জঙ্গল সলিমপুর নিয়ে বৈঠক ডেকেছে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়
৪ সেপ্টেম্বর ২০২২ ১৯:৪২
চট্টগ্রাম ব্যুরো: অবৈধ দখলদার উচ্ছেদ করে সরকারি খাসজমি উদ্ধারের প্রক্রিয়ায় থাকা চট্টগ্রামের জঙ্গল সলিমপুর নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে উচ্চপর্যায়ের বৈঠক ডাকা হয়েছে। ১২ সেপ্টেম্বর প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব আহমদ কায়কাউসের সভাপতিত্বে এই বৈঠক হবে বলে জানিয়েছে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন।
বৈঠকে জঙ্গল সলিমপুরকে ঘিরে প্রস্তাবিত মহাপরিকল্পনা নিয়ে আলোচনা হবে বলে জানান চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ ওমর ফারুক।
জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, গত বৃহস্পতিবার প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের পরিচালক মোহাম্মদ মহিবুল হাসানের সই করা সভার চিঠি জেলা প্রশাসনে পৌঁছে। সভায় জননিরাপত্তা বিভাগ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগ, গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়, স্থানীয় সরকার বিভাগ, বিদ্যুৎ বিভাগ, ভূমি মন্ত্রণালয়, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় বিভাগ, পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তনবিষয়ক মন্ত্রণালয়, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়, সুরক্ষা সেবা বিভাগ, আইন ও বিচার বিভাগের সিনিয়র সচিবদের উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে।
আরও পড়ুন:
- ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক অবরোধ
- দখলদার উচ্ছেদে ‘রণপ্রস্তুতি’, ফলাফল শূন্য
- সলিমপুরে গাড়ি ভাংচুর: ৬ মামলায় আসামি ২০০ জন
- সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভে সলিমপুরের ‘দখলদাররা’
- সংঘর্ষের পর ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে যান চলাচল স্বাভাবিক
- সলিমপুর দখলমুক্ত করার অভিযান শুরু, বিক্ষোভ-সড়ক অবরোধ
- সলিমপুরে বিশ্ববিদ্যালয় ও পোশাকপল্লির জন্য জমি চায় বিজিএমইএ
এছাড়া সশস্ত্র বাহিনী বিভাগ, পুলিশ, র্যাব, আনসার ও গ্রাম রক্ষা বাহিনীর প্রধানরাও সভায় উপস্থিত থাকবেন। চট্টগ্রামের বিভাগীয় কমিশনার, জেলা প্রশাসক, সিটি মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরী এবং চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (সিডিএ) চেয়ারম্যানকে সভায় বিশেষ আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
জেলা প্রশাসনের দেওয়া তথ্যানুযায়ী, সীতাকুণ্ডের দুর্গম পাহাড়ী এলাকা জঙ্গল সলিমপুর পাহাড়ে পাঁচটি মৌজায় প্রায় ৩১০০ একর সরকারি খাসজমি আছে। ‘চট্টগ্রাম মহানগর ছিন্নমূল বস্তিবাসী সমন্বয় সংগ্রাম পরিষদ’ নামের একটি সংগঠন সেই খাসজমি দখল করে প্রায় তিন দশক ধরে সেখানে পাহাড় কেটে ও জঙ্গল সাফ করে প্লট বিক্রি করে আসছিল। নিম্ন আয়ের লোকজন সেই প্লট কিনে সেখানে বসতি ও দোকানপাট গড়ে তোলে, যার মধ্যে মিয়ানমার থেকে বাস্তুচ্যুত হয়ে বাংলাদেশে আসা রোহিঙ্গাও আছে। জেলা প্রশাসন বেশ কয়েকবার উদ্যোগ নিয়েও সেখান থেকে তাদের সরাতে পারেনি। সর্বশেষ জনশুমারি অনুযায়ী ওই এলাকায় প্রায় ১৯ হাজার মানুষ বসবাস করে।
বর্তমান জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মমিনুর রহমান সলিমপুর থেকে অবৈধ বসতি ও স্থাপনা উচ্ছেদের মাধ্যমে সরকারি খাসজমিগুলো উদ্ধার করে সেখানে মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নের সিদ্ধান্ত নেন। জুলাই মাস থেকে উচ্ছেদ অভিযান শুরু হয়।
জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মমিনুর রহমান সারাবাংলাকে জানান, দখলমুক্ত করা সরকারি খাসজমিতে বিভিন্ন স্থাপনা নির্মাণের জন্য ইতোমধ্যে ২৩টি সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ভূমি বরাদ্দের আবেদন করেছে। জেলা প্রশাসন পাহাড় ও বন রক্ষা করে পরিবেশ ও প্রতিবেশের ভারসাম্য এবং জীববৈচিত্র্য রক্ষা করে সবুজায়নের মাধ্যমে জঙ্গল সলিমপুরকে রক্ষণাবেক্ষণের পরিকল্পনা করেছে।
সারাবাংলা/আরডি/পিটিএম