Sunday 24 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

রাবিতে আধিপত্য বিস্তারে সক্রিয় ছাত্রশিবির

মাহী ইলাহি, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট
২৮ জুলাই ২০২২ ০৯:৫৮

রাজশাহী: রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষাকে কেন্দ্র করে আবারও সক্রিয় হয়ে উঠেছে মানবতাবিরোধী অপরাধে অভিযুক্ত দল জামায়াতে ইসলামীর ছাত্র সংগঠন ইসলামী ছাত্রশিবির। তারা রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়সহ আশপাশের এলাকায় আধিপত্য বিস্তারের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। তারা ক্যাম্পাসে ঢুকতেও মরিয়া হয়ে উঠছে।

জানা গেছে, ছাত্রশিবির তাদের সাংগঠনিক কার্যক্রম গোপনে চালিয়ে যাচ্ছে। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীদের সংগঠনে নিয়ে আসার জন্য বিভিন্ন কৌশল গ্রহণের মাধ্যমে অবস্থান জানান দিচ্ছে সংগঠনটি। নতুন শিক্ষার্থী ও পুরনো কিছু শিক্ষার্থীদের মাধ্যমে তারা ক্যাম্পাসে আবারও শক্ত অবস্থান তৈরি করার চেষ্টা করছে।

বিজ্ঞাপন

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ও এর আশেপাশের বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, শিক্ষার্থীদের শুভেচ্ছা জানানোর জন্য দেওয়াল লিখন করেছে শিবির। এছাড়াও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তারা জানান দিচ্ছে তাদের অবস্থান। ফেসবুকে দেখা গেছে ইসলামী ছাত্রশিবির ২৯ নম্বর ওয়ার্ড কমিটি একটি ইভেন্টও খুলেছে রাবির ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীদের জন্য। তবে সে ইভেন্টে কার্যক্রম লক্ষ্য না কার গেলেও তারা গোপনে সবকিছু করে যাচ্ছে। বিভিন্ন সময় গোপন বৈঠকও করছে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের আশেপাশের এলাকা মেহেরচন্ডি, বিনোদপুর, কাজলা, ধরমপুর, মির্জাপুর, ভদ্রা, বুধপাড়া, চৌদ্দপাই, কাটাখালী, তালাইমারীসহ বিভিন্ন এলাকায় দেওয়াল লিখন করেছে শিবির। তারা এসব এলাকায় বেশ সক্রিয়। এসব এলাকার বিভিন্ন মেসে অবস্থান করে আড়ালে কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে ছাত্রশিবিরের নেতাকর্মীরা।

অপরদিকে, যেকোনো মূল্যে শিবিরের বিরুদ্ধে শক্ত অবস্থান ও বিশ্ববিদ্যালয়ে শিবিরের আধিপত্য ঠেকাতে প্রস্তুত আছে ছাত্রলীগসহ বিভিন্ন ছাত্রসংগঠনগুলো। তারা বলছে, কোনো মৌলবাদী সংগঠনকে ক্যাম্পাস থেকে শুরু করে কোনো এলাকায় থাকতে দেওয়া হবে না। তাদের শেকড় আবারও উপড়ে ফেলা হবে। তাদের প্রতিহত করতে ঐক্যবদ্ধ আছে সবাই।

বিজ্ঞাপন

রাবি ছাত্রলীগ শাখার সাধারণ সম্পাদক ফয়সাল আহমেদ রুনু বলেন, ছাত্রশিবির একটি সন্ত্রাসী সংগঠন। আমরা কোনোভাবে চাই না তারা ক্যাম্পাসে এসে শিক্ষার পরিবেশ অস্থিতিশীল করে তুলুক। ছাত্রশিবির তাদের কোনো কর্মকাণ্ড না চালাতে পারে সেই দিকে খেয়াল রাখছি।

বাংলাদেশ ছাত্রমৈত্রীর তথ্য ও প্রযুক্তি সম্পাদক ও রাজশাহী মহানগর সভাপতি ওহিদুর রহমান ওহি বলেন, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ও বাইরে প্রগতিশীল ছাত্র সংগঠনগুলোকে ঐক্যবদ্ধ থাকা লাাগবে। শিবির গত ১০ বছর থেকে গোপনে তাদের সাংগঠনিক কার্যক্রম পরিচালনা করছে। এই গোপন চক্রকে প্রতিহত করতে আমরা সবসময় প্রস্তুত আছি। আমরা সবসময় দাবি জানিয়ে এসেছি গণতান্ত্রিক অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশের। প্রতিটা ক্যাম্পাসে গণতান্ত্রিক পরিবেশ থাকবে আমাদের এটাই কাম্য।

রাজশাহী মহানগর ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ডা. সিরাজুম মুবিন সবুজ বলেন, ছাত্রশিবিরের কোনো কাজই প্রকাশ্যে করে না। তারা রাতের অন্ধকারে দেওয়াল লিখন করেছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের আশেপাশের এলাকায় শিবির সক্রিয় হয়ে উঠছে বলে শুনেছি। তবে তারা যদি কোনো অরাজকতা সৃষ্টি করে আমরা আগের মতো আবারও তাদের প্রতিহত করব। আমাদের সকল নেতাকর্মীদের নির্দেশ দেওয়া আছে। এছাড়াও যেসব এলাকায় দেওয়াল লিখন করেছে আমরা সেসব মুছে দেবো।

রাকসু আন্দোলন মঞ্চের আহ্বায়ক আবদুল মজিদ অন্তর বলেন, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে গণতান্ত্রিক পরিবেশ আছে। কোন সাম্প্রদায়িক মৌলবাদী গোষ্ঠী নেই বললেই চলে। ছাত্রশিবির সবার নজরে আসার জন্য তারা প্রচার চালাচ্ছে। তবে এজন্য প্রশাসনের তৎপরতার থাকতে হবে। তারা কোন ভয়ভীতি সৃষ্টি না করতে পারে প্রশাসনকে দেখা লাগবে।

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর আসাবুল হক বলেন, ছাত্রশিবিরের বিষয়ে আমরা কঠোর অবস্থানে আছি। তারা গোপনে সবকিছু পরিচালনা করে। ক্যাম্পাসে শিবিরের এখন আর কোনো কর্মকাণ্ড নেই। যদিও ক্যাম্পাসে প্রবেশ করে অস্থিতিশীল পরিবেশ তৈরি করতে চায় তাদের বিরুদ্ধে প্রশাসনিক ভাবে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার রফিকুল আলম বলেন, আমাদের গোয়েন্দা নজরদারি আছে। তারা কাজ করছেন। যদি অপ্রীতিকর কোন কিছু দেখা যায় আমরা অবশ্যই ব্যবস্থা নেবো।

সারাবাংলা/এসএসএ

ছাত্রশিবির

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর