Saturday 07 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

মাদকই তাদের কাছে সব

সোহেল রানা, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট
১৬ নভেম্বর ২০২২ ০৯:৫৪

হেরোইন আসক্ত সুফিয়া বেগম, ছবি: সারাবাংলা

দিনাজপুর: রোগাটে চেহারা। অধিকাংশই বহিরাগত। রয়েছে পুরুষের পাশাপাশি নারীও। কারও বাড়ি জয়পুরহাট, কারও বিরামপুর, পার্বতীপুর বা পাঁচবিবিতে। মাদকের কারণে পরিবার থেকে, সংসার থেকে, সমাজ থেকে বিতাড়িত। যেখানেই রাত, সেখানেই কাত। কখনো রেলস্টেশনে, কখনো দোকানের বারান্দা বা পরিত্যাক্ত ভাঙাচুরা ঘরেই তাদের ঠিকানা। এদের দেখা মিলবে দিনাজপুরের সীমান্তঘেঁষা হিলি রেলস্টেশনসহ বিভিন্ন রাস্তাঘাটে।

মাদকই তাদের কাছ সব। চুরি করে আবার কখনো ভিক্ষুকের বেশে বা সুইপারের বেশে হাত পেতে যা পায় তা দিয়ে নেশার অর্থ সংগ্রহ করেন তারা। উদ্দেশ্যে একটাই নেশার টাকা। পেটে খাবার থাক বা না থাক টান দিতে হবেই হোরোইনের পাইপে। সম্প্রতি হিলির বিভিন্ন রাস্তাঘাট, রেলস্টেশন, বাসস্ট্যান্ড, পানামা পোর্টে গেটসহ মাদকের আখড়াগুলো ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে।

হিলি রেলস্টেশনে কথা হয় মাদকসেবী রমিজ হোসেনের সঙ্গে। তিনি জানান, তার বাড়ি পার্বতীপুর থানার ঝুপড়িপাড়া এলাকায়। হেরোইনে আসক্ত তিনি। প্রথমে শখের বসে দু’এক টান দিতে দিতে এখন পুরোপুরি আসক্ত হয়ে পড়েছেন। পরিবার থেকে বেশ কয়েকবার মাদকাসক্ত নিরাময় কেন্দ্রে পাঠানো হয়। তারপরও ছাড়তে পারেনি নেশা। বর্তমানে পরিবার থেকে বিচ্ছিন্ন তিনি। নেশার টাকা যোগাতে এখন সুইপারের কাজ করেন।

মাদকসেবী রফিক, ছবি: সারাবাংলা

মাদকসেবী রফিক, ছবি: সারাবাংলা

হেরোইন আসক্ত সুফিয়া বেগম বলেন, ‘ভাইরে কি আর বলব দুখের কথা। এক ছেলেকে ভালবাসতাম। সেই আমাকে এই অন্ধকার জগতে ঠেলে দিয়েছে। এখন সেও আসক্ত, আমিও আসক্ত। যদিও দু’জনের বিয়ে হয়েছে। সন্তান নেই। সারাদিন দু’জনই মানুষের কাছে বিভিন্ন অজুহাত দেখিয়ে যা রোজগার করি। নেশা করতেই শেষ। দু’জনই এখন গৃহহারা। কোনো আত্মীয়স্বজন আমাদের আশ্রয় দেয় না। যেখানে রাত, সেখানেই কাত (শুয়ে) থাকি।’

হিলি রেলস্টেশন এলাকার মাসুদ রানা বলেন, ‘এই মাসকাসক্তরা ট্রেনে বিনা টিকেটে বিভিন্ন জায়গা থেকে হিলিতে এসে নেশা করে অন্য ট্রেনে ফিরে যায়। আবার কেউ কেউ হিলিতেই থেকে যায়।’

দল বেঁধে মাদকসেবন করা হচ্ছে, ছবি: সারাবাংলা

দল বেঁধে মাদকসেবন করা হচ্ছে, ছবি: সারাবাংলা

মধ্যবাসুদেবপুর গ্রামের তারিকুল সরকার বলেন, ‘হিলির চুড়িপট্রি গ্রামে বেশ কয়েকটি চিহিৃত বাড়িতে হেরোইন, ইয়াবাসহ বিভিন্ন মাদক বিক্রি হয়। স্থানীয় মাদকসেবীদের পাশাপাশি অন্য জায়গা থেকে মাদকাসক্তরা এসে ওই বাড়িতে নিয়মিত মাদক সেবন করেন।’

হাকিমপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আবু সায়েম মিয়া বলেন, পুলিশের মাদক বিরোধী অভিযান অব্যাহত আছে। তথ্য পেলেই মাদক বিক্রেতাদের বাড়িতে অভিযান চালনো হচ্ছে। ইতোমধ্যেই কয়েকজন মাদক বিক্রেতাকে মাদকসহ আটক করে আইনের আওতায় আনা হয়েছে। আর মাদকসেবীদের আটক করে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে পাঠানো হচ্ছে।

সারাবাংলা/এনএস

টপ নিউজ দিনাজপুর মাদক


বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ
সম্পর্কিত খবর