Friday 22 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

হারুন কাণ্ডে ছাত্রলীগের পাশে ছাত্রদল

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট
১০ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ২১:৪০

ঢাকা: বাংলাদেশ ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় দুই নেতাকে শাহবাগ থানায় নিয়ে মারধরে আহত করার ঘটনায় পুলিশের অতিরিক্ত উপকমিশনার (বর্তমানে এপিবিএনের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার) হারুন-অর-রশিদের উপযুক্ত সাজা চেয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) ছাত্রলীগের নেতারা। দোষী ব্যক্তির বিচার নিশ্চিত করতে প্রয়োজনে রাজপথে নেমে কঠোর আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তারা। ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক গণমাধ্যমে জানিয়েছেন, দোষী ব্যক্তিদের সাজা নিশ্চিত করতে কর্তৃপক্ষের আন্তরিকতার ঘাটতি দেখলে ছাত্রলীগ কর্মসূচি দেবে।

বিজ্ঞাপন

এদিকে এডিসি হারুনের কর্মকাণ্ডের নিন্দা জানিয়েছে ছাত্রদলও। ছাত্রলীগের পাশাপাশি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদল শাখাও বিবৃতি দিয়ে তার শাস্তি করেছে। তবে এ ঘটনায় ছাত্রলীগের ‘নীরব’ ভূমিকায় হতাশাও প্রকাশ করেছে সংগঠনটি।

শনিবার (৯ সেপ্টেম্বর) রাতে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ও ফজলুল হক হলের সভাপতি আনোয়ার হোসে নাঈম এবং কেন্দ্রীয় বিজ্ঞানবিষয়ক সম্পাদক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদুল্লাহ হলের সাধারণ সম্পাদক শরীফ আহমেদকে থানায় নিয়ে বেধড়ক মারধরের অভিযোগ ওঠে এডিসি হারুনের বিরুদ্ধে। এ ঘটনাতেই ছাত্রলীগ-ছাত্রদল উভয় সংগঠনই হারুন-অর-রশিদের বিচারের দাবি জানিয়েছে।

ছাত্রলীগের প্রতিবাদ, আন্দোলনের হুঁশিয়ারি

রোববার (১০ সেপ্টেম্বর) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হল শাখা ছাত্রলীগ এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে। হল শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি মো. মেহেদী হাসান শান্ত ও সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুর রহমানের সই করা এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আন্দোলনের হুঁশিয়ারিও দেওয়া হয়েছে।

সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ছাত্রলীগের দুই নেতাকে শনিবার রাতে পুলিশের রমনা বিভাগের এডিসি হারুন-অর-রশিদের নেতৃত্বে শাহবাগ থানায় তুলে নিয়ে অমানবিক ও নিষ্ঠুরভাবে নির্যাতন করা হয়েছে। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হল শাখা ছাত্রলীগ পুলিশের এই পৈশাচিক কর্মকাণ্ডের তীব্র নিন্দা জানায়।

সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, বাংলাদেশ পুলিশের মতো মহান পেশাকে বঙ্গবন্ধু হল শাখা ছাত্রলীগ সবসময় সম্মান করে। তবে যারা এই মহান পেশাকে কলুষিত করতে চায়, তারা দেশের শত্রু। একইসঙ্গে দ্রুত সময়ের মধ্যে এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত সবার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নেওয়া হলে রাজপথে নেমে এ ঘটনার সুষ্ঠু বিচার নিশ্চিত করতে কঠোর আন্দোলন গড়ে তোলা হবে।

বিজ্ঞাপন

একই দাবি জানিয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফজলুল হক হল শাখা ছাত্রলীগও। হল শাখা ছাত্রলীগের দফতর সম্পাদক সাব্বির রহমান শুভর সই করা এক বিবৃতিতে বলা হয়, এ নিন্দনীয় ঘটনায় জড়িত সবার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি কামনা করছি এবং একইসঙ্গে আমাদের অভিভাবক শেখ হাসিনার দৃষ্টি আকর্ষণ করে বিচারের দাবি করছি।

এ ছাড়া মুক্তিযোদ্ধা জিয়াউর রহমান হল শাখা ছাত্রলীগও বিবৃতিতে নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে। হল শাখার সভাপতি মো. আযহারুল ইসলাম মামুন ও সাধারণ সম্পাদক হাসিবুল হোসেন শান্তর সই করা বিবৃতিতে এডিসি হারুনের বিচারের দাবিতে প্রয়োজনে রাজপথে কঠোর আন্দোলন গড়ে তোলার হুঁশিয়ারিও দেওয়া হয়েছে।

প্রয়োজনে কর্মসূচি দেবে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ

পুলিশের হাতে ছাত্রলীগের দুই নেতার বেড়ধক মারধরের শিকার হওয়ার ঘটনায় সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালী আসিফ ইনান বলেছেন, এ ঘটনায় যথাযথ কর্তৃপক্ষের আশু পদক্ষেপ নিতে আন্তরিকতার ঘাটতি দেখা গেলে আমরা কর্মসূচি দিতে পারি। আমরা যদি দেখি আইনি প্রক্রিয়ায় সঠিকভাবে তার বিচার হচ্ছে বা কাজ হচ্ছে, তাহলে আমাদের কিছু করা ঠিক নয়।

রোববার সন্ধ্যায় গণমাধ্যমে শেখ ইনান এ সব কথা বলেন। এ ঘটনায় মামলা করবেন কি না— জানতে চাইলে শেখ ইনান বলেন, ‘আইনি বিষয়ে কতটুকু কী করা যায়, আমরা খতিয়ে দেখছি।’

ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘বিষয়টি খুবই দুঃখজনক, লজ্জাজনক। বাংলাদেশ পুলিশ শিক্ষার্থীবান্ধব, সন্ত্রাস নৈরাজ্যের বিরুদ্ধে শিক্ষার্থীদের পক্ষে কাজ করে। সেক্ষেত্রে পুলিশের এমন বিচ্ছিন্ন কর্মকর্তার কাজ পুরো বাহিনীর জন্য লজ্জাজনক। এ বিষয়ে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিতের অনুরোধ জানাই।’

ইনান বলেন, ‘আমরা স্বরাষ্টমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছি। উনি আমাদের কাছ থেকে ঘটনার বিবরণ শুনে তাৎক্ষণিক এডিসি হারুনকে স্ট্যান্ড রিলিজ দিয়েছেন। পুলিশকে বিভাগীয় তদন্তের জন্য নির্দেশ দিয়েছেন। পুলিশ কমিশনার জানিয়েছেন, তারা বিভাগীয় তদন্ত শুরু করেছেন। অর্থাৎ বাংলাদেশ পুলিশও এ বিষয়ে বদ্ধপরিকর। তারা অপরাধকে প্রশ্রয় দিতে ইচ্ছুক নয়।’

যদিও পরে সন্ধ্যায় এডিসি হারুনকে নতুন করে পদায়ন করা হয়েছে। ডিএমপি থেকে দুপুরর দিকে হারুন-অর-রশিদকে রমনা জোন থেকে প্রত্যাহার করে সংযুক্ত করা হয়েছিল পুলিশের পাবলিক অর্ডার ম্যানেজমেন্ট বিভাগে। পরে সন্ধ্যায় পুলিশ সদর দফতর থেকে এক প্রজ্ঞাপনে তাকে আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের (এপিবিএন) অতিরিক্ত পুলিশ সুপার হিসেবে পদায়ন করা হয়েছে।

বিবৃতি দিয়েছে ছাত্রদলও

ছাত্রলীগের দুই নেতাকে বেড়ধক পেটানোর ঘটনায় উদ্বেগ জানিয়ে বিবৃতিতে দিয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদল। রোববার ঢাবি ছাত্রদলের দপ্তর সম্পাদক মো. মাহমুদুল হাসানের পাঠানো এক বিবৃতিতে বলা হয়, ছাত্রলীগের মতো একটি পুরনো ছাত্রসংগঠনের এমন অমর্যাদাকর অবস্থানের কারণে ছাত্রদল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি খোরশেদ আলম সোহেল ও সাধারণ সম্পাদক আরিফুল ইসলাম নিন্দা ও হতাশা প্রকাশ করেছেন। দুই ছাত্রলীগ নেতাকে নির্যাতনসহ অতীতের সব পুলিশি নির্যাতনের দায়ে এডিসি হারুনকে বিচারের আওতায় আনার দাবিও জানিয়েছেন তারা।

এ ঘটনায় অবশ্য ছাত্রলীগেরও কঠোর সমালোচনা করেছেন ছাত্রদলের শীর্ষ দুই নেতা।বিবৃতিতে বলা হয়, আজ তাদের দুজন কেন্দ্রীয় নেতা পাশবিক নির্যাতনের শিকার হওয়ার পরও ছাত্রলীগের কেউ কোনো প্রতিবাদ জানাতে সক্ষম হয়নি। এতেই বোঝা যায়, ছাত্রলীগ এখন নীতি-আদর্শহীন একটি দেউলিয়া সংগঠনে পরিণত হয়েছে। একজন পুলিশ কর্মকর্তার ভয়ে সমগ্র বাংলাদেশের ছাত্রলীগ তটস্থ। ওই পুলিশ কর্মকর্তা যাবজ্জীবন কারাদণ্ডযোগ্য অপরাধ করার পরও আইনি কোনো ব্যবস্থা নেওয়ার ন্যূনতম সাহস ছাত্রলীগ নেতারা দেখাতে পারেননি। তারাও জানেন, পুলিশের সঙ্গে মিলেমিশে পুলিশি রাষ্ট্রে তারা যে মাৎস্যন্যায় প্রতিষ্ঠা করেছে, তাতে তাদেরও বিচার পাওয়ার কোনো সুযোগ অবশিষ্ট নেই।

এতে আরও বলা হয়, গত ১৫ বছর ধরে পুলিশের সহযোগিতায় ছাত্রলীগ সারাদেশের ক্যাম্পসগুলোয় ত্রাসের রাজত্ব কয়েম করেছে। তারা ছাত্রদলসহ সব বিরোধী ছাত্রসংগঠন এবং সাধারণ ছাত্রদের নির্মমভাবে নির্যাতন করেছে। নির্যাতিত, মুমূর্ষু ছাত্রদের পুলিশের হাতে তুলে দিয়েছে। পুলিশ তাদের গায়েবি মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে রিমান্ডে এনে আবার নির্যাতন করেছে। বিরোধী ছাত্রসংগঠনের নেতাকর্মীদের ওপর অমানবিক পুলিশি নির্যাতনের ঘটনায় বুনো উল্লাস করেছেন ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। পুলিশ বাহিনী যখন ভোটডাকাতির দায়িত্ব নিয়েছে, তখন রাজনীতি ছেড়ে ছাত্রলীগ নেতারা টেন্ডারবাণিজ্য প্রশ্নফাঁস এবং চাঁদাবাজিতে ব্যস্ত হয়েছে। ছাত্রলীগের সমালোচনা করলেও বিবৃতিতে এডিসি হারুনকে বিচারের আওতায় আনার জোর দাবি জানিয়েছে ছাত্রদল।

সামাজিক মাধ্যমে সরব ছাত্রলীগের বর্তমান ও সাবেকরা

এদিকে থানায় নিয়ে ছাত্রলীগের দুই কেন্দ্রীয় নেতাকে পেটানোর ঘটনায় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রতিবাদ জানিয়েছেন ছাত্রলীগের সাবেক ও বর্তমান নেতারা। তারা এডিসি হারুনের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেছেন।

ছাত্রলীগের সহসভাপতি আল আমিন রহমান লিখেছেন, বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক বন্ধু আনোয়ার হোসেন নাঈমের পাশে আছি আমরা। সবাই তার সুস্থতার জন্য দোয়া করবেন। সাইকোপ্যাথ ছাড়া কেউ এমন ঘটনা ঘটাতে পারে না।

ছাত্রলীগের উপদপ্তর সম্পাদক মনির হোসেন লিখেছেন, ‌এডিসি হারুন একজন সন্ত্রাসী। বারবার অপরাধ করে পার পেয়ে যাওয়ায় সাহস বেড়ে গেছে। ঢাকা কলেজের অনেকগুলো ছাত্রের জীবন নষ্ট করেছে। তার বিচার না হলে থামব না।

আহত নাঈমের ছবি শেয়ার করে ছাত্রলীগের সাবেক সহসভাপতি ইয়াজ আল রিয়াদ লিখেছেন, আমার ছাত্রলীগের ছোট ভাই। কেন এমন হলো, কী জন্য এমন হলো জানতে চাই। এটা কি মেনে নেওয়ার মতো ঘটনা!

ছাত্রলীগের সাবেক দফতর সম্পাদক ইন্দ্রনীল দেব শর্মা রনি লিখেছেন, আনোয়ার হোসেন নাঈম ও শরীফ আহমেদ মুনিমের ওপর যে বর্বরতা চালানো হয়েছে, তার কঠোর বিচার দ্রুত নিশ্চিত হোক।

প্রধানমন্ত্রীর সাবেক প্রেস সেক্রেটারি আশরাফুল আলম খোকন লিখেছেন, ‘আমাদের গাজীপুরের যে কয়টা ছেলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করে, এর মধ্যে আনোয়ার হোসেন নাইমকে আমরা বলি সবচেয়ে ভদ্র, মার্জিত ও মিষ্টি হাসির একটা ছেলে। সে কারও সাথে বেয়াদবি করেছে কিংবা উচ্চস্বরে কথা বলেছে, এমন কথাও কেউ বলতে পারবে না।

‘নাইম ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক এবং ফজলুল হক হল ছাত্রলীগের সভাপতি। একজন পুলিশ অফিসারের অনৈতিক কর্মকাণ্ডের প্রতিবাদ করায় তার ওপর যে অমানুষিক নির্যাতন করা হয়েছে, তা ভাষায় বর্ণনা করা যাবে না। প্রতিবাদ করারও ভাষা হারিয়ে ফেলেছি। পুলিশের ইমেজ নষ্ট করার জন্যই এই রকম একজন কর্মকর্তাই যথেষ্ট। নাঈমের জন্য শুভ কামনা…,’— লিখেছেন আশরাফুল আলম খোকন।

সাবেক ছাত্রলীগ নেত্রী তিলোত্তমা শিকদার লিখেছেন, ‘ক্ষমতার চূড়ান্ত অপব্যবহার। সব নিয়ে নীতি কী শুধু ছাত্রলীগের জন্য..? আমার ভাই নাইম-মুনিমের পাশে আছি।’

ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক হাসিবুল হোসেন শান্ত লিখেছেন, ‘এডিসি হারুন একটা সন্ত্রাসী। ঢাকা কলেজের ছাত্রদের ওপর গুলি চালানো, কনস্টেবলকে থাপ্পড় মারা, সুপ্রিম কোর্টে সাংবাদিক পেটানো আর আজ কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের দুই নেতার ওপর বর্বর অত্যাচার যা মধ্যযুগীয় বর্বরতাকেও হার মানিয়েছে। হারুনের অব্যাহতি চাই।’

হারুনকে প্রথমে প্রত্যাহার, পরে বদলি

বাংলাদেশ ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় দুই নেতাকে শাহবাগ থানায় নিয়ে পেটানোর অভিযোগ ছিল এডিসি হারুনের বিরুদ্ধে। এ অভিযোগ নিয়ে বিভাগীয় তদন্তের কথা জানিয়েছিলেন ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) কমিশনার খন্দকার গোলাম ফারুক। পরে রোববার দুপুরের দিকে ডিএমপি কমিশনারের সই করা এক আদেশে তাকে রমনা জোন থেকে প্রত্যাহার করে পুলিশের পাবলিক অর্ডার ম্যানেজমেন্ট বিভাগে সংযুক্ত করা হয়।

প্রত্যাহারের আদেশ অবশ্য বেশিক্ষণ স্থায়ী হয়নি। রোববার সন্ধ্যায় পুলিশ সদর দফতর থেকে নতুন এক আদেশে তাকে এপিবিএনের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার হিসেবে পদায়ন করা হয়েছে।

প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, ১২ সেপ্টেম্বরের মধ্যে বর্তমান কর্মস্থলের দায়িত্বভার অর্পণ করতে হবে হারুন-অর-রশিদকে। তা না করলে ১৩ সেপ্টেম্বর তিনি তাৎক্ষণিকভাবে অবমুক্ত (স্ট্যান্ড রিলিজ) হিসেবে বিবেচিত হবেন।

হারুনের বিরুদ্ধে যে অভিযোগ

রাজধানীর শাহবাগ থানায় শনিবার (৯ সেপ্টেম্বর) রাতে ছাত্রলীগের দুই কেন্দ্রীয় নেতাকে এডিসি হারুন ও কয়েকজন পুলিশ সদস্য পিটিয়ে আহত করেছে বলে অভিযোগ ওঠে। আহতরা হলেন ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ও ফজলুল হক হলের সভাপতি আনোয়ার হোসে নাঈম এবং ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় বিজ্ঞান বিষয়ক সম্পাদক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদুল্লাহ হলের সাধারণ সম্পাদক শরীফ আহমেদ।

পরে এই দুজনকে গুরুতর আহত অবস্থায় থানা থেকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নেওয়া হয়। আহতদের একজন এরই মধ্যে চিকিৎসা নিয়ে হলে ফিরেছেন। আরেকজন এখনো হাসপাতালে ভর্তি আছেন বলে জানা গেছে।

ঘটনার বর্ণনা দিয়ে ছাত্রলীগের নেতারা জানান, এডিসি হারুন শাহবাগে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালের সামনে এক নারীর সঙ্গে আড্ডা দিচ্ছিলেন। এ সময় ওই নারীর স্বামী ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের নিয়ে সেখানে হাজির হন। এ সময় উভয়পক্ষের মধ্যে বাগ্‌বিতণ্ডা হয়। পরে এডিসি হারুন সেখান থেকে চলে যান। কিছুক্ষণ পর এডিসি হারুন পুলিশ পাঠিয়ে ছাত্রলীগের দুই নেতাকে শাহবাগ থানায় নিয়ে যান। সেখানে এডিসি হারুনের উপস্থিতিতে ছাত্রলীগের দুই নেতাকে মারধর করা হয়।

এর আগেও একাধিকবার খবরের শিরোনাম হয়েছেন এডিসি হারুন। আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের ওপর চড়াও হওয়া, আন্দোলনকারী শিক্ষকদের পিটুনি, কখনও নিজ সহকর্মীকে থাপ্পড় মেরেও সমালোচিত এডিসি হারুন। সর্বশেষ তালিকায় যোগ হলো ছাত্রলীগের দুই কেন্দ্রীয় নেতাকে পিটুনির ঘটনা।

‘হারুনকে শাস্তি পেতে হবে’

বাংলাদেশ ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় দুই নেতাকে শাহবাগ থানায় পিটিয়ে আহতের ঘটনায় অভিযুক্ত হারুন-অর-রশিদ শাস্তি পাবেন বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। রোববার আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিস ঢাকা পূর্ব (আফতাবনগর) ও ঢাকা পশ্চিম (মোহাম্মদপুর) এবং পাসপোর্ট বাতায়নের (কল সেন্টার) উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের পর সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘এটি যে করেছে, সে পুলিশের হোক বা যেই হোক না কেন, অন্যায় করলে শাস্তি পেতে হবে। কেন করেছে, কী করেছে, আমরা জিজ্ঞাসা করব। তার ভুল কর্মকাণ্ডের জন্য তাকে জবাবদিহি করতে হবে।’

এডিসি হারুনের বিরুদ্ধে এর আগেও মারধরের অভিযোগ ছিল— এ বিষয়ে জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, ‘গতকালের ঘটনাটি প্রথম উল্লেখযোগ্যভাবে এসেছে, আমরা একটু দেখে নিই। আমরা এটা নিয়ে কাজ করছি। সে যতখানি অন্যায় করেছে ততখানি শাস্তি সে পাবে।’

আরও পড়ুন-

সারাবাংলা/একে

এডিসি হারুন ছাত্রলীগ ছাত্রলীগ নেতাকে মারধর পিটুনি শাহবাগ থানা

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর