Thursday 28 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

বিদ্যুৎ-জ্বালানির সংকট কেটে যাবে, সুখবর দিলেন প্রধানমন্ত্রী

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট
১৯ নভেম্বর ২০২২ ১৪:০৯

ঢাকা: বিদ্যুৎ এবং জ্বালানি সংকট আগামী মাস থেকে কেটে যাবে বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, ‘ইনশাল্লাহ্, হয়ত আগামী মাস থেকে এতো কষ্ট আর থাকবে না। তারপরও বলবো তেল-পানি ব্যবহার করার ব্যাপারে সবাইকে সাশ্রয়ী হতে হবে। কারণ সারাবিশ্বে এখন অর্থনৈতিক মন্দা দেখা দিচ্ছে। তার প্রভাব থেকে কিন্তু আমরা মুক্ত না।’

শনিবার (১৯ নভেম্বর) সকালে গণভবনে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সভার সূচনা বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। আগামী ২৪ ডিসেম্বর আওয়ামী লীগের জাতীয় কাউন্সিল সামনে রেখে গণভবনে উপদেষ্টা পরিষদের সঙ্গে বৈঠকে বসেন শেখ হাসিনা। আওয়ামী লীগ সভাপতির শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।

বিজ্ঞাপন

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘খালেদা জিয়া, তারেক জিয়া অর্থপাচারের সঙ্গে জড়িত হলেও এখন তারাই রিজার্ভ নিয়ে কথা বলে। এখনও পাঁচ মাসের আমদানি ব্যয় মেটানোর মতো রিজার্ভ সরকারের হাতে আছে। যুদ্ধের কারণে আমদানি ব্যয় বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে আন্তর্জাতিক পরিবহন ব্যয়ও বেড়েছে চার থেকে সাড়ে চার গুণ।’

আজ বাংলাদেশ উন্নয়নের রোল মডেল হিসাবে সারাবিশ্বব্যাপী সমাদৃত উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘খালি চোখে দেখে না আমাদের দেশের কিছু মানুষ। তাদের কিছুই ভালো লাগে না। তারা গণতান্ত্রিক সরকার থাকলে ভালো থাকে না। একটু অগণতান্ত্রিক সরকার হলে তাদের মূল্যটা বাড়ে, তাদের ভালো লাগে। বাংলাদেশে সেই খেলায় খেলতে চায় তারা। বারবার তো সেই খেলা চলেছে দীর্ঘদিন। বিএনপির সময়ে দেশে কি নির্বাচন হয়েছে তা দেশের মানুষ অবহিত। এখন দেশের সব রাজনৈতিক দল রাজনীতি করারও সুযোগ পাচ্ছে।’

বিজ্ঞাপন

২০০৮ এর নির্বাচনের পর একটানা গণতান্ত্রিক ধারা আছে বলেই আজ বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে এবং বিশ্বে আবার সেই মর্যাদা পেয়েছে। এখন তো আর কেউ বাংলাদেশকে ছোট চোখে দেখতে পারে না। আমরা বিজয়ী জাতি, জাতির পিতার ডাকে সাড়া দিয়ে আমরা মুক্তিযুদ্ধে বিজয় অর্জন করেছি। কাজেই বিজয়ী জাতি হিসাবেই আমরা মাথা উঁচু করে চলবো। সেটাই করছি সকলের সাথে বন্ধুত্ব, কারও সঙ্ড়ে বৈরিতা নয়। এটা আমরা মেনে সবার সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক রেখে দেশের উন্নয়নে ব্যাপক কাজ করে যাচ্ছি বলে জানান প্রধানমন্ত্রী।

দক্ষিণ এশিয়ায় মধ্যে প্রথম টানেল কর্ণফুলীতে তৈরি হচ্ছে, মেট্রোরেলসহ বিভিন্ন প্রজেক্টের ফলে অনেক কর্মসংস্থান বাড়বে বলেও আশা করেন তিনি। শেখ হাসিনা বলেন, ‘পদ্মা সেতু করার পর অনেকে বলল, এতো টাকা দিয়ে সেতু বানিয়ে কি লাভ হল? এখন যে ইলিশ মাছটা সকাল বেলা রওনা হয়ে দুই ঘণ্টার মধ্যে ঢাকা এসে পৌঁছাছে। তাজা তাজা খাচ্ছে, এটা খেতো কোথা থেকে? এটা তো বাস্তব কথা। আর মানুষের কর্মসংস্থানও হয়েছে।’

দেশের শতভাগ এলাকায় বিদ্যুৎ সুবিধা বাস্তবায়নের প্রসঙ্গ তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এখন ইউক্রেনের যুদ্ধের ফলে যেহেতু তেল আনতে অসুবিধা হচ্ছে, গ্যাস আনতে অসুবিধা হচ্ছে, তাই একটু সমস্যা দেখা দিয়েছে। আর শুধু আমাদের দেশ না, ইংল্যান্ড-আমেরিকা-জার্মানি সব জায়গায় তারাই তো জ্বালানি সাশ্রয়ের দিকে নজর দিচ্ছে। তারা তো নিজেরাই হিমশিম খাচ্ছে। সেখানে কিছুদিনের জন্য আমাদের কষ্ট পেতে হয়েছে। ইনশাল্লাহ হয়ত আগামী মাস থেকে এতো কষ্ট আর থাকবে না।’

প্রত্যেকের যার যতুটুক জমি আছে এক ইঞ্চি জমিও যেন অনবাদি না থাকে, তাতে উৎপাদন করার আহ্বান জানান তিনি। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘কারণ সারাবিশ্বে অর্থনৈতিক অবস্থা খুবই খারাপ, খুবই ভয়ংকর। সেইখানে বাংলাদেশ এখনও আমরা যে চলছি, আমাদের নিজেদের উৎপাদন নিজেরা বাড়াতে পারলে আমরা কোনদিন ওই দুর্ভিক্ষের আঁচ লাগবে না। এটা হলো বাস্তবতা।’

রিজার্ভ নিয়ে সমালোচনার জবাব দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘করোনাকালে বিদেশ থেকে পর্যাপ্ত রেমিট্যান্স এসেছে। বাংলাদেশ কখনো লোন ডিফল্ডার হয়নি। লোন না নিয়ে দেশিয় সরকারি কোম্পানিগুলোকে দুই শতাংশ হারে রিজার্ভ থেকে লোন দেওয়া হয়েছে।’

রিজার্ভের প্রতেকটা টাকা দেশের মানুষের জন্য খরচ করা হয়েছে জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ‘আজ ডিজিটাল বাংলাদেশ হয়েছে বলেই তো সোশ্যাল মিডিয়াতে ইচ্ছামত বলতেও পারছেন, আর বক্তব্য দিতে পারছেন। বাংলাদেশে একটা সরকারি টেলিভিশন ছিল, একটা সরকারি রেডিও ছিল। আমরা এখন প্রচুর টেলিভিশন আর রেডিও করে দিয়েছি। প্রত্যেকটায় হট টক আর অমুক সমুক কথা, সবই আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে। আমি জায়গা করে দিয়েছি বলেই তো কথা বলতে পারছেন। নইলে তো আর কথা বলতে পারত না। সারাদিন বলে বাক স্বাধীনতা নাই। তাহলে এতগুলো টেলিভিশনে এই যে টক টক কথাগুলো আসে, সেগুলো এলো কোথা থেকে? আর বক্তৃতা দিয়ে সোশ্যাল মিডিয়াতে যারা কথা বলে, এই কথাগুলো বলার সুযোগ পেত কোথা থেকে, ডিজিটাল বাংলাদেশ না হলে?’

সারাদেশে গৃহহীন-ভূমিহীন মানুষদের জমিসহ ঘর নির্মাণ করে দিতে সরকার কাজ করছে বলেও জানান তিনি। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমি চাই বাংলাদেশের এই অর্থনৈতিক অগ্রযাত্রা অব্যহত থাকুক, জাতির পিতা এদেশটা স্বাধীন করে গেছেন। আমরা আমাদের কর্মসূচি ২০০৮ সালে রূপকল্প ২০২১ ঘোষণা দিয়েছিলাম। সেটা অলরেডি বাস্তবায়ন করে উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা পেয়েছি। সেটা ধরে রেখে আমাদের এগিয়ে যেতে হবে। ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত সমৃদ্ধ বাংলাদেশ হবে। আর ২১০০ সালের ডেল্টা প্ল্যান দিলাম, এই বদ্বীপে যারা বসবাস করবে তাদের ভবিষ্যৎ বংশধররা যেন উন্নত জীবন পায় সেটাই আমাদের লক্ষ্য।’

সারাবাংলা/এনআর/এমও

প্রধানমন্ত্রী বিদ্যুৎ জ্বালানি সংকট

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর