Wednesday 20 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

মীর হেলালের বিরুদ্ধে চট্টগ্রামে ঝাড়ু মিছিল

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট
২১ আগস্ট ২০২২ ২০:২২

চট্টগ্রাম ব্যুরো: দলের মধ্যে বিভাজন তৈরির অভিযোগ এনে বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা মীর মোহাম্মদ হেলাল উদ্দিনের বিরুদ্ধে মিছিল-সমাবেশ করেছেন চট্টগ্রামের একদল নেতাকর্মী। যারা দলটির সাবেক সাংসদ প্রয়াত সৈয়দ ওয়াহিদুল আলমের অনুসারী হিসেবে পরিচিত। মিছিলে অংশ নেওয়া নেতাকর্মীদের অনেকের হাতে ছিল ঝাড়ু। এ সময় তারা মীর হেলালের বিরুদ্ধে বিভিন্ন স্লোগান দেন।

রোববার (২১ আগস্ট) বিকেলে নগরীর কোতোয়ালী থানার কাজির দেউড়ি এলাকায় মিছিল-সমাবেশ করে হাটহাজারী উপজেলা বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা। চট্টগ্রাম উত্তর জেলা যুবদল সহ সভাপতি ইলিয়াছ আলীকে অব্যাহতি এবং হাটহাজারী উপজেলা ছাত্রদলের যুগ্ম আহবায়ক গোলাম কিবরিয়াকে বহিষ্কারের প্রতিবাদে এ কর্মসূচি পালন করা হয়। কর্মসূচি শেষে মীর হেলালের পক্ষে-বিপক্ষের নেতাকর্মীদের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া হয়। পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

বিজ্ঞাপন

প্রয়াত বিএনপি নেতা সৈয়দ ওয়াহিদুল আলম হাটহাজারী থেকে একাধিকবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন। বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান মীর মোহাম্মদ নাছির উদ্দিনের বাড়ি ওই উপজেলায়। তার ছেলে মীর মোহাম্মদ হেলাল উদ্দিন দলটির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য। দলটির হাইকমান্ডের ঘনিষ্ঠ ও সংক্ষেপে ‘মীর হেলাল’ নামে পরিচিত এই নেতা ওয়াহিদুল আলমের অবর্তমানে হাটহাজারীতে শক্ত অবস্থান তৈরির দৃশ্যমান চেষ্টায় আছেন।

সম্প্রতি প্রয়াত ওয়াহিদুল আলমের অনুসারী যুবদল ও ছাত্র দলের দুই নেতার বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক পদক্ষেপ নেয়ায় ক্ষুব্ধ বিএনপির একদল নেতাকর্মী প্রকাশ্যে মীর হেলালের বিরুদ্ধে কর্মসূচি পালন করল।

বিজ্ঞাপন

সমাবেশে বক্তারা বলেন, হাটহাজারী ঐতিহাসিকভাবে বিএনপির শক্ত ঘাঁটি হিসেবে। এখান থেকে সাবেক হুইপ সৈয়দ ওয়াহিদুল আলম বার বার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন। এছাড়া বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের অবস্থানও খুবই ভালো। দলের মধ্যে প্রতিযোগিতা থাকলেও নেতাকর্মীদের মধ্যে ছিল সুসম্পর্ক। জাতীয় কিংবা দলের যেকোনো প্রয়োজনে সব নেতাকর্মী এক হয়ে রাজপথে নেমে আন্দোলন-সংগ্রাম করতো।

তারা আরও বলেন, কিন্তু দুঃখের বিষয়, হাটহাজারী বিএনপির সেই ঐক্য ও বন্ধনকে ধ্বংস করে বিএনপিতে বিভাজন সৃষ্টি করছে মীর হেলাল। তিনি কেন্দ্রের নেতাদের ভুল বুঝিয়ে রাজপথের লড়াকু সৈনিকদের বহিষ্কার এবং অব্যাহতি দিচ্ছে, যা দলের জন্য চরম ক্ষতি ডেকে আনবে। ইলিয়াছ আলী ও গোলাম কিবরিয়া তৃণমূলের কর্মী। নানা চড়াই-উৎড়াই পেরিয়ে তারা এই অবস্থানে এসেছে। তাদের অব্যাহতি দেওয়ার মাধ্যমে দলকে ধ্বংসের মুখে নিয়ে যাচ্ছে মীর হেলাল। আসলে মীর হেলাল কার এজেন্ডা বাস্তবায়ন করছে সেই প্রশ্ন তৈরি হয়েছে নেতাকর্মীদের মধ্যে। বক্তারা অবিলম্বে দুই নেতার বিরুদ্ধে নেয়া সাংগঠনিক পদক্ষেপ প্রত্যাহারের আহ্বান জানিয়েছেন।

সমাবেশে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য দেন- হাটহাজারী উপজেলা বিএনপির সাবেক সদস্য সচিব সোলায়মান মনজু, চট্টগ্রাম উত্তর জেলা যুবদলের সহ-সভাপতি সৈয়দ ইকবাল ও সাবের সুলতান কাজল, সহ সাংগঠনিক সম্পাদক আবদুল মুবিন এবং উপজেলা যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক শাহজাহান খান, শেখ মোরশেদ, ওসমান গনি, তাজুল ইসলাম ও শফিকুল ইসলাম বাবু।

জানতে চাইলে অব্যাহতি পাওয়া যুবদল নেতা ইলিয়াছ আলী সারাবাংলাকে বলেন, ‘কোনো কারণ ছাড়াই আমাকে যুবদল থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। ছাত্রদল নেতা কিবরিয়াকে বহিষ্কার করা হয়েছে। এর নেপথ্যে কলকাঠি নেড়েছেন মীর হেলাল। শুধু আমরা দু’জন নয়, এভাবে হাটহাজারী তথা উত্তর চট্টগ্রামের অনেক ত্যাগী নেতাকর্মী মীর হেলালের হয়রানির শিকার হচ্ছেন। মীর হেলালের এই অন্যায়ের বিরুদ্ধে হাইকমান্ডের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে আমরা রাজপথে ঝাড়ু মিছিল করেছি।’

ইলিয়াছ আলীর অভিযোগ, কর্মসূচি শেষে চলে যাবার পথে কাজির দেউড়ির অদূরে আলমাস সিনেমা হলের সামনে মীর হেলালের সমর্থকেরা তাদের ওপর হামলা চালায়। এসময় তারা লাঠিসোটা ও ঝাড়ু নিয়ে প্রতিরোধ করেন। হামলায় অন্তত আট নেতাকর্মী আহত হয়েছেন। এ বিষয়ে মীর মোহাম্মদ হেলাল উদ্দিনের বক্তব্য জানতে পারেনি সারাবাংলা।

জানতে চাইলে কোতোয়ালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাহিদুল কবীর সারাবাংলাকে বলেন, ‘শান্তিপূর্ণভাবে মিছিল-সমাবেশ করে নেতাকর্মীরা চলে যাচ্ছিল। হঠাৎ আলমাস সিনেমার সামনে ধাওয়া পাল্টা-ধাওয়া শুরু হয়। আমরা কাজির দেউড়ি থেকে সেখানে যাবার পর উভয় গ্রুপের নেতাকর্মীরা দ্রুত পালিয়ে যায়।’

সারাবাংলা/আরডি/পিটিএম

ঝাড়ু মিছিল টপ নিউজ বিএনপি নেতা মীর হেলাল

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর