যুদ্ধাপরাধের অভিযোগে পুতিনের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা
১৭ মার্চ ২০২৩ ২২:৪৯
ঢাকা: যুদ্ধাপরাধের অভিযোগে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (আইসিসি)। পাশাপাশি রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট দপ্তরের শিশু অধিকার বিষয়ক কমিশনার মারিয়া আলেক্সেভনা লোভা-বেলোভার বিরুদ্ধেও পরোয়ানা জারি করা হয়েছে। খবর সিএনএন ও রয়টার্স।
নেদারল্যান্ডের হেগ ভিত্তিক এ আদালত শুক্রবার এক বিবৃতিতে বলেছে, ‘জোরপূর্বক ইউক্রনের নাগরিকদের (শিশুদের) নিয়ে যাওয়া এবং রাশিয়ার নিয়ন্ত্রিত ইউক্রেনের অঞ্চলগুলো থেকে জোরপূর্বক নাগরিকদের (শিশুদের) রাশিয়ার নিয়ে যাওয়ার মতো যুদ্ধাপরাধের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগ রয়েছে পুতিনের বিরুদ্ধে।’
আদালত জানিয়েছে, এটি বিশ্বাস করার যুক্তিসংগত কারণ রয়েছে যে, অভিযুক্তরা ইউক্রেনের ভূখণ্ড থেকে জোরপূর্বক বেআইনিভাবে ইউক্রেনীয় শিশুদের রাশিয়ার ভূখণ্ডে স্থানান্তরের পেছনে দায়দায়িত্ব বহন করছে।
জাতিসংঘ মনোনীত তদন্ত দল ইউক্রেনে রাশিয়া যুদ্ধাপরাধ করছে অভিযোগ উত্থাপনের পর আইসিসি এই পরোয়ানা জারি করলো। রাশিয়ার বিরুদ্ধে ইচ্ছাকৃত হত্যা, নির্যাতন এবং কিছু ক্ষেত্রে শিশুদের সামনে স্বজনদের ধর্ষণ এবং মৃতদেহের পাশে মানুষকে আটকে রাখার মতো অপরাধের অভিযোগ তুলেছে জাতিসংঘের তদন্ত দল।
প্রতিবেশী দেশ ইউক্রেন এক বছরের বেশি সময় ধরে আক্রমণ চালানো রাশিয়া একাধিকবার যুদ্ধাপরাধ ও নৃশংসতা চালানোর অভিযোগ অস্বীকার করে আসছে।
শুক্রবার রাশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক নারী মুখপাত্র বলেছেন, পুতিনের বিরুদ্ধে জারি গ্রেফতারি পরোয়ানার কোনো তাৎপর্য নেই।
যুক্তি হিসেবে রাশিয়া বলছে, তারা আইসিসিকে স্বীকৃতি দেয় না। ফলে রাশিয়াকে বিচারের এখতিয়ার আদালতটির নেই। ২০১৬ সালে আইসিসি থেকে নিজেকে প্রত্যাহার করে নেয় রাশিয়া।
আইসিসি’র সংজ্ঞা অনুসারে, কোনো রাষ্ট্র দখল, বোমাবর্ষণ বা বন্দরে অবরোধ করা আগ্রাসনের আওতায় পড়ে। কিন্তু যদি কোনো রাষ্ট্র আইসিসি’র অন্তর্ভুক্ত না হয় তাহলে দেশটির কোনো নির্দিষ্ট ব্যক্তিকে কাঠগড়ায় দাঁড় করানো যায় না।
রুশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মারিয়া জাখারোভা টেলিগ্রাম চ্যানেলে বলেছেন, আমাদের দেশে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের সিদ্ধান্তের কোনও মূল্য নেই, এমনকি আইনি দিক থেকেও। আইসিসির রোম স্ট্যাটিউটে স্বাক্ষর করেনি রাশিয়া। ফলে এই আদালতের সিদ্ধান্ত নিয়ে আমাদের কোনো বাধ্যবাধকতা নেই।
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্সিয়াল চিফ অব স্টাফ আন্দ্রিই ইয়ামাক সোশাল মিডিয়ায় এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়ে বলেছেন, এটি কেবল শুরু।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ানের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিচারকরা গোপন পরোয়ানা জারির বিষয়টি বিবেচনা করেছিলেন। কিন্তু ভবিষ্যতে এমন অপরাধ সংঘটন ঠেকাতে সহযোগিতা করবে বলে তা প্রকাশ্যে জারি করা হয়েছে।
সারাবাংলা/একে