৫-১১ বছর বয়সীর ভ্যাকসিন: মানতে হবে যেসব শর্ত-নির্দেশনা
২৮ জুলাই ২০২২ ২০:৩৭
ঢাকা: শেষ পর্যন্ত ৫ বছর থেকে শুরু করে ১২ বছরের কম বয়সী সব শিশু শিক্ষার্থীকে ভ্যাকসিনের আওতায় আনার সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত করেছে সরকার। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদফতর (মাউশি) থেকে এ সংক্রান্ত একটি আদেশ জারি করা হয়েছে, যা পৌঁছে দেওয়া হয়েছে সংশ্লিষ্ট দফতরগুলোতে। একইসঙ্গে এই আদেশে শিক্ষার্থীদের ভ্যাকসিন দেওয়ার জন্য ১২টি শর্ত ও নির্দেশনা তুলে ধরা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (২৮ জুলাই) মাউশির মহাপরিচালক পদে রুটিন দায়িত্বে থাকা অধ্যাপক মো. শাহেদুল খবির চৌধুরীর সই করা এই অফিস আদেশ জারি হয়েছে মাউশি সাধারণ প্রশাসন শাখা থেকে।
মাউশির আদেশে শিশুদের ভ্যাকসিন প্রয়োগের জন্য সুরক্ষা প্ল্যাটফর্মে নিবন্ধন করতে বলা হয়েছে। পাশাপাশি যে ১২টি শর্ত ও নির্দেশনা তুলে ধরা হয়েছে সেগুলো হলো—
১। শিক্ষার্থীদের বয়সসীমা হবে ৫ বছর থেকে ১১ বছর (১১ বছর ৩৬৪ দিন) পর্যন্ত;
২। ভ্যাকসিন নিতে হলে শিক্ষার্থীদের অবশ্যই সুরক্ষা অ্যাপ বা ওয়েবসাইটে নিবন্ধিত হতে হবে;
৩। শিক্ষার্থীদের জন্ম নিবন্ধন নম্বর অবশ্যই ১৭ ডিজিটের (ডিজিটাল) হতে হবে;
৪। যেসব শিক্ষার্থীর ১৭ ডিজিটের জন্ম নিবন্ধন নম্বর নেই, তাদের অবশ্যই ১৭ ডিজিটের জন্ম নিবন্ধন করিয়ে নিতে হবে। সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান প্রধান ও অভিভাবকদেরকে বিষয়টি নিশ্চিত করতে হবে;
৫। বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিক্ষার্থীদের জন্য সুরক্ষা অ্যাপ বা ওয়েবসাইটে নিবন্ধন বাধ্যতামূলক নয়;
৬। বিদেশি পাসপোর্টধারী শিক্ষার্থীরা সুরক্ষা প্ল্যাটফর্মে নিবন্ধিত হওয়ার আগে নিজ নিজ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে নির্ধারিত এক্সেল ছকে নির্ধারিত ফরম্যাটে [email protected] ঠিকানায় তথ্য পাঠাবে। এ ক্ষেত্রে পাসপোর্ট নম্বর, দেশের আইডি, নাম, লিঙ্গ, ভিসার ধরন, ভিসার নম্বর, ভিসার মেয়াদ, অভিভাবকের কর্মস্থল এবং জন্ম তারিখের মতো তথ্যগুলো পূরণ করতে হবে;
৭। কোনো শিক্ষার্থী যেন ভ্যাকসিন থেকে বাদ না পড়ে, সেভাবে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোকে তালিকা প্রণয়ন করতে হবে;
৮। শিক্ষার্থীদের ভ্যাকসিনপ্রাপ্তি নিশ্চিত করতে প্রয়োজনীয় প্রচারণা চালাতে এবং সংশ্লিষ্ট অভিভাবকদেরকে নিয়মিত এ কার্যক্রম সম্পর্কে বিস্তারিত অবহিত করতে হবে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে;
৯। ভ্যাকসিন প্রয়োগ কার্যক্রম সুশৃঙ্খলভাবে শেষ করতে প্রতিটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে প্রয়োজনীয়সংখ্যক স্কাউট/গার্ল গাইডস/রোভার স্কাউট/গার্ল ইন রোভার/রেড ক্রিসেন্ট/বিএনসিসি সদস্যদের স্বেচ্ছাসেবক হিসাবে নিয়োজিত করতে হবে। যেসব প্রতিষ্ঠানে এ ধরনের দল নেই, সেসব প্রতিষ্ঠান নিজস্ব শিক্ষার্থীদের নিয়ে প্রয়োজনীয়সংখ্যক স্বেচ্ছাসেবক দল গঠন করে কার্যক্রম পরিচালনা করবে;
১০। প্রতিটি প্রতিষ্ঠান ভ্যাকসিন কেন্দ্রে সুষ্ঠুভাবে কার্যক্রম পরিচালনা করতে প্রয়োজনীয়সংখ্যক শিক্ষককে দায়িত্ব দেবে;
১১। নির্ধারিত সূচি অনুযায়ী নির্ধারিতসংখ্যক শিক্ষার্থীর ভ্যাকসিন কেন্দ্রে উপস্থিতি নিশ্চিত করতে হবে;
১২। ভ্যাকসিন প্রয়োগ কার্যক্রম সংক্রান্ত প্রয়োজনীয় নির্দেশনা বা পরামর্শের জন্য সংশ্লিষ্ট আঞ্চলিক পরিচালক/ উপপরিচালক/ জেলা শিক্ষা/ উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা/ থানা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তার দফতরের সঙ্গে প্রতিষ্ঠান প্রধানরা যোগাযোগ রাখবেন।
মাউশির এ সংক্রান্ত আদেশটি দেখুন এখানে—
গত বছরের ১৪ অক্টোবর প্রথমবারের মতো ১৮ বছরের কম বয়সী শিক্ষার্থীদের ভ্যাকসিন প্রয়োগ শুরু হয়। ওই দিন মানিকগঞ্জের সদর উপজেলার চারটি স্কুলের ১২ থেকে ১৭ বয়সী ১২০ জনকে পরীক্ষামূলকভাবে এই ভ্যাকসিন দেওয়া হয় কর্নেল মালেক মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে। পরে গত ১ নভেম্বর দেশব্যাপী এই বয়সী শিক্ষার্থীদের ভ্যাকসিন প্রয়োগ শুরু হয়। রাজধানীর মতিঝিল আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজে এই কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি ও স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক।
এরপর থেকেই স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বলে আসছে, ৫ থেকে ১১ বছর বয়সী শিশুদেরও করোনা ভ্যাকসিনের আওতায় নিয়ে আসা হবে। মাউশি থেকে সে বিষয়েই চূড়ান্ত ঘোষণা এলো, যদিও এখনো ভ্যাকসিন প্রয়োগের দিনক্ষণ নিয়ে কোনো ঘোষণা আসেনি।
ফাইল ছবি
সারাবাংলা/টিআর
করোনা ভ্যাকসিন কোভিড ভ্যাকসিন টপ নিউজ মাউশি শিক্ষার্থীদের ভ্যাকসিন