কোনো মেয়েকে রাতে হল থেকে বের করে দেয়া হয়নি: হল প্রভোস্ট
২৪ এপ্রিল ২০১৮ ১৬:৫৭
।। ইউনিভার্সিটি করেসপন্ডেন্ট ।।
ঢাবি: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) কবি সুফিয়া কামাল হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. সাবিতা রেজওয়ানা রহমান বলেছেন, ‘কোনো মেয়েকে রাতে হল থেকে বের করা হয়নি। গুজব রটনার সঙ্গে সংশ্লিষ্টতার কথা স্বীকার করে লিখিত বক্তব্য দিয়েছেন এমন চারজন মেয়ের অভিভাবকদের হলে ডাকা হয়েছিলো কথা বলার জন্য। তারা আসতে দেরি করে ফেলেন এবং রাত ১১টা বেজে যায়। ওই মেয়েদের হলে রাখা নিরাপদ হবে না ভেবে তিনজনকে তাদের স্থানীয় অভিভাবকদের হাতে তুলে দিয়েছিলাম।’
মঙ্গলবার (২৪ এপ্রিল) দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয় ক্লাবের সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনের শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন। ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাম্প্রতিক পরিস্থিতি সম্পর্কে শিক্ষক সমিতির বক্তব্য’ উপস্থাপনের জন্য এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি।
বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির পক্ষ থেকে এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হলেও এতে সংগঠনের সভাপতি অধ্যাপক এ এস এম মাকসুদ কামাল উপস্থিত ছিলেন না। লিখিত বক্তব্যের শেষে স্বাক্ষর থাকলেও সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াতুল ইসলাম সম্মেলনের শেষের দিকে এসে যোগ দেন। লিখিত বক্তব্য পড়েন সমাজকল্যাণ ও গবেষণা বিভাগের শিক্ষক, সমিতির সদস্য ও নীল দলের আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ সামাদ। এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন সংগঠনের সদস্য অধ্যাপক ড. জিনাত হুদা, অধ্যাপক ড. মো. জিয়াউর রহমান, অধ্যাপক ড. শেখ আফতাব আলী প্রমুখ।
সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে রাতের বেলায় হল থেকে ছাত্রী বের করে দেয়ার ব্যাখ্যা দেন অধ্যাপক ড. সাবিতা রেজওয়ানা রহমান। এসময় তিনি আরও বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ২৬ জনকে বহিষ্কার করা হয়েছে এমন তথ্য ফেসবুকে দিয়ে হলের বেশ কয়েকজন মেয়ে গুজব ছড়িয়ে দিচ্ছিল। আসলে বিশ্ববিদ্যালয় তো এশার লাঞ্ছনার ঘটনায় কাউকে বহিষ্কার করেনি। তাছাড়া ওইদিন দুপুরে হলের কিছু মেয়ে সন্দেহজনকভাবে হলের বারান্দা দিয়ে ঘুরাঘুরি করছিল। তাই আমরা হল প্রশাসন তাদের বিরুদ্ধে কোন আইনি ব্যবস্থা না নিয়ে অভিভাবকদের কাউন্সিলিয়ের মাধ্যমে এই সমস্যা নিরসন করতে চেয়েছিলাম।’
কোটা সংস্কার আন্দোলনে অংশ নেয়া ছাত্রীদের উপর নির্যাতন করেছেন, ছাত্রলীগ নেত্রী এশার বিরুদ্ধে আনা এমন অভিযোগের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘এশার বিরুদ্ধে আমরা কোনো ধরনের লিখিত এবং মৌখিক অভিযোগ পাইনি।’
হলের ২৬ জন ছাত্রীকে কারণ দর্শানোর নোটিসের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘এইটা বিশ্ববিদ্যালয়ের শৃঙ্খলা বোর্ডের সিদ্ধান্ত এই ব্যাপারে হল প্রশাসন কিছুই জানে না।’
লিখিত অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ সামাদ বলেন, শিক্ষার্থীদের যৌক্তিক দাবি ও অনুভূতিকে পুঁজি করে স্বার্থান্বেষী মহল বিভিন্ন সময় নানা ধরনের গুজব এবং আনেদালনরত শিক্ষার্থীদের মধ্যে অনুপ্রবেশ করেছে। তারা আন্দোলনকে ভিন্নখাতে প্রবাহিত করার মাধ্যমে রাজনৈতিক স্বার্থ হাসিল করার চেষ্টা করছে। তারই অংশ হিসেবে উপাচার্যের বাসায় তাণ্ডব চালানো হয়েছে।
আন্দোলন বিষয়ে শিক্ষকদের অবস্থান বিষয়ক এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমাদের শিক্ষক সমিতির একটি নিয়ম আছে। কিন্তু যেসব শিক্ষক মানববন্ধন করেছেন, তারা আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেননি। তারা যদি আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করতেন, তাহলে আমরাও শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার দাবিতে দাঁড়াতাম।
সারাবাংলা/আরএম/এমআইএস/
কবি সুফিয়া কামাল হল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি