নাবিকরা পাবেন উন্নত আবাসন, উজ্জ্বল হবে দেশের ভাবমূর্তি
৬ সেপ্টেম্বর ২০২২ ০৯:৫৯
ঢাকা: বিদেশি নাবিকদের আবাসন সুবিধা বাড়ছে। এজন্য ‘সিম্যান্স হোস্টেল কমপ্লেক্স ভবন’ নির্মাণ শীর্ষক একটি প্রকল্প প্রস্তাব করা হয়েছে পরিকল্পনা কমিশনে। এটি বাস্তবায়নে মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ৫৯ কোটি ১৪ লাখ ১৩ হাজার টাকা। প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে সমুদ্রগামী জাহাজের নাবিকদের উন্নতমানের সাময়িক আবসন সুবিধা নিশ্চিত করা, চট্টগ্রাম বন্দরে আসা বিদেশি নাগরিকদের সাময়িক আবাসন ও বিনোদন সুবিধা দেওয়া হবে। এর মাধ্যমে দেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল হবে বলে আশা করছেন সংশ্লিষ্টরা।
এছাড়া দেশি-বিদেশি নাবিকদের চিত্ত বিনোদন, লাইব্রেরি, ক্যাফেটেরিয়া, সাইবার ক্যাফে, জিমনেশিয়াম, এমিউজমেন্ট কর্নার ও অন্যান্য সুবিধা, বাংলাদেশ মার্চেন্ট শিপিং অধ্যাদেশ ১৯৮৩ এর ১২ ধারার বিধান বাস্তবায়ন এবং সরকার সমর্থিত মেরিটাইম লেবার কনভেনশনের রেগুলেশন অনুযায়ী নাবিকদের কল্যাণ সুবিধা নিশ্চিত হবে বলে আশা করছেন সংশ্লিষ্টরা।
প্রকল্পের দায়িত্বপ্রাপ্ত পরিকল্পনা কমিশনের ভৌত অবকাঠামো বিভাগের সদস্য (সচিব) সত্যজিত কর্মকার সারাবাংলাকে বলেন, ‘প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনকারী নাবিক ও নৌ কর্মকর্তাদের জন্য সাময়িক আবাসন সুবিধা নিশ্চিত করা সম্ভব হবে। এছাড়া আন্তর্জাতিক নৌ অঙ্গনে দেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘এ প্রকল্পে ১৯৫ জন বিভিন্ন পদমর্যাদার দেশি-বিদেশি নাবিকদের সাময়িক অবস্থানের ব্যবস্থা করা হবে। প্রতিদিন গড়ে ১২০ জন বিভিন্ন শ্রেণির নাবিকদের উন্নতমানের সাময়িক আবাসন, চিত্ত বিনোদন, লাইব্রেরি ও অন্যান্য কল্যাণ সুবিধা এবং প্রতিদিন গড়ে ৩০ জন নাবিককে মেডিকেল সুবিধা দেওয়া হবে।’
পরিকল্পনা কমিশনের একাধিক দায়িত্বশীল কর্মকর্তা সারাবাংলাকে বলেন, ‘নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয় থেকে প্রস্তাব পাওয়ার পর চলতি বছরের ১২ মে অনুষ্ঠিত হয় প্রকল্প মূল্যায়ন কমিটির (পিইসি) সভা। ওই সভায় দেওয়া সুপারিশগুলো প্রতিপালন করায় প্রকল্পটি জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) আগামী বৈঠকে উপস্থাপনের সুপারিশ করা হয়েছে। অনুমোদন পেলে ২০২৪ সালের জুনের মধ্যে এটি বাস্তবায়ন করবে নাবিক ও প্রবাসী শ্রমিক কল্যাণ পরিদফতর।’
প্রকল্প প্রস্তাবে বলা হয়েছে, চট্টগ্রাম বন্দরে আসা বিদেশি নাবিকদের কল্যাণ সুবিধা দেওয়ার জন্য ইন্টারন্যাশনাল ট্রান্সপোর্ট ফেডারেশন ট্রাস্টেও সহায়তায় সিম্যান্স হোস্টেলের একটি এফ টাইপ কোয়ার্টারকে ইন্টারন্যাশনাল সিফ্যারস ড্রপ ইন সেন্টারে রূপান্তরিত করা হয়। বর্তমানে ইন্টারন্যাশনাল সিফ্যারস ড্রপ ইন সেন্টারের এফ টাইপ কোয়ার্টারটিও অত্যন্ত জরাজীর্ণ অবস্থায় রয়েছে। নাবিক হোস্টেলের ৭.২৭ একর জায়গা নাবিক ও প্রবাসী শ্রমিক কল্যাণ পরিদফতরের হলেও মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে এই জায়গায় ন্যাশনাল মেরিটাইম ইন্সটিটিউটের বিভিন্ন স্থাপনা নির্মিত হয়েছে।
নাবিক ও প্রবাসী শ্রমিক কল্যাণ পরিদফতরের মালিকানাধীন এই ভূমিতে নাবিক ও প্রবাসী শ্রমিক কল্যাণ পরিদফতর ও ন্যাশনাল মেরিটাইম ইন্সটিটিউটের সহাবস্থানের জন্য মন্ত্রণালয় সিদ্ধান্ত রয়েছে। নতুন ইন্টারন্যাশনাল সিফ্যারস ড্রপ ইন সেন্টারের সমন্বয়ে চার তলা সিম্যান্স হোস্টেল কমপ্লেক্স ভবন নির্মাণ অত্যন্ত জরুরি। এজন্য প্রকল্পটি প্রস্তাব করা হয়েছে।
প্রকল্পের মূল কার্যক্রম হচ্ছে- ১২ হাজার ১৫৮.৫৮ বর্গ মিটার আবাসিক ভবন, ১ হাজার ঘন মিটার ভূমি বা সাইট উন্নয়ন ও মাস্টার ড্রেন, একটি বহির্বিদ্যুতায়ন, একটি আসবাবপত্র, ইলেকট্রনিক ও লিনেন সামগ্রী এবং একটি জিমনেশিয়াম ও খেলাধুলার সরঞ্জাম কেনা।
সারাবাংলা/জেজে/এমও