Thursday 05 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

অধ্যক্ষকে অশ্লীল অঙ্গভঙ্গি প্রদর্শন, বিচার দাবিতে মানববন্ধন

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট
৪ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ২০:৫৯

ঢাকা: বিদ্যালয়ে দিনের পর দিন অনুপস্থিত। কখনও উপস্থিত থাকলেও ক্লাস নেন না। চলেন ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে। নাম ভাঙান সেনাবাহিনী ও প্রধানমন্ত্রীর অফিসের বড় কর্মকর্তাদের সঙ্গে সখ্য রয়েছে। এরকম নানা অভিযোগ রয়েছে লালমনিরহাটের আদিতমারী উপজেলার মহিষখোচা দ্বিমুখী উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজের সহকারী শিক্ষক জাহাঙ্গীর আলম শাহীনের বিরুদ্ধে।

এক পর্যায়ে বিদ্যালয় থেকে দীর্ঘদিন অনুপস্থিতির বিষয়ে ওই শিক্ষককে অফিসিয়ালি নোটিশ দিলে তা আমলে না নিয়ে বিদ্যালয়ে এসে অপ্রীতিকর অবস্থার সৃষ্টি করেন শিক্ষক শাহীন। কলেজের অধ্যক্ষকে অশ্লীল অঙ্গভঙ্গি দেখানোর পর জোর করে হাজিরা খাতা নিয়ে স্বাক্ষর করার চেষ্টা করেন এবং নানাভাবে হুমকি-ধমকি প্রদর্শন করেন শাহীন।

সোমবার (৪ সেপ্টেম্বর) কলেজের অধ্যক্ষ মো. শরওয়ার আলম সারাবাংলাকে এ সব অভিযোগ করেন।

তিনি বলেন, ‘সহকারী শিক্ষক জাহাঙ্গীর আলম শাহীন কোনো কিছু অবগত না করেই দীর্ঘদিন অনুপস্থিত ছিলেন। এ ঘটনায় অফিস থেকে একটি কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়। তিনি কোনো উত্তর না দিয়ে গতকাল (৩ সেপ্টেম্বর) কলেজে এসে কক্ষে প্রবেশ করে জানতে চান, কেন এবং কোন সাহসে তাকে নোটিশ দেওয়া হয়েছে? কার এত ক্ষমতা? তিনি দেখে নেবেন বলে হুমকি দেন। এই বলে হাজিরা খাতায় জোর করে অনুপস্থিতির দিনগুলোর স্বাক্ষর দিতে যান। স্বাক্ষর দিতে মানা করলে তিনি এগিয়ে আসেন এবং অন্যান্য শিক্ষকদের সামনেই নিজের প্যান্ট খুলে অশ্লীলভাবে অঙ্গ প্রদর্শন করেন। এতে আমরা সবাই বিব্রত হই।’

‘এ ঘটনা শোনার পর শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে উপস্থিত শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা প্রতিবাদে ফেটে পড়েন। সোমবারও (৪ সেপ্টেম্বর) মানববন্ধন হয়েছে। মানবন্ধনে সবাই ওই শিক্ষকের বিচার দাবি করেছেন। আমি লিখিতভাবে বিচার চেয়েছি। সংশ্লিষ্ট সব দফতরে অভিযোগ জানানো হয়েছে’ বলেন অধ্যক্ষ শওয়ার আলম।

অধ্যক্ষ আরও বলেন, ‘জাহাঙ্গীর আলম শাহীন ফেনসিডিল খোর। সবসময় নেশার ওপর থাকেন। নানা সময় ছাত্রী হেনস্থারও অভিযোগ পেয়েছি। ২০২১ সালে বিজিবির হাতে ফেনসিডিলসহ ধরাও পড়েছিলেন। সেই মামলার চার্জশিটও হয়েছে। তিনি সাংবাদিকতার ভয় দেখান সবখানে। অথচ যেসব কাগজে তিনি কাজ করতেন সবগুলো থেকে তার কর্মের জন্য চাকরিচ্যুত করা হয়েছে।’

বিদ্যালয়ের একজন সহকারী শিক্ষক নাম প্রকাশ না করার শর্তে সারাবাংলাকে বলেন, ‘শাহীন শিক্ষক নামের কলঙ্ক। কোনো শিক্ষকের সঙ্গে তার মেলামেশা নেই। ক্লাস ফাঁকির বিষয়টি নতুন নয়। এর আগেও বিদ্যালয়ে তিনি বিভিন্ন সময় উপস্থিত থাকেননি। অফিসিয়ালি তাকে বললে তিনি সবার সঙ্গে খারাপ আচরণ করতেন। আর অধ্যক্ষের সঙ্গে যে অশ্লীল আচরণ করেছেন, সেটির বিচার না হলে বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী অভিভাবকের মধ্যে বিরূপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হতে পারে।’

নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক ছাত্রী বলেন, ‘ওই শিক্ষকের বিচার চাই। তিনি যা করেন তা সবাই জেনে গেছে। অনেক বড় আপুদের তিনি বিভিন্ন সময় কুপ্রস্তাব দিতেন। তার বিচার দাবি করছি।’

বিদ্যালয় ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি মোসাদ্দেক হোসেন চৌধুরী বলেন, ‘শাহীনের বিরুদ্ধে দীর্ঘদিন ধরে অনিয়মের অভিযোগ আসছে। তাকে অনেক সময় শোধরানোর জন্য বলা হয়েছে। কিন্তু তার পাগলামি আর মাতলামি চরমমাত্রায় অতিক্রম করেছে। এখন সংশ্লিষ্ট সব দফতরে অভিযোগ জমা হয়েছে। শিক্ষক শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা আন্দোলন করছে মানববন্ধন করছে। যা হবে এখন আইনিভাবেই ফায়সালা হবে।’

অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে জাহাঙ্গীর আলম শাহীন মোবাইল ফোনে সারাবাংলাকে বলেন, ‘আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছে। আমি অসুস্থ থাকায় মৌখিকভাবে ছুটি নিয়েছিলাম। এরপরও আমাকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছে। আমি লিখিত উত্তর দেইনি। গত ৩ সেপ্টেম্বর বিদ্যালয়ে গিয়ে হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর করতে গেলে অধ্যক্ষ আমাকে নোটিশের উত্তরের কথা জিজ্ঞেস করলে আমি রেগে গিয়ে খারাপ আচরণ করেছি। এটি ভুল হয়েছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘সবকিছুর পেছনে একটি বড় শক্তি কাজ করছে। তারা আমাকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে বিতাড়িত করা যায়।’

সারাবাংলা/ইউজে/একে

অধ্যাপক টপ নিউজ বিচার দাবি লালমনিরহাট শিক্ষক


বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ
সম্পর্কিত খবর