ঢাকা: আগামী ১০ ডিসেম্বর গণসমাবেশকে কেন্দ্র করে নয়াপল্টনে বিএনপি নেতাকর্মীদের ওপর পুলিশের হামলা, নেতাকর্মীদের গ্রেফতারের ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন সাত দলের সমন্বয়ে গঠিত ‘গণতন্ত্র মঞ্চ’-এর নেতারা। শুক্রবার (৯ ডিসেম্বর) ৭ দলীয় গণতন্ত্র মঞ্চ আয়োজিত জরুরি সংবাদ সম্মেলনে তারা এই ক্ষোভ প্রকাশ করেন।
তবে পুলিশি হামলা, নেতাকর্মীদের গ্রেফতার, কার্যালয় দখলের ঘটনায় ‘গণতন্ত্র মঞ্চ’ এর নেতারা ক্ষুব্ধ হলেও এ বিষয়ে ‘করণীয়’ কি তা পরিস্কার করে বলতে পারেননি তারা। এমনকি আগামীকালের বিএনপির মহাসমাবেশ বিষয়েও স্পষ্ট কোনো উত্তর মেলেনি নেতাদের কাছ থেকে।
গণসমাবেশ বিষয়ে আপনাদের অবস্থান কি— সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নেরও সঠিক জবাব পাওয়া যায়নি তাদের কাছ থেকে। তবে এর উত্তরে নাগরিক ঐক্যের মাহমুদুর রহমান মান্না বলেছেন, ‘বিকেলে বিএনপির স্থায়ী কমিটির বৈঠক আছে, ওই বৈঠকের পর আমরা সিদ্ধান্ত নেব।’
সংযত হন, অন্যথায় বিপদ হবে— প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশে ডা. জাফরুল্লাহ
সংবাদ সম্মেলনে জাসদের সভাপতি আ স ম আব্দুর রব জনগণকে আইন ভঙ্গ করে রাজপথে নেমে আসার আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘আমাকেও জেলে যেতে হতে পারে। সেজন্য ব্যাগে করে জামাকাপড় নিয়ে বের হয়েছি। জেলজুলুমের ভয় কখনও করিনি। এখন বৃদ্ধ বয়সেও করবো না।’
তিনি বলেন, ‘যে লড়াই শুরু হয়েছে এই লড়াইয়ে আমরা জিতে যাবো। বিনা ভোটের সরকার যতই জুলুম-অত্যাচার করুক না কেন, তাদের আর রক্ষা হবে না। গ্রেফতার করে আন্দোলন দমানো যাবে না।’
নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদর রহমান মান্না বলেন, ‘সরকার স্বৈরাচারী কায়দায় বিএনপি অফিসকে ক্রাইমজোন বলে রাস্তাঘাট বন্ধ করে রেখেছে। গভীর রাতে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও বিএনপির স্থায়ী কমিটির নেতা মির্জা আব্বাসকে গ্রেফতার করা হয়েছে। গতকাল রাতে পুলিশ কমিশনার ও বিএনপির নেতাদের মধ্যে সমাবেশের স্থান নির্ধারণের আলোচনায় মনে হয়েছিল, বিরাজমান সমস্যা সমাধানের দিকে যাচ্ছে। হঠাৎ করে গ্রেফতারের ঘটনায় পরিস্থিতি আরও ঘোলাটে হলো। রাস্তার মোড়ে মোড়ে আওয়ামী পান্ডারা পুলিশের সহায়তা নিয়ে অবস্থান করছে। এভাবে দেশ চলতে পারে না।’
গণসংহতি আন্দোলনের নেতা জোনায়েদ সাকি বলেন, ‘সরকার রাজনৈতিক ভাবে দেউলিয়া হয়ে গেছে। সরকার তার দলীয় গুন্ডাবাহিনীকে রাস্তায় নামিয়েছে। পুলিশ ও দলীয় গুন্ডাবাহিনীকে ব্যবহার করে বিরোধী দলের উপর ঝাঁপিয়ে পড়েছে। নিজেরা ককটেল ফাটিয়ে বিরোধী দলের দোষ দিচ্ছে। সরকারের কার্যক্রমে মনে হচ্ছে ক্রাকডাউন করবে।’
সংবাদ সম্মেলনে গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক, রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের অ্যাডভোকেট হাসনাত কাইয়ুম, ভাসানী অনুসারী পরিষদের নেতা শেখ রফিকুল ইসলাম বাবলুসহ আরও অনেকে বক্তব্য রাখেন।
উল্লেখ্য, দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতির প্রেক্ষিতে ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলনের সুনির্দিষ্ট লক্ষ্য ও দাবি, রাষ্ট্র, সংবিধান, সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান ও সরকার ব্যবস্থায় সুনির্দিষ্ট সংস্কার ও দেশের জনগণের বাঁচানোর ডাকে গত ৮ আগস্ট ‘গণতন্ত্র মঞ্চ’ আনুষ্ঠানিকভাবে আত্মপ্রকাশ করে। জোটে থাকা দল সাতটি হলো- জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জেএসডি), নাগরিক ঐক্য, বাংলাদেশের বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি, গণসংহতি আন্দোলন, গণ অধিকার পরিষদ, ভাসানী অনুসারী পরিষদ ও রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলন।