সচল হচ্ছে বাকি ডেমু ট্রেনও
২০ অক্টোবর ২০২২ ২২:৩৩
ঢাকা: বছরের পর বছর ধরে নষ্ট হয়ে পড়ে থাকা ডেমু ট্রেন দেশীয় প্রযুক্তি দিয়ে সচল করে তা ফের পরিবহনের উপযোগী করা হয়েছে। যা এরই মধ্যে পাবর্তীপুর-রংপুর রুটে যাত্রী পরিবহন করছে। এখন অচল হয়ে পরে থাকা বাকি ডেমু ট্রেনগুলোও সচলের চিন্তা করছে রেলপথ মন্ত্রণালয়। ইতোমধ্যে দেশীয় প্রযুক্তি ব্যবহার করে ডেমুগুলো সচলের বিষয়ে একটি কর্ম-পরিকল্পনা ঠিক করা হয়েছে। রেলের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সমন্বয়ে একটি কমিটি গঠন করে স্বল্প, মধ্য ও দীর্ঘ মেয়াদে এ পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করা হবে।
বৃহস্পতিবার (২০ অক্টোবর) রেলপথ মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে অনুষ্ঠিত এ সংক্রান্ত এক বৈঠকে এসব সিদ্ধান্ত হয়।
সভায় ডেমু সেটগুলো সচলের ইতিবৃত্ত ও ভবিষ্যৎ কর্মপরিকল্পনা তুলে ধরে পাওয়ার পয়েন্ট প্রেজেন্টেশন উপস্থাপন করেন বাংলাদেশ রেলওয়ের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (আরএস) মঞ্জুর-উল-আলম চৌধুরী। এ সময় কারিগরি দিক তুলে ধরে দেশীয় সাশ্রয়ী প্রযুক্তির বিষয়টি তুলে উপস্থাপন করেন প্রকৌশলী আসাদুজ্জামান। তাদের এই পরিকল্পনায় সায় দেন রেলপথমন্ত্রী নূরুল ইসলাম সুজন। তিনি এই উদ্যোগের ভূয়সী প্রশংসা করে স্বল্প, মধ্য ও দীর্ঘ মেয়াদী পরিকল্পনার মাধ্যমে পর্যায়ক্রমে সব ডেমু সচলের নির্দেশ দেন। এ জন্য রেলের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা সমন্বয়ে একটি কমিটি গঠন করে রিপোর্ট তৈরি ও বিভিন্ন মেয়াদে মেরামতের জন্য পুর্ণাঙ্গ প্রস্তাব উপস্থাপনের নির্দেশনাও দেন।
যন্ত্রাংশ দুষ্প্রাপ্য ও সফ্টওয়্যার নির্ভর হওয়ায় বর্তমান প্রযুক্তিতে ডেমু রক্ষণাবেক্ষন যে অত্যন্ত ব্যয়বহুল ও কঠিন তাও আলোচনায় উঠে আসে। এর আগে, পার্বতীপুর ডিজেল শপে দেশীয় প্রযুক্তিতে সচল করা একটি ডেমু ট্রেন গত ৯ অক্টোবর চলাচলে যুক্ত হয়। যা রেলপথমন্ত্রী বাণিজ্যিক চলাচলের জন্য উদ্বোধন করেন। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, কোনো ধরেনের সমস্যা ছাড়াই ওই ট্রেনটি নিয়মিত পার্বতীপুর-রংপুর রুটে চলাচল করছে।
উল্লেখ্য, ডিজেল ইলেকট্রিক মাল্টিপল ইউনিট-ডেমু। দুই দিকে দুটি ইঞ্জিন, মাঝখানে বগি। একেকবার ১৪৯ জন যাত্রী আসনে বসেন এবং দেড়শ যাত্রী দাঁড়িয়ে নির্বিঘ্নে যাতায়াত করতে পারেন ডেমু ট্রেনে। ডেমু ট্রেন মূলত কম দূরত্বে যাত্রী পরিবহনের জন্য। যাত্রীদের সেবা আরও উন্নত, সহজ এবং দ্রুত গন্তব্যে পৌঁছে দিতে ২০১৩ সালে লাল-সবুজের মাঝে সাদা রঙের ২০ সেট ডেমু ট্রেন যুক্ত করা হয়েছিল বাংলাদেশ রেলওয়ের বহরে।
ঢাকা ও চট্টগ্রাম শহরের কম দূরত্বে চলাচলের জন্য মূলত এই ডেমু ট্রেন কেনা হয়। চীনের থাংশান রেলওয়ে ভেহিকেল কোম্পানি লিমিটেড থেকে এই ডেমু আমদানিতে খরচ হয়েছিল ৬০০ কোটি টাকা। ২০ বছর আয়ুষ্কালের ডেমু পাঁচ বছর না যেতেই বিকল হতে শুরু করে এসব ডেমু। গত নয় বছরের মধ্যে অর্ধেকের বেশি ডেমু ট্রেন চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। যা এখন সম্পূর্ণ দেশীয় প্রযুক্তিতে সচলের উদ্যোগ নিয়েছে বাংলাদেশ রেলওয়ে।
সারাবাংলা/জেআর/পিটিএম