Wednesday 23 Apr 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

শিক্ষা বোর্ডের দুই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা

ডিস্ট্রিক্ট করেসপেন্ডেন্ট
৭ নভেম্বর ২০২২ ২১:৩৫ | আপডেট: ৮ নভেম্বর ২০২২ ১২:০১

রাজশাহী: জোর করে দফতরে প্রবেশ করে সচিবকে শারীরিক হেনস্তা ও ত্রাস সৃষ্টির মামলায় রাজশাহী মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের অফিসার কল্যাণ সমিতির সভাপতি এবং সাধারণ সম্পাদকের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে।

সোমবার রাজশাহী মেট্টোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত ৪-এর বিচারক ফয়সাল তারেক শুনানি শেষে এ গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির আদেশ দেন।

রাজশাহী শিক্ষা বোর্ডের অফিসার্স কল্যাণ সমিতির সভাপতি মঞ্জুর রহমান খান উপপরীক্ষা নিয়ন্ত্রক (মাধ্যমিক) পদে ও সাধারণ সম্পাদক ওয়ালিদ হোসেন উপসচিব (ক্রীড়া অফিসার) হিসেবে কর্মরত আছেন।

গত বছর ১৮ অক্টোবর রাজশাহী শিক্ষা বোর্ডের সাবেক সচিব অধ্যাপক মোয়াজ্জেম হোসেন বাদী হয়ে রাজশাহী মেট্টোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে এ মামলা করেছিলেন। রাজশাহী শিক্ষা বোর্ডের আলোচিত এ দুই কর্মকর্তাকে মামলায় আসামি করা হয়।

আদালত সূত্রে জানা গেছে, মামলাটি গ্রহণ করে বিচারক শঙ্কর কুমার বিশ্বাস গত বছরের ৩ নভেম্বরের মধ্যে তদন্ত করে আদালতে প্রতিবেদন দাখিলে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) রাজশাহী অঞ্চলের পুলিশ সুপারকে নির্দেশ দেন। মামলাটি তদন্ত করেন রাজশাহী পিবিআইয়ের পরিদর্শক আবদুল মান্নান।

গত ১৭ অক্টোবর পিবিআই পরিদর্শক ও মামলার তদন্ত কর্মকর্তা আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করেন। তবে পুলিশের এ প্রতিবেদনে আসামি মঞ্জুর রহমান খান ও ওয়ালিদ হোসেনকে সরাসরি অভিযুক্ত করেননি। পুলিশ প্রতিবেদনে ঘটনাকে আড়াল করার অভিযোগে বাদী আদালতে নারাজি দাখিল করেন।

বাদীর আইনজীবী পুলিশি তদন্তের বিরুদ্ধে নারাজি দিয়ে অভিযোগটি সরাসরি আমলে নেওয়ার আবেদন করেন। আদালত তদন্ত প্রতিবেদন গ্রহণ না করে এবং বাদীর অভিযোগ আমলে নিয়ে দুই আসামির বিরুদ্ধে সমন জারির আদেশ দেন। এ সমন পাঠানো হয় রাজশাহী শিক্ষা বোর্ডের ঠিকানায়।

বিজ্ঞাপন

এদিকে সমন পেয়েও সোমবার মামলার নির্ধারিত দিনে দুই আসামি মঞ্জুর রহমান খান ও ওয়ালিদ হোসেন আদালতে গরহাজির থাকেন। শুনানি শেষে আদালতের বিচারক ফয়সাল তারেক দুই আসামির বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির আদেশ দেন। আরএমপির রাজপাড়া থানা পুলিশকে গ্রেফতারি পরোয়ানা তামিলের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

জানা গেছে, ঘটনার সময় মামলার বাদী অধ্যাপক মোয়াজ্জেম প্রেষণে রাজশাহী শিক্ষা বোর্ডের সচিব পদে কর্মরত ছিলেন। তিনি বিসিএস শিক্ষা ক্যাডারের কর্মকর্তা।

এজাহারে বলা হয়, তিনি ২০২১ সালের ১২ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যায় বোর্ডের হিসাব বিভাগের উপ-পরিচালক অধ্যাপক বাদশা হোসেনের সঙ্গে নিজ দফতরে বৈঠক করছিলেন। এ সময় বোর্ডের উপ-সচিব ওয়ালিদ হোসেন ও হিসাব কর্মকর্তা মানিক চন্দ্র সেন জোর করে কক্ষে প্রবেশ করেন। ওয়ালিদ হোসেন মারমুখী হয়ে সচিবকে চড় মারতে উদ্যত হন। কিছুক্ষণ পরেই কক্ষে প্রবেশ করেন উপ-পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক মঞ্জুর রহমান খান। তারা সঙ্গবদ্ধ হয়ে সচিবের কক্ষে তাণ্ডব চালান।

এদিকে পরিস্থিতি দেখে দায়িত্বরত আনসার সদস্য তাদের দরজা আটকে দেন। ওয়ালিদ হোসেন ও মঞ্জুর রহমান খান সচিবের কক্ষের ভেতরে কিছু সময় ত্রাস সৃষ্টি করেন এবং সচিবকে গালাগাল দিতে থাকেন। প্রাণে মেরে ফেলার হুমকিও দেন তারা। সচিবের সঙ্গে ধস্তাধস্তির ঘটনাও ঘটে। পুরো ঘটনাটি শিক্ষা বোর্ডের সিসিটিভিতে রেকর্ড হয়। অন্যদিকে এ ঘটনার তদন্ত করে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। তদন্তে বোর্ডের দুই কর্মকর্তাসহ আরও কয়েকজনকে দোষী সাব্যস্ত করে তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের সুপারিশ করা হয়।

বাদীর আইনজীবী একরামুল হক বলেন, দুই আসামি যেদিন জামিনের জন্য আদালতে উপস্থিত হবে, সেদিনই বোর্ড কর্তৃপক্ষ তাদের সাময়িক বরখাস্ত করতে পারবে। সরকারি চাকরি বিধিমালা অনুযায়ী তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে আদালতের কাছে আবেদন করা হবে বলেও জানান তিনি।

বিজ্ঞাপন

সারাবাংলা/একে

গ্রেফতারি পরোয়ানা রাজশাহী

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর