Sunday 24 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

‘চলচ্চিত্র মানুষের মন-মানসিকতা উন্নত করতে পারে’

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট
৯ মার্চ ২০২৩ ১৯:২৯

ঢাকা: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, চলচ্চিত্র এমন একটা গণমাধ্যম, যা দেশের মানুষের মন-মানসিকতা বদলে আরও উন্নত করে দিতে পারে।

বৃহস্পতিবার (৯ মার্চ) বিকেলে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে ‘জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার ২০২১’ প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। এর আগে, বিজয়ীদের হাতে পুরস্কার তুলে দেন প্রধানমন্ত্রী।

২০২১ সালে চলচ্চিত্রে বিশেষ অবদান রাখায় এবার ২৭ ক্যাটাগরিতে ৩৪টি পুরস্কার দেওয়া হয়। সেইসঙ্গে মুজিববর্ষের বিশেষ চলচ্চিত্রের পুরস্কার পায় ‘টুঙ্গিপাড়ার মিয়া ভাই’। এছাড়া এবার যৌথভাবে আজীবন সম্মাননা পান ইলিয়াস কাঞ্চন ও ডলি জহুর।

বিশ্বের সঙ্গে প্রতিযোগিতা করতে হলে ভালো মানের ট্রেনিং দরকার। তাহলে শিল্পী-কলাকুশলীদের উৎকর্ষকতা আরও বৃদ্ধি পাবে বলে মনে করেন প্রধানমন্ত্রী। তাই ট্রেনিং ইনস্টিটিউটসংশ্লিষ্ট সবাইকে আন্তরিকতার সঙ্গে কাজ করার আহ্বান তিনি।

১৯৯৬ সালে সরকার গঠন করে বেসরকারি খাতে উন্মুক্ত করে দেওয়ার প্রসঙ্গ তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘উদ্দেশ্য ছিল কর্মসংস্থান সৃষ্টি করা। শুধু সাধারণ মানুষের জন্য নয়, আমাদের শিল্পী-কলাকুশলীদের জন্যও একটু সুযোগ সৃষ্টি করে দেওয়া। এখন আমাদের ৪৫টা টেলিভিশন চ্যানেল। এখন অনেকেই এই জায়গাগুলোতে কাজ করার সুযোগ পায়।’ টেলিভিশনের পাশাপাশি ৩২টি কমিটিনিটি বেতার ও ২৭টি এফএম বেতার সম্প্রচার কার্যক্রম পরিচালনা করছে বলেও জানান তিনি।

তিনি আরও বলেন, ‘এত টেলিভিশন খুলে দিয়েছি। সারাদিন অনেকে কথা বলেন। অনেকে অনেক কথা বলার পরও কেউ কেউ বলবেন, আমরা কথা বলতে পারি না। অথচ বাংলাদেশে ২ হাজার ৪৫৫টি পত্রিকা, ১৭০টি অনলাইন সংবাদ পোর্টাল, ১৪টি আইপিটিভি অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। সেখানে সবাই তো মন ভরে কথা বলছে। কথা বলতে পারলটা না কোথায়?’

বিজ্ঞাপন

শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমি অবশ্য একদিন মজা করে বলেছিলাম, যেই বলবে কথা বলতে পারে না- তখনই বিদ্যুৎটা বন্ধ করে দিও। তাহলে আর শোনা যাবে না। তাছাড়া তো আর উপায় নাই। বলতে যখন পারে না, তখন বন্ধ করে দেওয়াই ভালো। সেটা এমনিই বলেছি।’

তিনি বলেন, ‘যে যত কথা বলতে চায় বলুক। আমরা বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১ উৎক্ষেপণ করেছি। আমাদের টেলিভিশন যারা চালাচ্ছে তারা কিন্তু এখন বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইটের মাধ্যমেই চালাচ্ছে। এর আগে কিন্তু বিদেশিদের পয়সা দিয়েই স্যাটেলাইট ব্যবহার করতে হতো। সেখান থেকে তাদের বাঁচিয়ে দিয়েছি। আমরা নতুন আর একটি স্যাটেলাইট করব। সেটা তথ্য সম্প্রচারে আরও বেশি উদ্যোগী হবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমি চাই, আমাদের এই শিল্পটা যেন সবসময় চালু থাকে, ভালো থাকে, উন্নতমানের থাকে। আরও বেশি বেশি যেন পুরস্কার দিতে পারি।’ তবে পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানটা আরও একটু সুন্দর করা দরকার বলে পরামর্শ দেন প্রধানমন্ত্রী।

শেখ হাসিনা বলেন, ‘অবশ্য এটার জন্য আমি দায়ী। কারণ আমার এত সময় কম। আসলে সিনেমার পুরস্কার তো এমন হওয়া উচিত না। পুরস্কার যখন যেটার জন্য দেব, তার কিছুটা ফুটেজ দেখব, তার টিউন গানটা একটু শুনব। এভাবে যদি হয় আমার নিজেরও ভালো লাগে। আমার খুব অবাক লাগছে, একটা নাম ডাকছে আমরা পুরস্কার দিয়ে দিচ্ছি। এভাবে না হয়ে যদি একটু সুন্দরভাবে করা যায়।’

তিনি বলেন, ‘হ্যাঁ, আমি আগেই দোষ স্বীকার করে নিচ্ছি। আমার সময়ের অভাব। তারপরও আমি চাই আগামীতে আরও একটু সুন্দরভাবে হোক। সেভাবেই যেন আয়োজন করা হয়।’

বঙ্গবন্ধুকন্যা বলেন, ‘আমাদের বেশকিছু সিনেমা এখন আন্তর্জাতিক পর্যায়ে সমাদৃত হয়েছে। সেজন্য সত্যিই গর্বিত। আমাদের দেশে এমন দক্ষ মেধাবী শিল্পী আছে বা নির্মাণ শিল্পে দক্ষতা আছে সেটা তো প্রমাণ হয়েছে। তারা আর একটু সুযোগ পেলে আরও ভালো করবে। এটাই আমার বিশ্বাস।’

বিজ্ঞাপন

পুরস্কারপ্রাপ্তদের আন্তরিক অভিনন্দন জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে, বাংলাদেশ এগিয়ে যাবে। অনেক ঝড়-ঝঞ্জা পার হয়ে আমাদের চলতে হচ্ছে।’ যত বাধাই আসুক অতিক্রম করবার শক্তি বাঙালি রাখে বলে মনে করেন তিনি।

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ। বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন হাসানুল হক ইনু (এমপি) ও তথ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব মোহাম্মদ হুমায়ুন কবির খন্দকার। পুরস্কারপ্রাপ্তদের মধ্যে আজীবন সম্মাননা প্রাপ্ত শিল্পী ডলি জহুর অনুভূতি ব্যক্ত করেন।

উল্লেখ্য, ২০২১ সালের জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারের জন্য এ বছর মুক্তিপ্রাপ্ত ২১টি পূর্ণদের্ঘ্য, ১৭টি স্বল্পদৈর্ঘ্য ও ৭টি প্রামাণ্য চলচ্চিত্রসহ মোট ৪৫টি চলচ্চিত্র জমা পড়ে। এর মধ্য থেকেই মন্ত্রণালয় কর্তৃক গঠিত ১৩ সদস্যের জুরি বোর্ড সেরাদের নির্বাচিত করে। পুরস্কার হিসেবে নির্বাচিত প্রত্যেককে ১৮ ক্যারেট মানের ১৫ গ্রাম ওজনের স্বর্ণ দিয়ে তৈরি একটি পদক, পদকের একটি রেপ্লিকা ও এককালীন নির্ধারিত পরিমাণ সম্মানী ও সম্মাননাপত্র দেওয়া হয়। এবার আজীবন সম্মাননাপ্রাপ্ত অভিনয়শিল্পী তিন লাখ, শ্রেষ্ঠ পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র প্রযোজক, শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্র পরিচালক দুই লাখ ও অন্যান্য ক্ষেত্রে বিজয়ীরা এক লাখ টাকা করে অর্থ পুরস্কার হিসেবে পান।

সাারাবাংলা/এনআর/পিটিএম

চলচ্চিত্র প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর