এবার শ্রীলংকার প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নিলেন রনিল
১৫ জুলাই ২০২২ ১৮:২০
দেউলিয়াত্বের প্রান্তে পৌঁছে যাওয়া শ্রীলংকার প্রধানমন্ত্রী হিসেবে মাত্র দুই মাস আগে শপথ নিয়েছিলেন এর আগেও চার বার দেশটির সরকারপ্রধানের দায়িত্ব পালন করা রনিল বিক্রমাসিংহে। এরপর দুই মাসেও দেশটির পরিস্থিতির কোনো পরিবর্তন হয়নি। উল্টো প্রেসিডেন্ট গোটাবায়া রাজাপাকসে পালিয়েছেন দেশ ছেড়ে, প্রবাসে থেকেই পাঠিয়ে দিয়েছেন পদত্যাগপত্র। পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে এবার রনিল শপথ নিলেন দেশটির ভারপ্রাপ্ত প্রেসিডেন্ট হিসেবে।
শুক্রবার (১৫ জুলাই) দুপুরে শ্রীলংকার ভারপ্রাপ্ত প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নেন রনিল বিক্রমাসিংহে। তাকে শপথ পড়ান দেশটির প্রধান বিচারপতি জয়ন্ত জয়সুরিয়া। এখন রনিলের নেতৃত্বেই শনিবার থেকে শ্রীলংকার নতুন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের প্রক্রিয়া শুরু হবে সংসদে।
গত কয়েক মাস ধরেই ভয়াবহ অর্থনৈতিক সংকটের মধ্যে রয়েছে শ্রীলংকা। দেশটিতে ওষুধ ও খাবার দুষ্প্রাপ্য হয়ে উঠেছে। বিদ্যুৎ সরবরাহও ব্যাহত হচ্ছে অনেক দিন থেকেই। মিলছে না জ্বালানি। দেশটির সদ্য সাবেক প্রেসিডেন্ট গোটাবায়া রাজাপাকসে ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী মাহিন্দা রাজাপাকসে এবং তাদের পরিবারের দুর্নীতি ও অব্যবস্থাপনাকেই এর জন্য দায়ী করে আসছে জনতা। এর জের ধরেই গত ৯ মে পদত্যাগ করেন প্রধানমন্ত্রী মাহিন্দা। তিনি দেশ ছাড়লে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব নেন রনিল।
আরও পড়ুন-
- শ্রীলংকায় জরুরি অবস্থা জারি
- মালদ্বীপে গা ঢাকা দিয়েছেন রাজাপক্ষে
- মালদ্বীপ ছেড়ে জেদ্দা যাচ্ছেন গোতাবায়া
- ৭ দিনের মধ্যে নতুন প্রেসিডেন্ট পাবে শ্রীলংকা
- শ্রীলংকায় সরকারবিরোধী বিক্ষোভে তরুণের মৃত্যু
- সিঙ্গাপুর থেকে পদত্যাগপত্র পাঠালেন গোতাবায়া রাজাপাকসে
এরপর গত দুই মাসে পরিস্থিতির কোনো উন্নতি না হওয়ায় ফের উত্তাল হয়ে ওঠে শ্রীলংকা। গত শনিবার (৯ জুলাই) প্রেসিডেন্টের বাসভবন দখলে নেন হাজার হাজার বিক্ষুব্ধ জনতা। তবে এর মধ্যেই সেখান থেকে বেরিয়ে যান প্রেসিডেন্ট গোটাবায়া রাজাপাকসে। দেশ ছাড়তে বাধ্য হন তিনি। প্রথমে মালদ্বীপ ও পরে সিংগাপুরে আশ্রয় নেন তিনি। সেখান থেকেই পাঠিয়ে দেন পদত্যাগপত্র। তাতে কারফিউ ভঙ্গ করে আনন্দ মিছিল করেন শ্রীলংকানরা।
এ পরিস্থিতিতেই রনিল এবার ভারপ্রাপ্ত প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব নিলেন। যদিও তার পদত্যাগের দাবিও জানিয়েছিলেন আন্দোলনকারীরা। তাদের ভাষ্য, রনিলের সঙ্গে রাজাপাকসে পরিবারের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে। ফলে তাকেও পদত্যাগ করতে হবে। তবে আপাতত সেই দাবি পূরণ হচ্ছে না। বরং শনিবার শুরু হতে যাওয়া সংসদ অধিবেশনে সপ্তাহখানেকের মধ্যেই নতুন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের যে প্রক্রিয়া রয়েছে, তাতেও রনিলেরই নতুন প্রেসিডেন্ট হওয়ার সম্ভাবনা বেশি দেখছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।
আন্দোলনকারী মানুরি পাবাসারি এ পরিস্থিতিতে বলছেন, আগামী দিনে রনিলের বিরুদ্ধেও বিক্ষোভ শুরু হবে। কারণ তার প্রতি মানুষের সমর্থন নেই। তিনি রাজাপাকসে সমর্থক হিসেবেও সুপরিচিত। তাই আমরা বলতে চাই, রাজাপাকসের সমর্থক এবং তাদের ঘনিষ্ঠ কারও নতুন প্রেসিডেন্ট বা প্রধানমন্ত্রী হওয়া উচিত হবে না। তেমনটি হলে বিক্ষোভও থেমে থাকবে না।
সারাবাংলা/টিআর