বিমানবন্দর থেকে কাস্টমসের সোনা উধাও: অবশেষে মামলা
৪ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ০২:২৩
ঢাকা: রাজধানীর শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ঢাকা কাস্টমস হাউজের সংরক্ষিত গুদাম থেকে অন্তত ৫৫ কেজি ৫০১ গ্রাম সোনা উধাও থাকার ঘটনায় বিমানবন্দর থানায় মামলা হয়েছে। এ ছাড়া কাস্টমস কর্তৃপক্ষ এ ঘটনা তদন্তে কমিটি গঠন করেছে।
মামলায় ওই গুদামের ইনচার্জসহ চারজনকে আসামি করা হয়েছে। ঘটনাটি জানাজানি হওয়ার পর খবর প্রকাশিত হলে তারও প্রায় ২৪ ঘণ্টা পর মামলাটি দায়ের হলো। ঢাকা মহাগর পুলিশের (ডিএমপি) উত্তরা বিভাগের উপকমিশনার (ডিসি) মোর্শেদ আলম মামলার তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
ডিসি মোর্শেদ আলম বলেন, সোনার পরিমাণে গরমিল থাকায় রোববার (৩ সেপ্টেম্বর) দিবাগত মধ্যরাতে কাস্টমস কর্তৃপক্ষ বিমানবন্দর থানায় মামলা করেছে। মামলায় চারজনকে আসামি করা হয়েছে। পুলিশ এ বিষয়ে আইনি ব্যবস্থা নিচ্ছে। এ ছাড়া কাস্টমস কর্তৃপক্ষ একটি আলাদা তদন্ত কমিটি গঠন করেছে। সেই তদন্ত কমিটিও কাজ করছে।
আরও পড়ুন- ১৫ নয়, বিমানবন্দরে কাস্টমসের গুদাম থেকে ৫৫ কেজি সোনা উধাও
মামলার এজাহারের বরাত দিয়ে পুলিশ জানিয়েছে, বিমানবন্দরে বিভিন্ন সময়ে জব্দ করা সোনার বার বা অলংকার ঢাকা কাস্টমস হাউজের ভল্টে রাখা হয়। ওই ভল্টে থাকা সোনার ৫৫ কেজি ৫১০ গ্রামের হিসাবে গরমিল রয়েছে। অর্থাৎ সেখানে যে পরিমাণ সোনা সেখানে থাকার কথা, তার চেয়ে ৫৫ কেজি ৫১০ গ্রাম সোনা কম আছে কাস্টমসের ভল্টে। এজাহারে বলা হয়েছে, উধাও হওয়া বা চুরি যাওয়া সোনাগুলো ২০২০ সাল থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত সময়ে জমা হয়েছিল কাস্টমসের এই সংরক্ষিত গুদামে।
বিমানবন্দরে কাস্টমসের ওই সংরক্ষিত গুদাম থেকে সোনা চুরির একটি খবর জানাজানি হয় গত শনিবার (২ সেপ্টেম্বর) রাতে। ওই সময় জানা যায়, গুদামের একটি আলমারি ভেঙে একটি বাক্স চুরি করা হয়েছে। ওই বাক্সে ছিল ১৫ কেজি সোনা, বর্তমান বাজারদরে যার দাম প্রায় ১৫ কোটি টাকা। এ নিয়ে সারাবাংলা ডটনেটেই প্রথম খবর প্রকাশিত হয়।
সারাবাংলার অনুসন্ধানে বেরিয়ে আসে, কেপিআইভুক্ত ও কঠোর নিরাপত্তা বলয়ে থাকা ওই গুদাম থেকে সোনা চুরির ঘটনাটি কয়েকদিন আগে থেকেই অভ্যন্তরীণভাবে আলোচনায় ছিল। এর মধ্যে ঢাকা কাস্টমসের কমিশনার তাদের বিমানবন্দরের গুদামে রক্ষিত সোনার হিসাব জানাতে নির্দেশ দেন। শনিবার সকাল থেকে রোববার রাত পর্যন্ত হিসাবে বেরিয়ে আসে— ১৫ কেজি নয়, গুদাম থেকে উধাও হয়েছে ৫৫ কেজি ৫১০ গ্রাম সোনা।
এ নিয়ে কাস্টমস বা বিমানবন্দরে কর্মরত আইনশৃঙ্খলা বাহিনী বা গোয়েন্দা সংস্থার কেউ মুখ খোলেননি। তবে একাধিক সূত্র জানিয়েছে, বিমানবন্দরে কাস্টমসের গুদামের দায়িত্বে থাকেন সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা পদের দুজন। দীর্ঘদিন ধরে বিমানবন্দরের ওই ভল্টের দায়িত্বে ছিলেন একই পদধারী দুই কর্মকর্তা শহিদুল ও সাহেদ। সম্প্রতি অভ্যন্তরীণ আদেশে তাদের দুজনকে বদলি করে একই পদমর্যাদার আকরাম ও মাসুমকে দেয়া হয় দায়িত্ব।
সূত্রগুলো বলছে, শহিদুল ও সাহেদ গুদামে সংরক্ষিত সামগ্রীর হিসাব নতুন দায়িত্বপ্রাপ্ত আকরাম ও মাসুমকে বুঝিয়ে দিতে টালবাহানা করেন। এক পর্যায়ে ঢাকা কাস্টম হাউজের ডেপুটি কমিশনার লুবানা ইয়াসমিন গত ২১ আগস্ট শহিদুল ও সাহেদের বদলির আদেশ গুদামের মূল্যবান সামগ্রী বুঝিয়ে না দেওয়া পর্যন্ত স্থগিত করেন। সোনা উধাওয়ের ঘটনায় এই চারজনকেই নিজেদের হেফাজতে নিয়েছিল কাস্টমস।
সারাবাংলা/ইউজে/টিআর
ঢাকা কাস্টম হাউজ বিমানবন্দর বিমানবন্দর থানা শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর সোনা উধাও সোনা চুরি সোনা চুরির মামলা সোনার অলংকার সোনার বার