২ দিনেও নেভেনি মোংলা ইপিজেডের আগুন, ক্ষতি ১৫০ কোটি টাকা
১ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ ১৭:৫৭
মোংলা (বাগেরহাট): মোংলা ইপিজেডের ভারতীয় কোম্পনি ভিআইপি লাগেজ কারখানার আগুন দু’দিনেও পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে আসেনি। গতকাল মঙ্গলবার (৩১ জানুয়ারি) দুপুরে লাগা এই আগুন বুধবার (১ ফেব্রুয়ারি) বিকেল পর্যন্ত পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণ করতে পারেনি ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা। কারখানার ভিতর থেকে কালো ধোঁয়া বের হচ্ছে।
ভয়াবহ এই অগ্নিকাণ্ডে চার সদস্যের তদন্ত কমিটি করেছে ইপিজেড কর্তৃপক্ষ। এদিকে অগ্নিকাণ্ডে ১৫০ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে দাবি করেছেন কোম্পানিটির কর্মকর্তারা।
ভিআইপি ইন্ডাস্ট্রি বাংলাদেশ প্রাইভেট লিমিডেটের হেড অব এইচ আর মো. মিজানুর রহমান খাঁন বলেন, ‘গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে তাদের মোংলা ইপিজেডে ৯টি কারখানার মধ্যে ১ নম্বর কারখানাটিতে শর্ট সার্কিটের কারণে আগুন লাগে। ফায়ার সার্ভিসের মোংলা, বাগেরহাট ও রামপালের আটটি ইউনিট এসে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করে গেলেও ততক্ষণে কারখানাটি পুড়ে যায়। এসময় কারখানাটিতে থাকা কাঁচামালসহ তৈরি লাগেজ ছিল। যা বেশ কয়েকটি দেশে রফতানির অপেক্ষায় ছিল। এছাড়া এ কারখানায় রাসায়নিক আঠা, পলিথিন জাতীয় দাহ পদার্থ ও হাই ভোল্টেজ মেশিনারিজ যন্ত্রপাতিও সম্পূর্ণ পুড়ে গিয়েছে। এতে মোট ১৫০ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে। এ ঘটনায় মঙ্গলবার সন্ধ্যায় মোংলা থানায় একটি জিডিও করা হয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘পৃথিবীর একমাত্র বড় লাগেজ কারখানা এটি, যা এক লাখ ১১ হাজার বর্গ ফুট। অগ্নিকাণ্ডের সময় সেখানে কর্মরত তাদের ৭০০ শ্রমিক নিরাপদে দ্রুত বেরিয়ে আছে। এজন্য কোনো হতাহতের ঘটনা ঘটেনি।’
তবে এই প্রতিষ্ঠানের শ্রমিকরা জানান, ওই সময় কারখানার মধ্যে ওয়েল্ডিংয়ের কাজ হচ্ছিল। ওই সময় ওয়েল্ডিংয়ের আগুন থেকে এই ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে।
ফায়ার সার্ভিসের মোংলা বন্দর ইউনিটের সিনিয়র ষ্টেশন কর্মকর্তা মোঃ আরবেশ আলী বলেন, ‘ভিআইপি কারখানায় লাগা আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা হলেও ভিতর থেকে এখনও ধোয়া বের হচ্ছে। মনে হচ্ছে এখনো পুরোপুরি নেভেনি। তারপরও মোংলা বন্দর, রামপাল খুলনা ও বাগেরহাটের ৮টি ইউনিট কাজ করে যাচ্ছি’।
মোংলা ইপিজেড কর্তৃপক্ষ সূত্র জানায়, ২০১৩ সালে ভারতীয় কোম্পানি ভিআইপি ইন্ডাস্ট্রি বাংলাদেশ প্রাইভেট লিমিডেট এখানে বিনিয়োগ শুরু করে। শুরুতে তারা ছয়টি কারখানা দিয়ে পণ্য উৎপাদনে যায়। এখন পর্যন্ত তাদের ৯টি কারখানা রয়েছে। এসব কারখানায় ব্যাগ অ্যান্ড লাগেজ তৈরি করে যুক্তরাষ্ট্র ছাড়াও বিশ্বের বিভিন্ন দেশে রফতানি করা হয়।
মোংলা ইপিজেডের নির্বাহী পরিচালক মো. মাহাবুব আহম্মেদ সিদ্দিক বলেন, ‘ইপিজেডের ভিতরে ভিআইপির ১ নম্বর কারখানায় অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় এখনো আগুন পুরোপুরি নেভেনি। কারখানাটিতে আগুন লেগে ভিআইপি’র অর্থনৈতিকভাবে অনেক ক্ষতি হয়েছে। এ ঘটনায় ইপিজেডের অতিরিক্ত নির্বাহী পরিচালক (হিসাব) আবুল হাসান মুন্সিকে প্রধান করে চার সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। আগামী তিন কার্যদিবসের মধ্যে এই কমিটি প্রতিবেদন জমা দেবেন। এরপর অগ্নিকাণ্ডের আসল কারণ জানা যাবে।’
এর আগে, ২০২০ সালের ২৮ ডিসেম্বর মোংলা ইপিজেডের একটি সুতা কারখানায় অগ্নিকাণ্ড ঘটে।
সারাবাংলা/এনএস