‘সুফিয়া কামাল হলে প্রাতিষ্ঠানিকভাবে নারী নির্যাতিত হলো’

।। বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক ।। 

ঢাকা: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কবি সুফিয়া কামাল হলে প্রাতিষ্ঠানিকভাবে নারী নির্যাতিত হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন বিশিষ্ট কলামিস্ট সৈয়দ আবুল মকসুদ।

রোববার (২২ এপ্রিল) সকাল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অপরাজেয় বাংলার পাদদেশে ‘সচেতন শিক্ষকদের ব্যানারে’ ‘ছাত্র-ছাত্রীদের নিরাপত্তা ও মর্যাদা রক্ষা কর’ শীর্ষক মানববন্ধনে একথা বলেন তিনি।

সৈয়দ আবুল মকসুদ বলেন,’ মধ্যরাতে ছাত্রীদের হল থেকে বের করে দেওয়া একটি বেদনাদায়ক ঘটনা৷ বাংলাদেশে নারীরা নানাভাবে নির্যাতিত হচ্ছে৷ কিন্তু এই প্রথম প্রাতিষ্ঠানিকভাবে নারী নির্যাতনের ঘটনা ঘটল৷ আর সে ঘটনা বাংলাদেশের শ্রেষ্ঠ ভূ-খণ্ড ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ঘটেছে ৷ আমি শিক্ষকদের সকল দাবির সাথে সংহতি জানিয়ে বলছি, প্রাতিষ্ঠানিকভাবে যে নারী নির্যাতনের ঘটনা ঘটেছে , তা যেন এদেশে আর পুনরাবৃত্তি না ঘটে৷ এটা সকলের কাছে খুবই লজ্জার ৷’

মানববন্ধনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সচেতন শিক্ষদের পক্ষ থেকে ছাত্র-ছাত্রীদের নিরাপত্তার কথা উল্লেখ করে কয়েকটি দাবি পেশ করা হয়৷ দাবিগুলো হলো- বিশ্ববিদ্যালয় সকল ছাত্র-ছাত্রীর নিরাপত্তা অক্ষুন্ন রাখতে হবে এবং তাদের মতপ্রকাশের অধিকার নিশ্চিত করতে হবে, ক্যাম্পাসে সকল শিক্ষার্থী’র নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে এবং বিধি সম্মতভাবে  অন্য কারো বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া যাবে না, রাষ্ট্রীয় বাহিনী কিংবা বেসরকারী কোনো গোষ্ঠী দ্বারা কোনো ছাত্র-ছাত্রী যাতে আক্রান্ত না হয়, সেজন্য অবিলম্বে একটা বিশেষ সেল গঠন করতে হবে, অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে নয়, আন্দোলন চলাকালে ঘটে যাওয়া অনাকাঙ্খিত ঘটনার সাথে সুনির্দিষ্ট ভাবে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় উপাচার্যের বাসভবনে তাণ্ডবের ঘটনাগুলোর সাথে যারা সুনির্দিষ্টভাবে জড়িত, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে, বিশ্ববিদ্যালয় উপাচার্য বাসভবন সহ সকল আবাসিক এলাকায় নিরাপত্তা জোরদার করতে হবে এবং শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের মর্যাদা অক্ষুন্ন রাখতে হবে ও তাদের ব্যক্তিগত গোপনীয়তার সুরক্ষা দিতে হবে ৷

এ সময় সভাপতির বক্তব্যে অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক এম এম আকাশ বলেন, ‘আমরা কোনও বিশেষ রঙের স্বার্থ উদ্ধার করার জন্য এখানে দাঁড়াই নাই। আমরা সাধারণ ছাত্র,শিক্ষক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বার্থ রক্ষার জন্য এখানে দাঁড়িয়েছি। যে সংকট তৈরি হয়েছে, তার জন্য রাষ্ট্রযন্ত্র দায়ী। আমরা জানি বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্য ও প্রক্টরের অনুমতি ছাড়া ক্যাম্পাসে পুলিশ ঢুকতে পারে না। আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনে যারা রয়েছেন তারা তাদের দায়িত্ব সঠিক ভাবে পালন করছেন না। আমরা হলে হলে দেখতে পাই সেখানে সামন্ত প্রভুর কর্তৃত্ব কায়েম হয়েছে। কিন্তু সেই হলের প্রভোস্ট সেই হলের হাউজ টিউটরের দায়িত্ব ছিল এই ধরনের কার্যক্রম থেকে তাদের বিরত রাখা। কিন্তু তারা দলের স্বার্থ দেখবেন নাকি ছাত্রদের স্বার্থ দেখবেন, এই দুয়ে দ্যোদুল্যমান রয়েছেন।’

মানববন্ধনে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক ড.রোবায়েত ফেরদৌসের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত মানববন্ধনে আরও বক্তব্য রাখেন ইংরেজি বিভাগের শিক্ষক অধ্যাপক তাসনীম সিরাজ মাহবুব,মনোবিজ্ঞান বিভাগে অধ্যাপক নাসরীন ওয়াদুদ