উপকূলে আঘাত হানতে শুরু করেছে হামুন
২৪ অক্টোবর ২০২৩ ১৯:২৯
ঢাকা: অতি প্রবল থেকে কিছুটা দুর্বল হয়ে প্রবল ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নেওয়া হামুনের অগ্রভাগ এরই মধ্যে উপকূলে আঘাত হেনেছে। এর প্রভাবে ভারী বৃষ্টিপাত ও প্রবল ঝড় শুরু হয়েছে কক্সবাজারে। আবহাওয়া অধিদফতরের সর্বশেষ তথ্য বলছে, মধ্যরাতের মধ্যেই ঘূর্ণিঝড়টি সম্পূর্ণভাবে উপকূল অতিক্রম করে যেতে পারে।
মঙ্গলবার (২৪ অক্টোবর) সন্ধ্যা ৬টার পর হামুনের অগ্রভাগ আঘাত করে বরিশাল-চট্টগ্রাম উপকূলে। এরই মধ্যে এর প্রভাবে চট্টগ্রাম ও কক্সবাজারসহ উপকূলীয় জেলাগুলোতে টানা বৃষ্টিপাত শুরু হয়েছে। সঙ্গে শুরু হয়েছে ঝড়ো হাওয়া। হামুনের কেন্দ্র উপকূলের দিকে এগিয়ে যেতে যেতে ঝড়ের বেগও বাড়তে থাকবে।
আবহাওয় অধিদফতরের আবহাওয়াবিদ মনোয়ার হোসেন সারাবাংলাকে বলেন, হামুন অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড় থেকে দুর্বল হয়ে এখন প্রবল ঘূর্ণিঝড় রূপ নিয়েছে। সন্ধ্যা ৬টার পরই এর অগ্রভাগের প্রভাব শুরু হয়ে গেছে। বিশেষ করে কক্সবাজার এলাকায় হামুনের প্রভাবে টানা বৃষ্টিপাত শুরু হয়েছে, ঝড়ো বাতাসও শুরু হয়েছে। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে বৃষ্টি ও বাতাসের বেগ কিছুটা বাড়বে।
আরও পড়ুন- ভোলার সব রুটে নৌ চলাচল বন্ধ, ঝুঁকিতে ৪ অঞ্চলের লক্ষাধিক মানুষ
আবহাওয়া অধিদফতরের আগের বিশেষ বিজ্ঞপ্তিগুলোতে প্রথমে জানানো হয়েছিল, হামুন বুধবার সকাল থেকে দুপুরের মধ্যে আঘাত হানতে পারে উপকূলে। পরের পূর্বাভাসে বলা হয়, বুধবার ভোর থেকে সকালের মধ্যেই হামুন আঘাত হানতে পারে। শেষ পর্যন্ত মঙ্গলবার সন্ধ্যার পরই হামুন আঘাত হেনেছে উপকূলে। মধ্যরাত নাগাদ হয়তো এটি বাংলাদেশের উপকূল পুরোপুরি অতিক্রম করে যেতে পারে।
মনোয়ার হোসেন বলেন, হামুনের কেন্দ্র এখন ধীরে ধীরে উপকূলের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। ঘূর্ণিঘড়ের কেন্দ্রের ৬৪ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ১০০ কিলোমিটার পর্যন্ত রয়েছে। একটি ঘূর্ণিঝড় অনেক বড় একটি সিস্টেম। এটি উপকূল অতিক্রম পেরিয়ে যেতে সময় লাগবে। মধ্যরাত নাগাদ হয়তো এটি পুরোপুরি উপকূল অতিক্রম করে যাবে।
সারাবাংলার কক্সবাজার ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট জানিয়েছেন, হামুনের প্রভাবে মঙ্গলবার সকাল থেকেই থেমে থেমে বৃষ্টি হয়েছে। সন্ধ্যা ৬টার পর বৃষ্টির বেগ বাড়তে থাকে। ৭টা নাগাদ টানা ভারী বৃষ্টিপাত শুরু হয়। এ সময় শুরু হয়েছে ঝড়ো হাওয়া, যা সময়ের সঙ্গে সঙ্গে বাড়ছে।
আরও পড়ুন- এগিয়ে এসেছে হামুন, মেঘনার মোহনা দিয়ে অতিক্রম বুধবার ভোরে
আবহাওয়াবিদ বজলুর রশিদ এর আগে সারাবাংলাকে জানিয়েছিলেন, ঘূর্ণিঝড় হামুনের ডান পাশে রয়েছে চট্টগ্রাম অঞ্চল এবং বাম পাশে রয়েছে বরিশাল অঞ্চল। এ কারণে ঘূণিঝড়টি বরিশাল-চট্টগ্রাম উপকূল দিয়ে অতিক্রম করলেও প্রভাবটা বেশি পাওয়া যাবে চট্টগ্রাম অঞ্চলে। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে হামুন আরও উত্তরপূর্ব দিকে অগ্রসর হওয়ায় কক্সবাজার উপকূলে এর প্রভাব শুরু হয়েছে সবার আগে।
এর আগে আবহাওয়া অধিদফতরের ১২তম বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে সন্ধ্যা ৬টা থেকে রাত ৯টার মধ্যে হামুনের মূল অংশ উপকূল অতিক্রম শুরু করতে পারে বলে জানানো হয়। বিজ্ঞপ্তিতে চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দরকে আগের মতোই ৭ নম্বর বিপদ সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়। কক্সবাজার সমুদ্রবন্দরকেও ৬ নম্বর বিপদ সংকেতের বদলে ৭ নম্বর বিপদ সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়। এ ছাড়া মোংলা সমুদ্রবন্দরকে আগের মতো ৫ নম্বর এবং পায়রা সমুদ্রবন্দরকে ৭ নম্বর বিপদ সংকেত নামিয়ে ৫ নম্বর বিপদ সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে।
আরও পড়ুন-
- ঘূর্ণিঝড় ‘হামুন’এ পরিণত হয়েছে নিম্নচাপটি
- হাতিয়ার সঙ্গে সারা দেশের নৌ-যোগাযোগ বন্ধ
- ঘূর্ণিঝড় হামুন: খুলনায় প্রস্তুত ৬০৪ আশ্রয়কেন্দ্র
- নিম্নচাপের প্রভাবে বাগেরহাটে ৫ নম্বর বিপদ সংকেত
- ঘূর্ণিঝড় হামুন: চট্টগ্রাম বন্দরে বহির্নোঙরে পণ্য খালাস বন্ধ
- ঘূর্ণিঝড় হামুন মোকাবিলায় ভোলায় প্রস্তুত ৭৪৩ আশ্রয়কেন্দ্র
- ৩১০ কিমি দূরে হামুন, চট্টগ্রাম-পায়রায় ৭ নম্বর বিপদ সংকেত
- হামুন: ১৫ জেলায় জলোচ্ছ্বাস, ৫ বিভাগে অতি ভারী বর্ষণের শঙ্কা
- ১০ জেলার মানুষকে রাত ৮টার মধ্যে আশ্রয়কেন্দ্রে নেওয়ার নির্দেশ
- বুধবার দুপুরের মধ্যে চট্টগ্রাম-বরিশাল উপকূল অতিক্রম করবে হামুন
সারাবাংলা/টিআর
উপকূলে আঘাত ঘূর্ণিঝড় হামুন প্রবল ঘূর্ণিঝড় হামুনের আঘাত হামুনের প্রভাব