ট্রাভেলারের ছদ্মবেশে ‘তারা’ বহন করতো মাদক
১৪ জুলাই ২০২৩ ১৬:৫৭
ঢাকা: রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে ইয়াবা বিক্রির অভিযোগে ৫ মাদক বিক্রেতাকে গ্রেফতার করেছে মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতর (ডিএনসি)। ট্রাভেলারের ছদ্মবেশে তারা বহন করতো মাদক। গ্রেফতারের সময় তাদের কাছ থেকে মোট ৪১ হাজার পিস ইয়াবা জব্দ করা হয়। জব্দ হওয়া ইয়াবার আনুমানিক বাজার মূল্য ১ কোটি ২৫ লাখ টাকা।
গত বুধবার রাত থেকে বৃহস্পতিবার (১৩ জুলাই) পর্যন্ত রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় পৃথক ৩টি অভিযান পরিচালনা করে তাদের গ্রেফতার করে ডিএনসির ঢাকা মেট্রো কার্যালয় (উত্তর)। গ্রেফতার হওয়া অভিযুক্তরা হলেন- সাধন তনচংগ্যা (২৫), ফাতেমা (৩৫), মোছাম্মৎ মমিনা বেগম (২০), মো. ইয়াকুব আলী (৪০) ও মো. নাঈম (২৪)।
শুক্রবার (১৪ জুলাই) দুপুরে ডিএনসির ঢাকা বিভাগের অতিরিক্ত পরিচালক ও বিভাগীয় প্রধান মো. মজিবুর রহমান পাটওয়ারী এসব তথ্য জানান। রাজধানীর তেজগাঁও ডিএনসির ঢাকা মেট্রো কার্যালয়ে (উত্তর) এই সংবাদ সম্মেলনে অনুষ্ঠিত হয়।
মজিবুর রহমান পাটওয়ারী বলেন, ‘বৃহস্পতিবার গাবতলী এলাকায় অভিযান চালিয়ে সাধন তনচংগ্যাকে নারীদের পেটিকোটের ভেতরে বিশেষভাবে তৈরি পকেটে ১১ হাজার পিস ইয়াবাসহ হাতেনাতে গ্রেফতার করা হয়। সাধন টেকনাফ থেকে ইয়াবা সংগ্রহ করে প্রথমে রাঙ্গামাটি নিয়ে যান। সেখান থেকে গাবতলী হয়ে উত্তরবঙ্গের ঠাকুরগাঁও অঞ্চলের মাদক কারবারির কাছে সেগুলো পাচার করেন।’
চাঁদপুর থেকে আসা একটি ইয়াবা চালানের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘চক্রটির আরেক দুই সদস্য বৃহস্পতিবার দুপুরে চাঁদপুর থেকে ইয়াবার চালান নিয়ে সদরঘাটে আসে। ডিএনসির অপর একটি দল অভিযান পরিচালনা করে ফাতেমা ও মমিনা বেগমকে ৪ হাজার পিস ইয়াবাসহ গ্রেফতার করে।’
ট্রাভেলারের ছদ্মবেশে মোটরসাইকেলে ইয়াবা পাচারের বিষয়ে মজিবুর রহমান পাটওয়ারী বলেন, আমাদের কাছে তথ্য আসে রংপুর কেন্দ্রিক কুখ্যাত মাদক কারবারি ও একাধিক মাদক মামলার আসামী ইয়াকুব আলী দীর্ঘদিন মিরপুর ও উত্তরবঙ্গের রংপুর অঞ্চলে ইয়াবা সরবরাহ করে আসছে। তার মাদক চোরাচালানের কৌশল একটু ভিন্ন। টেকনাফ, কক্সবাজার ও চট্টগ্রাম থেকে তিনি সরাসরি মাদকদ্রব্য সংগ্রহ ও পরিবহন করে ঢাকায় নিয়ে আসেন। প্রথমে টেকনাফ, কক্সবাজার ও চট্টগ্রাম অবস্থান করে স্থানীয় মাদক কারবারিদের কাছ থেকে ইয়াবা সংগ্রহ করে সেখানকার হোটেলে মজুত করেন।
তিনি বলেন, ‘ইয়াবার বড় চালান বিভিন্ন কৌশলে তিনি ঢাকায় নিয়ে আসেন। এ জন্য তার রয়েছে প্রাইভেটকার ও মোটরসাইকেল। তার সহযোগীরা প্রাইভেটকারে করে প্রথমে ঢাকা চট্টগ্রাম মহাসড়কে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর তৎপরতা পর্যবেক্ষণ করেন। পরে সবুজ সংকেত পাওয়ার পর মোটরসাইকেলে ইয়াবা নিয়ে ঢাকায় আসেন।’
তিনি আরও বলেন, ‘মোটরসাইকেলে তিনি ট্রাভেলারের বেশভূষা ধারণ করেন, যাতে সহজে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর চোখ ফাঁকি দেওয়া যায়। এ পদ্ধতিতে তিনি বেশ কয়েকটি ইয়াবার চালান নিয়ে আসেন। রমনা ও গুলশান সার্কেলের সমন্বয়ে গঠিত একটি দল নিয়ে বৃহস্পতিবার বিকেল ৪টায় কালশী এলাকায় অভিযান পরিচালনা করা হয়। মোটরসাইকেলে করে ঘটনাস্থলে এলে ২৫ হাজার পিস ইয়াবা ও মোটরসাইকেলসহ ইয়াকুব আলীকে গ্রেফতার করা হয়।’
গ্রেফতারকৃতদের বিরুদ্ধে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে সংশ্লিষ্ট থানায় মামলা করা হয়েছে বলেও জানান ডিএনসির এই কর্মকর্তা।
সারাবাংলা/ইউজে/এমও