বিটিআইয়ের কার্যকারিতা সন্তোষজনক, দ্রুতই প্রয়োগের সিদ্ধান্ত: মেয়র
২৭ আগস্ট ২০২৩ ২২:৫৯
ঢাকা: আমদানি করা জৈব কীটনাশক বিটিআই গবেষণাগারে পরীক্ষায় কার্যকর প্রমাণিত হয়েছে বলে জানিয়েছেন ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) মেয়র আতিকুল ইসলাম।
তিনি বলেন, উদ্ভিদ সংরক্ষণ উইং ও আইইডিসিআরের ল্যাব টেস্টে মার্শালের সরবরাহ করা পণ্যটি বিটিআই বলে প্রমাণিত হয়েছে। সরকারি এই দুই সংস্থার ল্যাব টেস্টে বিটিআইয়ের কার্যকারিতাও সন্তোষজনক পাওয়া গেছে। এখন ডেঙ্গুর বাহন এডিস মশা নিধনে এই বিটিআই ব্যবহার করা হবে কি না, সে বিষয়ে দ্রুতই মিটিং করে সিদ্ধান্ত নেব।
রোববার (২৭ আগস্ট) সন্ধ্যায় বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমিতে বিশেষ শিক্ষার্থীদের আঁকা ছবি ও হস্তশিল্প প্রদর্শনী অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এসব কথা জানান। তবে বিটিআই পণ্যটি ঠিক থাকলেও পিপিআরের শর্ত অনুযায়ী পণ্যটি সিঙ্গাপুর থেকে আমাদানি করার পক্ষে যথাযথ নথি না থাকায় মার্শালের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা বহাল থাকবে বলে জানান মেয়র আতিক।
আরও পড়ুন- বিটিআই ঠিক আছে: উদ্ভিদ সংরক্ষণ উইং
সাংবাদিকের এক প্রশ্নের জবাবে মেয়র বলেন, ‘আজ পিপিডব্লিউ (উদ্ভিদ সংরক্ষণ উইং) এবং আইইডিসিআর (রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান) থেকে রিপোর্ট পেয়েছি। তাদের পরীক্ষায় নিশ্চিত হয়েছে যে আমদানি করা কীটনাশকটি বিটিআই এবং কার্যকর। এর আগে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ল্যাবের পরীক্ষায় এবং ডিএনসিসির আট সদস্যের মূল্যায়ন কমিটির পরীক্ষাতেও এর কার্যকারিতা প্রমাণিত হয়েছে। এখন এর প্রয়োগ নিয়ে আমাদের সিদ্ধান্ত নিতে হবে।
মেয়র আতিক বলেন, বিশ্বের অনেক উন্নত দেশ বিটিআই ব্যবহার করে ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে সফল হয়েছে। তাই আমরাও ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে বিটিআই আমদানির সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম। পরীক্ষামূলক প্রয়োগের পরপরই জানতে পারি, বিটিআইয়ের মোড়কে উল্লেখ করা সিঙ্গাপুর থেকে আমদানির তথ্য সঠিক নয়। কীটনাশকটি সঠিক ও কার্যকর হলেও ভুল তথ্য দিয়ে মার্শাল যে প্রতারণা করেছে, তার বিরুদ্ধে আইনি প্রক্রিয়া অব্যাহত থাকবে। কোনো দুর্নীতি ও অনিয়মকে ছাড় দেব না।
বিটিআইয়ের কার্যকারিতা নিয়ে কোনো প্রশ্ন নেই উল্লেখ করে ডিএনসিসি মেয়র বলেন, ‘আমি শুনেছি বিটিআইয়ের কার্যকারিতা নিয়ে অনেক কীটতত্ত্ববিদ অনেক কথা বলছেন। এ-ও শুনেছি, অনেক কীটতত্ত্ববিদ নিজেরাই বিটিআই সরবরাহের ব্যবসা করতে চায়। তারা নানা ধরনের কথা বলছে। আসলে নিন্দুকেরা অনেক কথাই বলবে। আমি স্পষ্ট বলতে চাই, ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণের মহৎ উদ্দেশ্যে বিটিআই আমদানি করেছি। এখানে কারও কোনো দুর্নীতি ও অনিয়মের প্রমাণ পেলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
এর আগে ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে এডিস নিধনে ডিএনসিসিকে সিঙ্গাপুর থেকে বিটিআই আমদানি করে দেয় মার্শাল অ্যাগ্রোভেট কেমিক্যাল কোম্পানি লিমিটেড। সারাবাংলার অনুসন্ধানে বেরিয়ে আসে, মার্শাল সিঙ্গাপুরের বেস্ট কেমিক্যাল থেকে বিটিআই আমদানি করেনি। এতে আসলে বিটিআইয়ের নামে প্রকৃতপক্ষে কী আমদানি করা হয়েছিল, সেই প্রশ্ন ওঠে।
অনুসন্ধানে আরও জানা যায়, মার্শাল অ্যাগ্রোভেট সিঙ্গাপুরের বেস্ট কেমিক্যাল থেকে বিটিআই কেনার ঘোষণা দিলেও সেটি তারা আমদানি করেছিল চীন থেকে। বিটিআই আমদানির লাইসেন্সও তাদের ছিল না। অভিযোগ ওঠার পর সিটি করপোরেশন থেকে লিখিত প্রমাণ চাইলে তারা সেটি না দেখানোয় মার্শালকে কালো তালিকাভুক্ত করে সিটি করপোরেশন এবং গুলশান থানায় বিটিআইয়ের চার কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মামলা করে। পরে ভুয়া লাইসেন্সে বিটিআই আমদানির অভিযোগে মার্শালের বিরুদ্ধে মামলা করে চট্টগ্রাম কাস্টমস কর্তৃপক্ষ।
আরও পড়ুন-
টেন্ডারের শর্ত লঙ্ঘন, ‘নকল’ বিটিআইয়ে জনস্বাস্থ্য নিয়ে শঙ্কা
চিনের কোম্পানির কাছেও বিটিআই বিক্রি করেনি ‘বেস্ট কেমিক্যাল’
ডিএনসিসিতে ‘নকল’ বিটিআই: আইনি ব্যবস্থা নেবে সিঙ্গাপুরের কোম্পানি
সারাবাংলা/আরএফ/টিআর
ডিএনসিসি ডিএনসিসি মেয়র বিটিআই বিটিআই আমদানি বিটিআই জালিয়াতি মার্শাল অ্যাগ্রোভেট মেয়র আতিক মেয়র আতিকুল ইসলাম