নারীর ক্ষমতায়নে ও অর্থনৈতিক উন্নয়নে বর্তমান সরকার তৎপর
২৮ মার্চ ২০২৩ ১৭:৪৯
ঢাকা: নারীর রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক ক্ষমতায়নে বর্তমান সরকার তৎপর বলে জানিয়েছেন পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী ড. শামসুল আলম।
মঙ্গলবার (২৮ মার্চ) সকালে বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের উদ্যোগে আনোয়ারা বেগম মুনিরা খান মিলনায়তনে ‘তথ্য প্রযুক্তিতে নারীর অভিগম্যতা ও চতুর্থ শিল্পবিপ্লবের প্রস্তুতি’ বিষয়ক প্রাক বাজেট আলোচনা সভায় বক্তারা এসব কথা বলেন।
পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী ড. শামসুল আলম বলেন, ‘নারীর রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক ক্ষমতায়নে বর্তমান সরকার তৎপর। ২০০৯ সালে চারটি মন্ত্রণালয় নিয়ে সামষ্টিক অর্থে জেন্ডার বাজেট শুরু হয়। শুরু হওয়ার পর ৪৪টি মন্ত্রণালয় নিয়ে তার ক্ষেত্র বর্ধিত হয়। গত দেড় দশকে বাংলাদেশ নারীর ক্ষমতায়নে অনেক এগিয়েছে। মাথাপিছু আয় বেড়েছে। রেজাল্ট বেসড মূল্যায়ন বাজেটে করা হয় ৮১টি ইন্ডিকেটরের মাধ্যমে।
তিনি আরও বলেন, ‘উন্নয়ন তরান্বিত ও সমতা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে টার্স্কফোর্স প্রণয়নের ব্যাপারে সরকার উদ্যোগ নিতে পারে। নানাবিধ সামাজিক, রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটের কারণে প্রদত্ত বাজেট পুর্ণাঙ্গভাবে বাস্তবায়ন করা যায় না।’
এ ছাড়া তিনি সামগ্রিক উন্নয়নের জন্য মানবসম্পদ উন্নয়নের ওপর গুরুত্ব আরোপ করেন।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে সংসদ সদস্য ও অর্থ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সদস্য রুমানা আলী বলেন, ‘গবেষণার চিত্রের চেয়ে যারা ঘরে ঘরে গিয়ে কাজ করেন, তাদের কাছে চিত্র একটু ব্যতিক্রম। গ্রামের নারীরা তথ্য প্রযুক্তির মাধ্যমে নিজের আয়ের ক্ষেত্রে অনেক এগিয়েছে। অগ্রগতির এই ধারা অব্যাহত রাখতে সচেতনতা তৈরি করা প্রয়োজন।’
বেসিসের সাবেক সহ-সভাপতি এবং ইউ ওয়াই সিষ্টেম লিমিটেডের সিই্ও ফারহানা আনোয়ারা রহমান বলেন, ‘উদ্যোক্তাদের প্রেক্ষাপট থেকে বিবেচনা করলে বাজেটে খুব বেশি পরিবর্তন হয়নি। মোবাইল ইন্টারনেট ব্যবহারে নারীর সংখ্যা কম। সাইবার সিকিউরিটিতে নারীর হয়রানি প্রতিরোধের সেবা তরান্বিত ও সহজ করতে হবে। শিক্ষা ব্যবস্থার পরিবর্তন করতে হবে। সচেতনতার জন্য আলাদা বরাদ্দ দিতে হবে বাজেটে। কেন একজন উদ্যোক্তা সহজে লোন সুবধিা পায় না, সেটার গবেষণা করতে হবে। একসেস টু ফাইনান্সে কেন নারীরা পিছিয়ে যাচ্ছে, তা গবেষণা করার জন্য উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে।’
সানেমের নির্বাহী পরিচালক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক সেলিম রায়হান বলেন, ‘সম্পত্তিতে নারীদের সমান অধিকার থাকতে হবে। বাংলাদেশে প্রযুক্তিতে নারী-পুরুষের সমানাধিকার নিশ্চিতে বাজেটে বরাদ্দ থাকতে হবে। প্রস্তাবিত বাজেটের মত প্রকৃত বাজেট নিয়ে সংসদে আলোচনা করলে জনগণও এই বিষয়ে অবহিত হবে।’
স্বাগত বক্তব্যে সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক মালেকা বানু বলেন, ‘বাংলাদেশকে মধ্যম আয়ের দেশে উন্নীতকরণ টেকসই করতে হলে নারী সমাজের দক্ষতাকে কাজে লাগানো এবং নারীবান্ধব তথ্য প্রযুক্তির উদ্ভাবনের মাধ্যমে তথ্য প্রযুক্তিতে নারীর অভিগম্যতা বৃদ্ধি করতে হবে।’
সভাপতির বক্তব্যে ডা. ফওজিয়া মোসলেম বলেন, ‘আজকে সমাজের-রাষ্ট্রের স্থায়ীত্বের জন্য নারীকে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। যে কোনো নীতি নির্ধারণের ক্ষেত্রে নারীকে গুরুত্ব দিতে হবে। জাতীয় বাজেট একটি অর্থনৈতিক দলিল যা সামাজিক অগ্রগতির লক্ষ্যে তৈরি হয়। যা রাজনৈতিক দায়বদ্ধতা নিশ্চিতের মাধ্যমে অর্জিত হবে। নারী তার ক্ষমতা, যোগ্যতা দিয়ে নিজ অধিকার আদায় করে নিচ্ছেন।’
আলোচনা সভায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ও সংগঠনের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য শরমিন্দ নিলোর্মী।
সারাবাংলা/এসজে/ইআ