উপমন্ত্রী নওফেলের হস্তক্ষেপ, লালদিঘী মাঠেই হচ্ছে বলিখেলা
৯ এপ্রিল ২০২৩ ১৭:৫৬
চট্টগ্রাম ব্যুরো: শত বছরের ভেন্যু লালদিঘীর ময়দানেই হবে চট্টগ্রামের ঐতিহাসিক আব্দুল জব্বারের বলিখেলা। গত বছরের মতো এবারও মাঠের সামনে গোলচত্বরে বলিখেলার আয়োজন থেকে সরে এসেছে মেলা কমিটি।
রোববার (৯ এপ্রিল) দুপুরে স্থানীয় সংসদ সদস্য ও শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেলের সঙ্গে সাক্ষাত করেন ‘আব্দুল জব্বার স্মৃতি কুস্তি প্রতিযোগিতা কমিটির’ কর্মকর্তারা। এ সময় উপমন্ত্রী তাদের সার্বিক সহযোগিতার প্রতিশ্রুতি দিয়ে লালদিঘী ময়দানেই বলিখেলার আয়োজন করতে বলেন।
জানতে চাইলে আব্দুল জব্বারের বলিখেলা ও বৈশাখী মেলা কমিটির সভাপতি স্থানীয় ওয়ার্ড কাউন্সিলর জহরলাল হাজারী সারাবাংলাকে বলেন, ’২৫ এপ্রিল লালদিঘী ময়দানেই বলিখেলা হবে। ২৪ এপ্রিল থেকে ২৬ এপ্রিল পর্যন্ত বৈশাখী মেলা হবে। তবে মাঠে শুধু বলিখেলা হবে, সেখানে কোনো মেলা হবে না। ২৬ এপ্রিল চাটগাঁইয়া ঈদ উৎসব হবে। উপমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকে আমরা এসব সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত করেছি। তিনি উপস্থিত থাকবেন বলে আমাদের জানিয়েছেন।’
মেলা কমিটির সহ সভাপতি সাংবাদিক চৌধুরী ফরিদ সারাবাংলাকে বলেন,‘লালদিঘীর মাঠে বলিখেলার মঞ্চ তৈরির সার্বিক প্রস্তুতি আমরা শুরু করে দিয়েছি। গত বছর মাঠের বাইরে হলেও এবার মাঠেই হবে বলিখেলা।’
উপমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাতে মেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক শওকত আনোয়ার বাদল, মুসলিম সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকা মমতাজ আকতার, আকতার আনোয়ার, বলরাম চক্রবর্তী ও তাপস দে উপস্থিত ছিলেন।
করোনার সংক্রমণের কারণে ২০২০ ও ২০২১ সালে বলিখেলা ও বৈশাখী মেলা অনুষ্ঠিত হয়নি। করোনা কাটিয়ে ২০২২ সালে জাঁকজমকভাবে ১১৩ তম আসরের প্রস্তুতি নেওয়া হলেও শেষমুহুর্তে অনিশ্চয়তা দেখা দেয়। বলিখেলার ভেন্যু লালদিঘী মাঠ সংস্কার করে শিক্ষা প্রকৌশল অধিদফতর বঙ্গবন্ধুর ছয় দফা ঘোষণার ইতিহাসের আলোকে স্থায়ী মঞ্চ, বঙ্গবন্ধুর ম্যুরালসহ আরও কিছু স্থাপনা তৈরি করে। প্রধানমন্ত্রীর উদ্বোধনের অপেক্ষায় লালদিঘীর মাঠ বন্ধ থাকায় এবং রমজান বিবেচনায় নিয়ে বলিখেলা ও মেলা স্থগিতের ঘোষণা দিয়েছিল কমিটি।
এ নিয়ে তীব্র প্রতিক্রিয়ার মুখে সিটি মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরীর তত্ত্বাবধানে লালদিঘী মাঠের পরিবর্তে গোলচত্বরে বলিখেলা অনুষ্ঠিত হয়েছিল।
এবার ১১৪তম আসরও লালদিঘী ময়দানের পরিবর্তে গোলচত্বরে করার ঘোষণা দেওয়া হলে প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়। কারণ, লালদিঘী ময়দান গত ডিসেম্বরে প্রধানমন্ত্রী উদ্বোধনের পর উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়েছে।
উল্লেখ্য, ব্রিটিশ শাসনের বিরুদ্ধে বাঙালি যুব সম্প্রদায়কে ঐক্যবদ্ধ করতে চট্টগ্রামের বদরপতি এলাকার ব্যবসায়ী আবদুল জব্বার সওদাগর কুস্তির প্রবর্তন করেছিলেন যা চট্টগ্রাম অঞ্চলে ‘বলিখেলা’ নামে পরিচিত। ১৯০৯ খ্রিস্টাব্দে বাংলা সনের ১২ বৈশাখ নিজ নামে লালদীঘির মাঠে এই বলিখেলার সূচনা করেন তিনি। সূচনার ধারাবাহিকতায় প্রতিবছর লালদীঘির মাঠে ১২ বৈশাখ অনুষ্ঠিত হয় বলিখেলা। বলিখেলার একদিন আগে-পরে তিনদিন ধরে লালদিঘীর পাড়সহ আশপাশের এলাকায় প্রায় তিন কিলোমিটার জুড়ে বসে মেলা। এ মেলায় গৃহস্থালী পণ্য থেকে শুরু করে নানা পণ্যের পসরা বসে।
সারাবাংলা/আরডি/ইআ