন।

রিটে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের সচিব, অতিরিক্ত সচিব, ইউজিসি এবং ইউজিসির চেয়ারম্যানকে বিবাদী করা হয়। ওই রিটের শুনানি নিয়ে আদালত আজ রুলসহ আদেশ দিয়েছেন।

রুলে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় আইন অনুযায়ী এসব বিষয় বাস্তবায়নে সরকার কেন ব্যবস্থা নেয়নি এবং যেসব বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় এসব বিষয়ে পদক্ষেপ নেয়নি তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে সরকারের নিষ্ক্রিয়তা কেন বেআইনি ও অবৈধ ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চাওয়া হয়েছে।

একইসঙ্গে আগামী ৬০ দিনের মধ্যে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় আইন-২০১০ এর ৯(৪) ধারা অনুযায়ী কতজন দরিদ্র ও মেধাবী শিক্ষার্থীকে সুযোগ দেওয়া হয়েছে এবং ওই আইনের ৯(৬) ধারা অনুযায়ী গবেষণায় ২০১০ থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত কী পরিমাণ অর্থ বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে, তা জানিয়ে প্রতিবেদন দাখিল করতে বলেছেন আদালত।

এ বিষয়ে পরবর্তী শুনানির জন্য আগামী ১৪ আগস্ট দিন ধার্য করেছেন হাইকোর্ট।

সারাবাংলা/কেআইএফ/পিটিএম

টপ নিউজ বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় হাইকোর্ট

বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ

সিটিকে রুখে দিল নিউক্যাসেল
২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ২০:০৮

সম্পর্কিত খবর