Saturday 14 Dec 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

পঞ্চম শ্রেণি পাশ করেই ডিগ্রিধারী ‘চিকিৎসক’

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট
৯ আগস্ট ২০২২ ১১:০০

ঠাকুরগাঁও: নামের আগে দেওয়া আছে ডাক্তার, নিয়মিত রোগীও দেখছেন তিনি। চিকিৎসা পত্রে লিখছেন অ্যান্টিবায়োটিক থেকে শুরু করে সব ধরনের ওষুধ। তার কাছে চিকিৎসা নিয়ে অনেকে সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছেন বলে অভিযোগ এলাকাবাসীর।

স্থানীয়রা জানান, ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার রায়পুর ইউনিয়নের দেহন বাজারের ‘ডা.’ মো: নূরুজ্জামান (বাবলু) পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত পড়ালেখা করে হয়ে গেছেন ডিগ্রিধারী ডাক্তার। প্রতিনিয়ত গ্রামের সহজ সরল মানুষকে ঠকিয়ে হরহামেশায় প্রতারণা চালিয়ে যাচ্ছেন তিনি।

বিজ্ঞাপন

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায় ওষুধের দোকানের সঙ্গেই ডাক্তারের সাইনবোর্ড। সাইনবোর্ডে লেখা আছে, ‘ডা. মো. নুরুজ্জামান (বাবলু), ডি.এম.এফ ঢাকা, এখানে সুন্নতে খাৎনা দেওয়া হয়। নাকের পলিপাসের চিকিৎসা করা হয়। চর্ম ও যৌন চিকিৎসা দেওয়া হয়। মা ও শিশু মেডিসিন চিকিৎসক। প্রতিদিন সকাল ৮টা হতে দুপুর ২টা পর্যন্ত ও বিকাল ৩টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত রোগী দেখা হয়।’

এ ব্যাপারে এলাকায় নিয়মিত মাইকিংও করা হয়।

চিকিৎসা নেওয়া ভুক্তভোগী আ. রাজ্জাক বলেন, ‘আমার প্রচুর জ্বর হয়েছিলো। আমি তার কাছে চিকিৎসা নিতে গেলে তিনি আমাকে কিছু হাই অ্যান্টিবায়োটিক ওষুধ দিয়ে দেয়।’

আরেক ভুক্তভোগী রাবেয়া খাতুন বলেন, ‘আমি মাথা ব্যথার কথা জানিয়ে তার কাছে ওষুধের পরামর্শ চাই। তিনি অনেকগুলা ওষুধ লিখে দেন। তবে সুস্থতার বদলে আমি আরও অসুস্থ হয়ে পরি। পরে শহরের এক মেডিসিন চিকিৎসকের শরণাপন্ন হই। সেই ডাক্তার পূর্বের খাওয়া ওষুধপত্র ভুল ছিলো বলে জানান।’

এলাকার ব্যবসায়ী আলতাফুর বলেন, ‘বাবুল আমাদের সামনেই বড় হয়েছে। আমরা জানি ও প্রাইমারি স্কুলের গন্ডি পার করেনি। তাই আমরা তার কাছে চিকিৎসা নেই না। তবে অনেকে অজান্তে চিকিৎসা নিতে এসে প্রতারণার স্বীকার হচ্ছে। চিকিৎসার মতো এ রকম গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে সাবধান থাকা উচিত।’

বিজ্ঞাপন

ডাক্তার বাবলুর পড়ালেখা বা কোনো প্রশিক্ষণের কাগজ দেখতে চাইলে, নেই বলে অকপটে স্বীকার করেন বাবলু। সেই সঙ্গে চেম্বারের পাশে থাকা ওষুধের দোকানের লাইসেন্সও নেই বলে স্বীকার করেন তিনি। তিনি বলেন, ‘যেখানে ব্যানার বানানো হয়েছে, সেখানে ভুল করে ডা. লিখে ফেলছে। আর এই এলাকার আশেপাশে কোনো ডাক্তার নেই। তাই আমি যা চিকিৎসা দিচ্ছি তাতে মানুষের উপকার হচ্ছে।’

ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা আবু তাহের মোহাম্মদ সামসুজ্জোহা জানান, চিকিৎসার মতো স্পর্শকাতর বিষয়ে কোনো সমঝোতার সুযোগ নেই। বিষয়টি জানা ছিলো না। দ্রুতই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

সারাবাংলা/এমও

টপ নিউজ ঠাকুরগাঁও পঞ্চম শ্রেণি

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর