Saturday 23 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

১০ ডিসেম্বর অবশ্যই সমাবেশ হবে: মির্জা ফখরুল

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট
৭ ডিসেম্বর ২০২২ ০৯:২৯

ঢাকা: ১০ ডিসেম্বর ঢাকায় সমাবেশ হবেই উল্লেখ করে এ ব্যাপারে দ্বিধা-দ্বন্দ্বে না থাকার জন্য দলের নেতা-কর্মীদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

মঙ্গলবার (৬ ডিসেম্বর) গুলশানে হোটেল লেকশোরে আয়োজিত গোলটেবিল আলোচনায় তিনি এ আহ্বান জানান। ‘ভায়োলেন্স অ্যান্ড পলিটিক্স অব ব্লেমিং’ শীর্ষক এই গোলটেবিল আলোচনা আয়োজন করে বিএনপি। এতে মূল প্রবন্ধ পাঠ করেন ডা. সাখাওয়াত হোসেন সায়ন্থ। অনুষ্ঠানে বর্তমান সরকারের আমলে বিভিন্ন ঘটনার ওপর একটি তথ্য চিত্র প্রদর্শন করা হয়।

বিজ্ঞাপন

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘১০ ডিসেম্বর নিয়ে কোনো দ্বিধা রাখবেন মনে। ১০ ডিসেম্বর অবশ্যই ঢাকায় সমাবেশ হবে। এই সমাবেশ থেকে নতুন স্বপ্ন দেখবে মানুষ, এই সমাবেশ থেকে মানুষ নতুন কর্মসূচি নিয়ে আরও তীব্রভাবে মাঠে নামবে এবং আমাদের ওপর যে দানব সরকার বসে আছে, তাকে পরাজিত করে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করবে।’

তিনি বলেন, ‘আমরা খুব পরিষ্কার করে বলেছি যে, আমরা এই সরকারের পতন চাই, আমরা সংসদ বিলুপ্ত চাই, আমরা তত্ত্বাবধায়ক সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর চাই, আমরা নতুন একটি নির্বাচন কমিশনের মধ্য দিয়ে অবাধ, সুষ্ঠু, গ্রহণযোগ্য নির্বাচন চাই, জাতীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে সকলে গ্রহণ করবে সেই নির্বাচন চাই।’

‘আন্দোলনে অংশগ্রহণকারী সকল দলকে নিয়ে আমরা জাতীয় সরকার গঠন করব, যে জাতীয় সরকার আমাদের রাষ্ট্রকে নতুন করে সাজাবে। আমরা আজকে সফলতার আশা নিয়ে শেষ করতে চাই’— বলেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘জনগণ যখন স্বতস্ফূর্তভাবে তাদের দাবি নিয়ে মাঠে নামছে তাকে বন্ধ করার জন্য সরকার আবার হীন চক্রান্ত শুরু করেছে। আমরা ইতিমধ্যে পত্র-পত্রিকায় দেখেছি, বিভিন্নভাবে খবরও পেয়েছি যে, প্রায় ২০০ বাস রেডি করা হয়েছে পুঁড়িয়ে দেওয়ার জন্য। এটা অসমর্থিত কিছু সূত্র থেকে পাওয়া খবর।’

বিজ্ঞাপন

ইতিমধ্যে কিছু আলামতও আমরা পেয়েছি যে, ছাত্রলীগ নামধারী, যুবলীগ নামধারী কিছু সন্ত্রাসীকে প্রত্যেকটি ওয়ার্ডে, থানায় নামিয়ে দিয়ে সেখানে তারা সন্ত্রাস প্রতিরোধ করবে। আমরা তখন থেকেই এ ব্যাপারে সচেতন হয়েছি, সজাগ হয়েছি। যে কারণে আজকে এই সেমিনারটি আয়োজন করা হয়েছে। আমাদের সুধী সমাজকে, রাজনৈতিক দল এবং কূটনৈতিক মিশনের সদস্যদের জানাতে চাই যে, সরকার আবার সেই পুরনো খেলা শুরু করেছে’— বলেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

তিনি বলেন, ‘এই সরকার নির্বাচিত সরকার নয়, জনগণের ম্যান্ডেট এদের কাছে নেই। এরা ১৫ বছর ধরে মানুষের ওপর নির্যাতনের স্টিম রোলার চালিয়ে গেছে। আমাদের ৬০০ নেতা-কর্মীকে গুম করে দিয়েছে। মানুষ এই দানব সরকারের হাত থেকে মুক্তি চায়।’

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘সরকার চুরি করছে। আর মুখে বলছে যে, পৃথিবী সংকট আছে, বাংলাদেশে সংকট নাই। আজকেও বলেছে যে, বাংলাদেশে খুব চমৎকার একটা অবস্থা বিরাজ করছে অর্থনৈতিক কোনো সংকট নাই। এই যে মিথ্যাচার করে জাতিকে বিভ্রান্ত করা, জাতিকে সবসময় অন্ধকারের মধ্যে রেখে দেওয়া এর একমাত্র উদ্দেশ্য হচ্ছে শাসনকে আরও স্থায়ী করা।’

বিএনপি মহাসচিবের সভাপতিত্বে ও দলের সাংগঠনিক সম্পাদক শ্যামা ওবায়েদ এবং আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিষয়ক কমিটির সদস্য ফারজানা শারমিন পুতুলের যৌথ সঞ্চালনায় এই গোলটেবিল আলোচনায় অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ড. আবদুল মঈন খান, ভাইস চেয়ারম্যান হাফিজ উদ্দিন আহমেদ, শাহজাহান ওমর, জয়নাল আবেদীন, জাতীয় পার্টি (কাজী জাফর) মোস্তফা জামাল হায়দার, গণফোরামের অধ্যাপক আবু সাইয়িদ, অ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরী, নাগরিক ঐক্যের মাহমুদুর রহমান মান্না, গণসংহতি আন্দোলনের জোনায়েদ সাকি, কল্যাণ পার্টির সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম, শিক্ষাবিদ অধ্যাপক মাহবুব উল্লাহ, অধ্যাপক দিলারা চৌধুরী, অধ্যাপক আফম ইউসুফ হায়দার, অধ্যাপক তাজমেরী এস ইসলাম এবং সাবেক রাষ্ট্রদূত সিরাজুল ইসলাম।

অনুষ্ঠানে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, অস্ট্রেলিয়া, রাশিয়া, ইরান এবং ইউরোপীয় ইউনিয়ন, জাতিসংঘের কূটনীতিকরা উপস্থিত ছিলেন। তবে তারা কেউ বক্তব্য রাখেননি।

গোলটেবিল আলোচনায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, সেলিমা রহমান, ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু, ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ আল নোমান, আলতাফ হোসেন চৌধুরী, বরকত উল্লাহ বুলু, আবদুল আউয়াল মিন্টু, মীর নাসির, নিতাই রায় চৌধুরী, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা মনিরুল হক চৌধুরী, আবদুস সালাম, জয়নাল আবেদীন ফারুক, আবদুল কাইয়ুম, ইসমাইল জবিহউল্লাহ, অধ্যাপক শাহিদা রফিক, বিজন কান্তি সরকার, এনামুল হক চৌধুরী, কেন্দ্রীয় নেতা মজিবুর রহমান সারোয়ার, সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, খায়রুল কবির খোকন, শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাস, আসাদুজ্জামান, জহির উদ্দিন স্বপন, শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এনি, ফাহিমা নাসরিন মুন্নী, কাদের গনি চৌধুরী, তাবিথ আউয়াল, মীর হেলাল, শাম্মী আখতার, চৌধুরী নায়াবে ইউসুফ, তাইফুল ইসলাম টিপু, শায়রুল কবির খান প্রমূখ উপস্থিত ছিলেন।

এছাড়া ন্যাশনাল পিপলস পার্টির ফরিদুজ্জামান ফরহাদ, লেবার পার্টির মোস্তাফিজুর রহমান ইরান, ফারুক রহমান, জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টির খন্দকার লুতফর রহমান, এসএম শাহাদাত, ইসলামী ঐক্যজোটের মাওলানা আবুল করিম খান, মুসলিম লীগের শেখ জুলফিকার বুলবুল চৌধুরী, এনডিপির আবু তাহের, জাতীয় দলের সৈয়দ এহসানুল হুদা, ডিএলের সাইফুদ্দিন আহমেদ মনি, পিপলস লীগ সৈয়দ মাহবুব হোসেন, ন্যাপ-ভাসানীর আজহারুল ইসলাম, ইসলামিক পার্টির আবুল কাশেম, বাংলাদেশ ন্যাপের এমএন শাওন সালেহিন প্রমুখ নেতা গোলটেবিল বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন।

সারাবাংলা/এজেড/এনএস

বিএনপি মির্জা ফখরুল ইসলাম আলগীর

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর