ঈদের পর আরও চড়া মাছ-মাংস ও সবজির বাজার
২৮ এপ্রিল ২০২৩ ১৩:৩১
ঢাকা: পবিত্র ঈদুল ফিতরের আগে গরম ছিলো নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রীর বাজার। সেই গরম এখনও চলমান। একইসঙ্গে ব্রয়লার মুররি, গরুর মাংস, খাসির মাংস, সবজি ও মাছের বাজারও আরও আগুন। ফলে ঈদ শেষে রাজধানীবাসীদের ফের পড়তে হচ্ছে বেকায়দায়।
শুক্রবার (২৮ এপ্রিল) সকালে রাজধানীর বসুন্ধরা কাঁচাবাজার এবং বাড্ডা কাঁচাবাজার ঘুরে এই চিত্র দেখা গিয়েছে।
বাজার ঘুরে দেখা যায়, ব্রয়লার মুরগি প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ২৬০ টাকায়। অথচ ঈদের আগে এই ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হয়েছে ২৪০-২৫০ টাকায়। ফলে কেজিতে ব্রয়লার মুরগির দাম ১০ টাকার বেশি বেড়েছে। এছাড়া সোনালী মুরগি ৩৮০ টাকা ও লেয়ার ৩৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে আগের দামেই।
অপরদিকে, গরুর মাংস এবং খাসির মাংসের দামও বেশ চড়া। ঈদের আগে গরুর মাংস ৭৬০-৭৮০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। যা আজকে ৮০০ টাকায় গিয়ে ঠেকেছে। এছাড়া আগের দামে খাসির মাংস কেজি প্রতি বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার ১০০ টাকায়।
বসুন্ধরা কাঁচা বাজারে মাংস কিনতে আসা নয়ন আহমেদ সারাবাংলাকে বলেন, ‘নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রীর দাম মাঝেমধ্যেই ওঠানামা করে। ঈদের আগের দামের চেয়ে আজকে কিছুটা মাংসের বাজার গরম। ব্রয়লার মুরগির দাম ১০-১৫ টাকা বেড়েছে কেজিতে। রোজার আগেও ২০০-২১০ টাকা ছিলো মুরগি যা এখন আড়াইশ টাকায় ঠেকেছে। আসলে দাম বাড়লে সেটা আর কমে না।’
অপরদিকে সবজির বাজারও গরম। ঈদ শেষে সবজি আর মাছের বাজারে ভিড় বেশি। সব সবজিতে ২০-৩০ টাকা কেজিতে বেড়েছে। বাজার ঘুরে জানা যায়, চালকুমড়া ৭০ টাকা পিস। মিষ্টি কুমড়া কেজি ৪০ টাকা, কাঁকরোল ১২০ টাকা, সজনে ১ কেজি ৭০ টাকা, টমেটো কেজি ৮০ টাকা, ঢেঁড়স ৭৫ টাকা, গাজর ৮৫ টাকা, কচুরমুখী ১৪৫ টাকা, কাঁচা মরিচ কেজি ৯০ টাকা, করল্লা ৭০ টাকা, বেগুন ৯০ টাকা, ঝিঙ্গা ৮০ টাকা, আলু ৩০ টাকা, ফুলকপি পিস ৪০ টাকা, বরবটি ৮০ টাকা, পটল ৯০ টাকা, পেঁপে ৭০ টাকা, শশা ৭০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে।
বাড্ডা কাঁচা বাজারে কথা হয় স্থানীয় বাসিন্দা জসিমের সঙ্গে। তিনি সারাবাংলাকে বলেন, ‘আমরা ঢাকার বাসিন্দা, সাপ্তাহিক বাজার করি। ঈদের পর সবাই সবজি বেশি কেনে। ঈদের আগে মাংস বা অন্যান্য সামগ্রী বেশি কেনা হয়। আজ মনে হচ্ছে সবকিছুতে দাম বেশি। সবাই ঢাকায় ফিরছে। কিন্তু সবজি হয়তো কম বাজারে। তাই বাজার একটু চড়া।’
বাজারের কাঁচা সবজি বিক্রেতা অর্পণ বলেন, ‘ঈদের পর কাওরান বাজারে সবজি কম। ঈদের সময় সবাই পারিবারিক কাজে ব্যস্ত থাকে, সেজন্য গ্রাম থেকে সবজি মোকামে কম আসে। কিন্তু রাজধানীবাসীর যে চাহিদা সেটা এই কম আসা থেকে পূরণ করা যায় না। আমাদেরও বেশি দামে কিনতে হয়। দাম বেশি দিয়ে কিনতে হয় আবার মালও বেশি আনতে পারি না, যদি বিক্রি না হয় তাহলে পচে যাবে। আমরা কি করবো বলেন, ব্যবসায়ে লোকসান তো করা যায় না।’
অপরদিকে বাড্ডা মাছ বাজারে গেলে সেখানেও উত্তাপ দেখা গেছে। প্রতি কেজি সব ধরনের মাছের দাম ৫০-১০০ টাকা কেজিতে বেড়েছে। পাবদা কেজি প্রতি বিক্রি হচ্ছে ৪৫০-৪৮০ টাকা, শিং মাছ বিক্রি হচ্ছে কেজি ৫৫০ টাকা, টেংরা মাছ বিক্রি হচ্ছে ৫৫০ টাকা, বোয়াল মাছ বিক্রি হচ্ছে ৭৫০ টাকা, পাঙাস মাছ বিক্রি হচ্ছে ৩২০ টাকা, চাষের কই প্রতি কেজি ৪২০ টাকা, দেশি কই ৮০০ টাকা, তেলাপিয়া বিক্রি হচ্ছে ২৭০ টাকা, রুই মাছ বিক্রি হচ্ছে ২৬০ টাকা, কাতল মাছ বিক্রি হচ্ছে ৩৫০ টাকা, কোরাল ৭০০ টাকা, মাগুর মাছ ৫৫০ টাকা, বাগদা ৭৫০ টাকা, গলদা চিংড়ি ১১৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
মাছের বাজার গরম কেন এমন প্রশ্নে বাড্ডা মাছ বাজারের বিক্রেতা বিল্লাল হোসেন বলেন, ‘ঈদের পর বাজারে মাছ কম। সাধারণত ঈদের ২ সপ্তাহ পর মাছ আড়তে আসে। এখন জেলাগুলো থেকে ঢাকায় মাছ পর্যাপ্ত না এলে বেশি দামেই বিক্রি হবে। আবার মাছ বেশি এলেও চাহিদা বেশি থাকলে দাম বাড়ে। আমরা তো শুধু কিনি। কিন্তু যারা মার্কেটে আনে তারাই লাভবান, আমরা তো বাজার বুঝে বিক্রি করি।’
তবে আগের চড়া দামেই স্থির রয়েছে চালের বাজার। বাড্ডা পাইকারি চালের আড়তে গিয়ে দেখা যায়, মিনিকেট চাল ৭৪ টাকা, নাজিরশাইল মানভেদে ৮০-৮৫ টাকা, আটাশ ৬০ টাকা, পাইজাম মানভেদে ৫০-৫৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
সারাবাংলা/এসজে/এমও