‘বিএনপির মাথায় ঘুরে পেয়ারে পাকিস্তান’
১৮ আগস্ট ২০২৩ ২৩:৩৩
ঢাকা: বিএনপির মাথায় সব সময় পেয়ারে পাকিস্তান ঘুরে বেড়ায় বলে মন্তব্য করেছেন বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিমন্ত্রী ইয়াফেস ওসমান।
শুক্রবার (১৮ আগস্ট) সন্ধ্যায় জাতীয় প্রেসক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী মিলনায়তনে এক আলোচনা অনুষ্ঠানে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিমন্ত্রী ইয়াফেস ওসমান এমন মন্তব্য করেন।
বঙ্গবন্ধু পরিষদের সাবেক সভাপতি প্রয়াত ডা. এস এ মালেকের জন্মদিন উপলক্ষে আয়োজিত স্মৃতি তর্পণ অনুষ্ঠানে তিনি একথা বলেন।
স্মৃতি তর্পণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিমন্ত্রী ইয়াফেস ওসমান বলেন, এখন বঙ্গবন্ধু পরিষদের কাজ করা দরকার। শুধু থিউরিটিক্যাল কাজ করা নয়, এখন সময় এসেছে- প্র্যাকটিকেল কাজে বেড়োনো দরকার। যে যেখানে আছি না কেন, সত্যি কথা যদি বলি, এখন বঙ্গবন্ধু কন্যা (দেশটাকে) একা টেনে বেড়াচ্ছেন। তিনি একা। তার পাশে আমরা কেউ নেই! মানে আমাদের যোগ্যতা নাই। যত কথা উনি বলেন, দেখেন উনি একাই বলছেন। এটা এমন হলো কেন? এটা নিয়ে আমাদের বঙ্গবন্ধু পরিষদের ভাবনা চিন্তার সময় এসেছে। আমাদের এখন রাস্তায় নামার সময় এসে গেছে।
বিরোধী রাজনৈতিক দলের নেতিবাচক কর্মকাণ্ডের প্রতি ইঙ্গিত করে তিনি আরও বলেন, দুটো ফ্রন্টেই এখন আমাদের কাজ করার সময় এসে গেছে। এর একটা হলো- মানুষের কাছে গিয়ে সরাসরি বলা, আরেকটা হলো ওরা এদেশটা পাকিস্তান বানানোর অপচেষ্টা করবে। এসব বিষয়ে আমাদের ভাবার সময় এসেছে, আমাদের একসঙ্গে কাজ করার সময় এসেছে।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বঙ্গবন্ধু পরিষদের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক।
সাবেক সংসদ সদস্য ডা. এস এ মালেক দেশবরেণ্য বুদ্ধিজীবী, বিশিষ্ট লেখক ও সুপরিচিত কলামিস্ট উল্লেখ করে তিনি বলেন, ডা. এস এ মালেকের সবচেয়ে বড় পরিচয় হচ্ছে তিনি একজন ভালো মানুষ ছিলেন। তিনি একজন সৎ, দেশপ্রেমিক মানুষ ছিলেন। তিনি যেভাবে লিখতেন, যেভাবে কথা বলতেন, সেভাবেই কাজ করতেন।
স্মৃতি তর্পণ অনুষ্ঠানে প্রয়াত ডা. এস এ মালেকের ছেলে বঙ্গবন্ধু পরিষদের যুগ্ম সম্পাদক ডা. শেখ আবদুল্লাহ আল মামুন তার বাবার জীবনের নানা অজানা অনেক বিষয় তুলে ধরেন। তিনি বলেন, ডা. এস এ মালেক অত্যন্ত নির্লোভ, নির্মোহ এবং সাধারণ জীবনযাপন করতেন। তিনি সারাজীবন মানুষের জন্য কাজ করার চেষ্টা করেছেন।
বঙ্গবন্ধু পরিষদের সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক আ ব ম ফারুকের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন বঙ্গবন্ধু পরিষদের প্রেসিডিয়াম সদস্য অধ্যাপক এ জে এম শফিউল আলম ভূঁইয়া, প্রখ্যাত সমাজতত্ত্ববিদ ও গবেষক খন্দকার সাখাওয়াত আলী, বঙ্গবন্ধু পরিষদের যুগ্ম সম্পাদক অধ্যাপক ফিরোজ আহমেদ, রেহান সোবহান, সাংগঠনিক সম্পাদক লিয়াকত হোসেন মোড়ল, এস এম লুৎফর রহমান, বিশিষ্ট লেখিকা নাহিদ নূর আলম প্রমুখ।
অনুষ্ঠানে বক্তারা ডা. এস এ মালেকের জীবনের নানা দিক নিয়ে স্মৃতিচারণ করেন।
বীর মুক্তিযোদ্ধা এবং প্রধানমন্ত্রীর সাবেক রাজনৈতিক উপদেষ্টা ডা. এস এ মালেকের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে বক্তারা বলেন, ডা. এস এ মালেক ছিলেন বাংলাদেশের রাজনৈতিক জগতের এক উজ্জ্বল নক্ষত্র, যার আদর্শবাদিতা ও সততা ছিল অন্যদের জন্য অনুকরণীয়। এবং যিনি ছিলেন মুক্তিযুদ্ধের চেতনার অন্যতম জীবন্ত বাতিঘর।
আলোচনা সভায় ডা. এস এ মালেকের জীবন ও কর্ম থেকে শিক্ষা নিয়ে আগামীর সুখি, সমৃদ্ধ ও সাম্প্রদায়িকতামুক্ত বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয়ে পুনরায় উদ্দীপ্ত হওয়ার আহ্বান জানানো হয়।
আলোচনা শেষে বঙ্গবন্ধুসহ ১৫ আগস্টে নিহত শহিদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে দোয়া ও মোনাজাত করা হয়। দোয়া ও মোনাজাত পরিচালনা করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদের খতিব মাওলানা সৈয়দ মুহাম্মদ এমদাদ উদ্দীন।
১৯৭৭ সালের ৬ জুলাই ঢাকায় প্রগতিশীল, বুদ্ধিবৃত্তিক সংগঠন হিসেবে ‘বঙ্গবন্ধু পরিষদ’ প্রতিষ্ঠিত হয়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক আব্দুল মতিন চৌধুরীর নেতৃত্বে প্রতিষ্ঠিত এই সংগঠন মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় অসম্প্রদায়িক বাংলাদেশ বিনির্মাণ এবং বঙ্গবন্ধুর আদর্শ বাস্তবায়নে বুদ্ধিবৃত্তিক কাজ করে থাকে।
বঙ্গবন্ধুর আদর্শ অনুসরণ করে সামনের দিকে এগিয়ে যাওয়ার লক্ষ্যেই বঙ্গবন্ধু পরিষদ তৈরি হয়েছে বলে অনুষ্ঠান থেকে জানানো হয়।
সারাবাংলা/কেআইএফ/একে