Saturday 07 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

কাজের ক্ষেত্রে স্বাধীনতা হারাচ্ছে পিপিপি কর্তৃপক্ষ

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট
৫ জুলাই ২০২৩ ২২:২৬

ফাইল ছবি

ঢাকা: জাতীয় সংসদে ‘বাংলাদেশ সরকারি-বেসরকারি অংশীদারিত্ব (সংশোধন) বিল-২০২৩’ পাস হয়েছে। পাসকৃত বিধান অনুযায়ী আর্থিক ও প্রশাসনিক ক্ষমতা প্রয়োগসহ কাজের ক্ষেত্রে স্বাধীনতা হারাবে সরকারি-বেসরকারি অংশীদারত্ব (পিপিপি) কর্তৃপক্ষ। পিপিপি কর্তৃপক্ষের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা নিয়োগের ক্ষমতাও সরকারের হাতে যাচ্ছে। এ নিয়ে সরকারের কঠোর সমালোচনা করেছেন বিরোধী দলের সংসদ সদস্যরা।

বুধবার (৫ জুলাই) জাতীয় সংসদ অধিবেশনে বিলটি পাসের প্রস্তাব উত্থাপন করেন প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক। বিলের ওপর আনা জনমত যাচাই ও বাছাই কমিটিতে প্রেরণ এবং সংশোধনী প্রস্তাবগুলো নিষ্পত্তি শেষে বিলটি কণ্ঠভোটে পাস হয়।

বিল পাসের প্রক্রিয়ায় অংশ নিয়ে জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য ফখরুল ইমাম বলেন, ‘এই আইন সংশোধন করে পিপিপি কর্তৃপক্ষের ক্ষমতা খর্ব করা হলো। পিপিপির গভর্নিং বডির চেয়ারম্যান প্রধানমন্ত্রী। তারপরও হঠাৎ কেন এটা সরকারের কাছে নিতে হচ্ছে।’

গণফোরামের সংসদ সদস্য মোকাব্বির খান বলেন, ‘পিপিপি কর্তৃপক্ষের ক্ষমতা খর্ব করে সরকারের নিয়ন্ত্রণ আরোপ করা হয়েছে। এখন তাদের আর্থিক সিদ্ধান্ত গ্রহণে অনুমতি নিতে হবে।’

পিপিপি কর্তৃপক্ষ প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের অধীনের একটি ইউনিট, তাহলে কেন এখানে সরকারের অনুমোদন নিতে হবে এই প্রশ্ন রাখেন তিনি।

তিনি আরও বলেন, ‘এভাবে সংশোধন করা হলে বেসরকারি বিনিয়োগকারীরা নিরুৎসাহিত হবেন। পিপিপিতে সবচেয়ে বেশি বিনিয়োগ হয়েছে বিদ্যুৎ খাতে। এখানে ক্যাপাসিটি চার্জের নামে হাজার কোটি টাকা লুটপাট হচ্ছে। তাদের সুরক্ষা দেওয়ার জন্য ইনডেমনিটির মতো আইন করা হয়েছে।’

জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য পীর ফজলুর রহমান বলেন, ‘পিপিপি কর্তৃপক্ষের ওপর সরকারের নিয়ন্ত্রণ বাড়ানো হয়েছে। এতে করে আমলাতান্ত্রিক জটিলতা আরও বাড়বে।’

একই দলের কাজী ফিরোজ রশীদ বলেন, ‘পিপিপিতে সাধারণ ব্যবসায়ীরা কেউ ঢুকতে পারেননি। যারা ঢুকেছেন সবাই বড় ব্যবসায়ী। এখানে আমলাতান্ত্রিক জটিলতা আছে।’

এই আমলাতান্ত্রিক জটিলতার কারণে বড় শিল্প স্থাপিত হয় না। আস্থাভাজন ছাড়া কেউ কোনও বড় প্রকল্প পায় না বলেও দাবি করেন তিনি।

পিপিপি কর্তৃপক্ষের ক্ষমতা খর্ব করার বিষয়ে মন্ত্রী মোজাম্মেল হক বলেন, ‘একটি কর্তৃপক্ষ স্বাধীন হতে পারে না। কর্তৃপক্ষের জবাবদিহিতা কমে যাওয়ার বিষয়টি ঠিক। কিন্তু আমরা আশা করেছিলাম বিরোধীদল এ বিষয়টিকে প্রশংসা করবেন যে সরকারের কাছে ক্ষমতা, কর্তৃপক্ষের কাছে ক্ষমতা নয়। সেটা না করে ওনারা বলছেন কর্তৃপক্ষকেই ক্ষমতাবান করতে হবে এবং সরকারকে ক্ষমতাহীন করতে হবে। এটা পার্লামেন্টারি সিস্টেমে হয় না। সরকারকে এড়িয়ে কোনও কর্তৃপক্ষকে চূড়ান্ত ক্ষমতা বা স্বাধীনতা দেওয়া যায় না বলেই এ সংশোধনী আনা হয়েছে।’

এদিকে, আইনের ৪ (৩) ধারায় আগে ছিল, আর্থিক ও প্রশাসনিক ক্ষমতা প্রয়োগ ও কার্যাবলি সম্পাদনের ক্ষেত্রে পিপিপি কর্তৃপক্ষ নিরপেক্ষ ও স্বাধীন হবে। এখানে সংশোধনী এনে ‘স্বাধীন’ শব্দটি বিলুপ্ত করা হয়েছে। আর এতদিন আইনে পিপিপি কর্তৃপক্ষের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা নিয়োগের ক্ষমতা বোর্ড অব গভর্নরসের হাতে ছিল। এখানে সংশোধন করে বলা হয়েছে, প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা নিয়োগ করবে সরকার।

বিদ্যমান আইনে পিপিপি কর্তৃপক্ষের সাংগঠনিক কাঠামো অনুমোদনের ক্ষমতা বোর্ড অব গভর্নরসের হাতে ছিল। এটি পরিবর্তন করে এই ক্ষমতা সরকারের হাতে দেওয়ার কথা বলা হয়েছে পাস হওয়া বিলে।

সারাবাংলা/এএইচএইচ/একে

জাতীয় সংসদ পার্লামেন্ট পিপিপি


বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ
সম্পর্কিত খবর