পানিতে ভেসে যাওয়া আরও ২ শিশুর লাশ উদ্ধার, এখনো নিখোঁজ ৬
৯ আগস্ট ২০২৩ ২৩:৩৬
চট্টগ্রাম ব্যুরো: বন্যাকবলিত চট্টগ্রামের সাতকানিয়া ও চন্দনাইশে পানিতে ভেসে আসা দুই শিশুর লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। এ নিয়ে মৃতের সংখ্যা দাঁড়াল আট। দুই উপজেলায় পানির স্রোতে ভেসে যাওয়া আরও অন্তত ছয় জন এখনো নিখোঁজ আছেন।
বুধবার (৯ আগস্ট) বিকেলে সাতকানিয়ার চরতী ইউনিয়নের দুরদুরি ও চন্দনাইশের জামিরজুড়ি থেকে লাশগুলো উদ্ধার হয়।
মঙ্গলবার সাতকানিয়া উপজেলার চরতি ইউনিয়নের দক্ষিণ চরতি গ্রামে নৌকা উল্টে তিন শিশুসহ চারজন নিখোঁজ হন। স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান রুহুল্লাহ চৌধুরীর ভাষ্য অনুযায়ী, দক্ষিণ চরতি গ্রাম থেকে নৌকা নিয়ে নারী ও শিশুসহ আটজন পাশের সুঁইপাড়া গ্রামে যাচ্ছিলেন। মাঝপথে পানির স্রোতে নৌকা উল্টে যায়। এতে সবার পানিতে পড়ে গেলেও চারজন নিজেদের রক্ষা করতে সক্ষম হন। কিন্তু তিন শিশুসহ চারজন পানির স্রোতে তলিয়ে যায়।
এর মধ্যে জান্নাতুল ফেরদৌস (৫) নামে এক শিশুর লাশ বুধবার বিকেলে দুরদুরি এলাকায় ভেসে ওঠে। স্থানীয় ইউপি সদস্য মোহাম্মদ আলী লোকজনের সহায়তায় লাশ উদ্ধার করেন।
মোহাম্মদ আলী সারাবাংলাকে জানান, জান্নাতুল ফেরদৌসের ভাই মোহাম্মদ শহীদুল ইসলাম (৩) ও বোন সানজিদা আক্তার আদিরা (৭) এখনও নিখোঁজ আছে। এছাড়া একই নৌকার যাত্রী আব্দুর রহিমও (৪৫) নিখোঁজ আছেন।
সাতকানিয়া উপজেলার মির্জাখীলে বন্যার পানিতে ভেসে যাওয়া মোহাম্মদ তানভীর উদ্দিন (২০) নামে এক তরুণও এখনো নিখোঁজ আছেন।
এদিকে, চন্দনাইশ উপজেলার জামিরজুরি এলাকায় বুধবার বিকেলে এক বৃদ্ধ ও এক শিশুসহ দুজন এবং ধোপাছড়ি এলাকায় এক যুবক পানির স্রোতে ভেসে গেছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
চন্দনাইশ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আনোয়ার হোসেন সারাবাংলাকে জানান, জামিরজুরি এলাকায় প্রায় ৮০ বছর বয়সী বৃদ্ধ আবু সৈয়দ ও তার নাতি আনিস পানিতে ভেসে যান। এর মধ্যে আনিসের লাশ ভেসে ওঠার পর উদ্ধার করা হয়। আবু সৈয়দের লাশ পৃথক আরেকটি স্থানে উদ্ধারের তথ্য পেলেও সেটি যাচাই করা সম্ভব হয়নি।
ধোপাছড়ি এলাকায় বিকেলে আনুমানিক ৩০ বছর বয়সী এক যুবক পানিতে ভেসে গেলেও রাত পর্যন্ত উদ্ধার হয়নি বলে জানান ওসি।
বুধবার সন্ধ্যায় চট্টগ্রাম জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন বিভাগ অতি ভারি বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলে সৃষ্ট বন্যায় ছয়জনের মৃত্যুর তথ্য দেয়। এর মধ্যে সাতকানিয়ায় এক জন, লোহাগাড়ায় দু’জন, বাঁশখালীতে একজন, রাউজানে একজন এবং চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনে একজন।
শনিবার গভীর রাতে বাঁশখালীর বৈলগাঁও ২ নম্বর ওয়ার্ডে ঘরের দেয়াল ধসে মারা যায় মেজবাহ নামে পাঁচ বছর বয়সী এক শিশু।
সোমবার সন্ধ্যায় রাউজানের উরকিরচরে হালদা নদীর শাখা খালে পড়ে শাহেদ ইসলাম বাবু (৪০) নামে এক খামারির নিখোঁজের দুইদিন পর তার লাশ মিলেছে। একইদিন সকালে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের আওতাধীন হাটহাজারী উপজেলার ইসলামীয়া হাট বাদামতল এলাকায় পরীক্ষা দিতে যাওয়ার পথে পানিতে পড়ে মৃত্যু হয় নিপা পালিত নামে এক ছাত্রীর। তিনি হাটহাজারী সরকারি কলেজের বিবিএস দ্বিতীয় বর্ষে পড়তেন।
লোহাগাড়ায় সোমবার রাতে পানির স্রোতে তলিয়ে নিখোঁজের পর মঙ্গলবার দুপুরে জুনায়েদ ইসলাম জারিফ (২২) নামে এক বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রের লাশ ভেসে ওঠে। জুনায়েদ বেসরকারি বিজিসি ট্রাস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার প্রকৌশল বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন। এছাড়া সাতকানিয়া ও লোহাগাড়ায় আরও দু’জনের মৃত্যু হয়েছে।
সারাবাংলা/আরডি/পিটিএম