‘বিদেশিদের প্রেসক্রিপশনে রাষ্ট্র ও নির্বাচন পরিচালিত হবে না’
১৫ জুলাই ২০২৩ ২৩:৫৬
ঢাকা: বিদেশিদের প্রেসক্রিপশনে রাষ্ট্র ও নির্বাচন পরিচালনা হবে না বলে মন্তব্য করেছেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমির সৈয়দ মুফতি মুহাম্মদ রেজাউল করিম।
শনিবার (১৫ জুলাই) বিকেলে বায়তুল মোকাররম মসজিদের উত্তরে গেটে আয়োজিত সমাবেশ থেকে এ মন্তব্য করেন তিনি। প্রধান নির্বাচন কমিশনারের পদত্যাগ ও ব্যর্থ নির্বাচন কমিশন বাতিল, সংখ্যানুপাতিক নির্বাচন পদ্ধতি প্রবর্তন, বিদ্যমান রাজনৈতিক সংকট উত্তরণে সংসদ ভেঙে দিয়ে জাতীয় সরকারের অধীনে সুষ্ঠু নিরপেক্ষ জাতীয় নির্বাচনের দাবিতে এ সমাবেশ আয়োজন করা হয়।
সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করীম বলেন, ‘দেশ আমাদের, নির্বাচনও আমাদের। সুতরাং আমার দেশের জনগণই সিদ্ধান্ত নেবে নির্বাচন কীভাবে হবে? এখানে বিদেশিদের হস্তক্ষেপ কাম্য নয়। বিদেশিদের প্রেসক্রিপশনে রাষ্ট্র ও নির্বাচন পরিচালিত হবে না।’
তিনি বলেন, ‘একটি বিশেষ প্রেক্ষাপটে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে প্রথম নির্বাচন হয় ১৯৯১ সালে। ওই নির্বাচনে বিএনপি ক্ষমতায় গেলে তৎকালীন বিরোধীদল আওয়ামী লীগ বলেছিল- নির্বাচনে সুক্ষ্ম কারচুপি হয়েছে। এ অজুহাতে তারা পার্লামেন্ট বর্জন করে। আবার ১৯৯৬ সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচনে আওয়ামীলীগ ক্ষমতায় গেলে ওই সময়ের বিরোধীদল বিএনপি বলেছিল- ভোটে স্থুল কারচুপি হয়েছে এবং তারাও লাগাতার সংসদ বর্জন করে। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচনও কারও কাছে গ্রহণযোগ্য হয় নাই।’
‘আবার স্বাধীনতার পর দলীয় সরকারের অধীনে কোনও নির্বাচন সুষ্ঠু, গ্রহণযোগ্য ও নিরপেক্ষ হয় নাই। রাষ্ট্রযন্ত্রকে ব্যবহার করে বিরোধী দলের ওপর দমন-পীড়ন চালিয়ে একতরফা নির্বাচন করে ক্ষমতা দখল করাই দলীয় সরকারের মূল উদ্দেশ্য থাকে। ভবিষ্যতেও দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন সুষ্ঠু হওয়ার আশা করা যায় না। এমন পরিস্থিতিতে জাতীয় সরকারের অধীনে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দাবিতে রাজপথ ক্রমেই উত্তপ্ত হয়ে উঠছে’— বলেন সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করীম।
তিনি বলেন, ‘আওয়ামী সরকার দেশকে অকার্যকর করে বিচার ও আইন বিভাগকে ধ্বংস করেছে। নির্বাহী বিভাগ এবং সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান নির্বাচন কমিশনকেও ধ্বংস করেছে। আওয়ামী লীগ বারবার সংবিধানের দোহাই দিচ্ছে। অথচ তারাই নিজেদের স্বার্থে বারবার সংবিধান পরিবর্তন করেছে।’
সরকারের একজনকেও ছাড় দেওয়া হবে না হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে তিনি বলেন, ‘২০১৪ এবং ২০১৮ সালের অবৈধ নির্বাচনে প্রজাতন্ত্রের যে সকল কর্মকর্তা-কর্মচারিরা ভোট ডাকাতিতে সহযোগিতা করেছে তাদের একজনকেও ছাড় দেওয়া হবে না। আপনারা যারা সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী আছেন, তারা সরকারের অন্যায় নির্দেশ পালন থেকে বিরত থাকুন।’
সংগঠনের ঢাকা মহানগর উত্তর সভাপতি প্রিন্সিপাল মাওলানা শেখ ফজলে বারী মাসউদের সভাপতিত্বে সমাবেশে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মহাসচিব অধ্যক্ষ হাফেজ মাওলানা ইউনুছ আহমাদ, প্রেসিডিয়াম সদস্য প্রিন্সিপাল মাওলানা সৈয়দ মোসাদ্দেক বিল্লাহ আল-মাদানী, প্রেসিডিয়াম সদস্য আল্লামা নূরুল হুদা ফয়েজী, অধ্যাপক আশরাফ আলী আকন ও অধ্যাপক মাহবুবুর রহমান, উপদেষ্টা আল্লামা খালিদ সাইফুল্লাহ, যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা গাজী আতাউর রহমান, মুহাম্মদ আমিনুল ইসলাম ও ইঞ্জিনিয়ার আশরাফুল আলাম,সহকারি মহাসচিব মাওলানা মুহাম্মদ ইমতিয়াজ আলম প্রমুখ।
সারাবাংলা/এজেড/পিটিএম