কক্সবাজারজুড়ে হামুনের আঘাতের ক্ষত
২৭ অক্টোবর ২০২৩ ০৯:০৯
কক্সবাজার: চলে গেছে ঘূর্ণিঝড় হামুন, তবে রেখে গেছে ক্ষত। বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট প্রবল এ ঘূর্ণিঝড়ের আঘাত সবচেয়ে বেশি ক্ষতি করে গেছে কক্সবাজারের। মঙ্গলবার (২৪ অক্টোবর) রাতে হামুনের কয়েক ঘণ্টার তাণ্ডবে হাজার হাজার ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
ঝোড়ো হাওয়ায় উপড়ে পড়ে হাজার হাজার গাছপালা। কক্সবাজার শহরের পাহাড়তলীতে মাটির দেওয়াল চাপায় একজন, মহেশখালী উপজেলায় আরও একজন গাছ চাপায় নিহত হন। আহত হন বেশ কয়েকজন। খুঁটি উপড়ে এবং তার ছিঁড়ে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় বিদ্যুৎ সংযোগ।
মোবাইল নেটওয়ার্ক বিচ্ছিন্ন হওয়ায় ব্যাহত হচ্ছে যোগাযোগ। সব মিলিয়ে চরম ভোগান্তিতে রয়েছেন মানুষ। তবে স্বস্তির খবর হচ্ছে বৃহস্পতিবার (২৬ অক্টোবর) রাতে বেশিরভাগ এলাকায় বিদ্যুৎ এসেছে। বিশুদ্ধ খাবার পানির জন্য যে হাহাকার ছিল সেই অবস্থা অনেকটাই স্বাভাবিক হয়েছে।
ঘূর্ণিঝড় হামুনের আঘাতে পাঁচ হাজার ১০৫টি বসত ঘর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং ৩২ হাজার ৭৪৯টি বসত ঘর আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এছাড়া ঘূর্ণিঝড়ে চার লাখ ৭৬ হাজার ৫৪৯ জন মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। ঝড়ের আঘাতে উপড়ে গেছে অসংখ্য গাছপালা।
ঝড় ও গাছপালার আঘাতে বিদ্যুতের ৩৫৪টি খুঁটি ভেঙে গেছে, ২৩টি ট্রান্সফর্মার বিকল হয়ে গেছে। এছাড়াও ৪৯৬টি স্থানে বিদ্যুতের তার ছিঁড়ে গেছে এবং ৮০০টি স্থানে বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়।
বৃহস্পতিবার দুপুরে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শনে আসেন ত্রাণ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা প্রতিমন্ত্রী ডা. এনামুর রহমান। এসময় মন্ত্রী বলেন, প্রাথমিকভাবে ক্ষয়ক্ষতির যে আশংকা করা হয়েছিল বাস্তবে তার পরিমাণ আরও বেশি। মানুষের দুর্ভোগ লাঘবে সরকার সবধরণের সহায়তা নিয়ে মানুষের পাশে থাকবে।
কক্সবাজার বিদ্যুৎ সরবরাহ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আব্দুল কাদের গণি জানান, কক্সবাজার শহরসহ দুর্যোগ কবলিত কিছু এলাকায় বিদ্যুৎ সংযোগ ও মোবাইল নেটওয়ার্ক চালুর জন্য সংস্কার কাজ সম্পন্ন হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত অন্য এলাকায়ও সরবরাহ দ্রুত স্বাভাবিক করতে বিদ্যুৎ বিভাগ কাজ করছে।
প্রশাসনের সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের দুর্ভোগ লাঘবে প্রশাসন ইতিমধ্যে ত্রাণ বিতরণ কার্যক্রম শুরু করেছে। তাদের জন্য বরাদ্ধ দেওয়া হয়েছে নগদ অর্থ, জিআর চাল ও ঢেউটিন। বুধবার (২৩ অক্টোবর) কক্সবাজার পৌরসভায় দেড়শ পরিবারের মধ্যে এক বান করে ঢেউটিন এবং নগদ এক হাজার টাকা সহায়তা দেওয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন:
- কক্সবাজারে হামুনের তাণ্ডব, বেরিয়ে যাচ্ছে কুতুবদিয়া-সাতকানিয়া হয়ে
- উপকূলে আঘাত হানতে শুরু করেছে হামুন
- মোখার চেয়েও সজোরে আঘাত হামুনের, যাচ্ছে কুতুবদিয়ার দিকে
- হামুন: ১৫ জেলায় জলোচ্ছ্বাস, ৫ বিভাগে অতি ভারী বর্ষণের শঙ্কা
- ভোলার সব রুটে নৌ চলাচল বন্ধ, ঝুঁকিতে ৪ অঞ্চলের লক্ষাধিক মানুষ
- এগিয়ে এসেছে হামুন, মেঘনার মোহনা দিয়ে অতিক্রম বুধবার ভোরে
- উপকূলে আঘাত হানতে শুরু করেছে হামুন
- ঘূর্ণিঝড় ‘হামুন’এ পরিণত হয়েছে নিম্নচাপটি
- হাতিয়ার সঙ্গে সারা দেশের নৌ-যোগাযোগ বন্ধ
- ঘূর্ণিঝড় হামুন: খুলনায় প্রস্তুত ৬০৪ আশ্রয়কেন্দ্র
- নিম্নচাপের প্রভাবে বাগেরহাটে ৫ নম্বর বিপদ সংকেত
- ঘূর্ণিঝড় হামুন: চট্টগ্রাম বন্দরে বহির্নোঙরে পণ্য খালাস বন্ধ
- ঘূর্ণিঝড় হামুন মোকাবিলায় ভোলায় প্রস্তুত ৭৪৩ আশ্রয়কেন্দ্র
- ৩১০ কিমি দূরে হামুন, চট্টগ্রাম-পায়রায় ৭ নম্বর বিপদ সংকেত
- হামুন: ১৫ জেলায় জলোচ্ছ্বাস, ৫ বিভাগে অতি ভারী বর্ষণের শঙ্কা
- ১০ জেলার মানুষকে রাত ৮টার মধ্যে আশ্রয়কেন্দ্রে নেওয়ার নির্দেশ
- বুধবার দুপুরের মধ্যে চট্টগ্রাম-বরিশাল উপকূল অতিক্রম করবে হামুন
- ভোলার সব রুটে নৌ চলাচল বন্ধ, ঝুঁকিতে ৪ অঞ্চলের লক্ষাধিক মানুষ
- হামুনের আঘাতে কক্সবাজারে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি, নিহত ২
সারাবাংলা/এনইউ