Thursday 21 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

‘বাংলাদেশ রূপান্তরের অগ্রযাত্রায় কেউ বাধা দিতে পারবে না’

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট
১০ নভেম্বর ২০২৩ ১৪:৩২

ঢাকা: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, জাতির পিতার স্বপ্ন বাস্তবায়নে আমরা অনেক দূর অগ্রসর হয়েছি। ২০০৯-এ সরকার গঠন করার পর থেকে প্রায় ১৫ বছরের মধ্যে বাংলাদেশকে একটা বদলে যাওয়া বাংলাদেশে রূপান্তর করতে পেরেছি। বাংলাদেশ এগিয়ে যাবে অপ্রতিরোধ্য গতিতে। এই অগ্রযাত্রা আর কেউ বাধা দিতে পারবে না।

শুক্রবার (১০ নভেম্বর) সকালে রাজধানীর বিজয় সরণিতে ‘মৃত্যুঞ্জয়ী প্রাঙ্গণ’ উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। মৃত্যুঞ্জয়ী প্রাঙ্গণে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর শেখ মুজিবুর রহমানের একটি ভাস্কর্য রয়েছে। যার মাধ্যমে ভাষা আন্দোলন থেকে শুরু করে বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামে জাতির পিতার বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অবদান তুলে ধরা হয়েছে।

বিজ্ঞাপন

প্রাচীরের ম্যুরালে খোদাই করে ভাষা আন্দোলন থেকে শুরু করে বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামে বঙ্গবন্ধুর অবদান এবং ভাষা আন্দোলন ও মুক্তি সংগ্রামের বিভিন্ন ঘটনা তুলে ধরা হয়েছে।

উদ্বোধন শেষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পুরো মৃত্যুঞ্জয়ী প্রাঙ্গণ ঘুরে দেখেন। পরে তিনি উপস্থিত স্কুল শিক্ষার্থী এবং সামরিক ও বেসামরিক কর্মকর্তাদের সঙ্গে ফটোসেশনে অংশ নেন।

অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এই বাংলাদেশ একসময় আজকের বাংলাদেশ ছিল না। এমন কি ১৫ বছর আগের বাংলাদেশও এখনকার বাংলাদেশ নয়। ক্ষুধা, দারিদ্র্য, অশিক্ষা, চিকিৎসাহীনতা, গৃহহীন-ভূমিহীন মানুষের ক্রন্দনে বাংলার আকাশ-বাতাস ভারি ছিল। এই বাঙালি জাতিকে আর্থসামাজিক মুক্তি দেওয়ার জন্যই কিন্তু জাতির পিতার আত্ম সংগ্রাম। তিনি তার নিজের জীবনটাকে উৎসর্গ করেছিলেন এদেশের মানুষের জন্য।

বিজ্ঞাপন

ছোট বেলায় শিশুদের বাবা-মায়ের হাত ধরে স্কুলে যাওয়ার প্রসঙ্গ তুলে তিনি বলেন, আমাদের কিন্তু সেই সৌভাগ্য হয়নি। আমাদের তো বাবার সঙ্গে দেখা হত কারাগারে। জেলগেটে মাসে দুবার আমরা যেতে পারতাম। স্কুল থেকে জেল গেটে গিয়েছি কলেজ থেকে গিয়েছি, বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কলেজ গেটে গেছি। এই ছিল আমাদের জীবন। কিন্তু আমাদের কোনো ক্ষোভ ছিল না। কারণ আমরা জানি আমার বাবা সংগ্রাম করছেন দেশের মানুষের ভাগ্য পরিবর্তনের জন্য। তার সেই স্বপ্ন বাস্তবায়নে আজকে আমরা অনেক দূর অগ্রসর হয়েছি।

১৫ আগস্ট জাতির পিতাকে হত্যার মধ্য দিয়ে তার স্বপ্নকে থমকে দেওয়া হয়েছিল জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, আজকে অন্তত এইটুকু বলতে পারি তার সেই স্বপ্ন বাস্তবায়নে আমরা অনেক দূর অগ্রসর হয়েছি। কারণ ২০০৯ সালে সরকার গঠন করার পর থেকে প্রায় ১৫ বছর হয়ে গেল; এর মধ্যে বাংলাদেশকে একটা বদলে যাওয়া বাংলাদেশে রূপান্তর করতে পেরেছি।

বিজয় সরণিতে স্থাপিত বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য উদ্বোধনকালে প্রধানমন্ত্রী বলেন, জাতির পিতার এই ভাস্কর্য এটা শুধু একটি ভাস্কর্য নয়, এটি ইতিহাস। আমাদের দেশকে জানার ইতিহাস।

টানা মেয়াদে আওয়ামী লীগ সরকারের উন্নয়নের কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সেই সঙ্গে আমাদের প্রত্যয় নিতে হবে আজকের বাংলাদেশ যে উন্নত-সমৃদ্ধ হয়েছে যতদূর; আমরা উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা পেয়েছি। এটা ধরে রেখে বাংলাদেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে। আর আজকের ছোট শিশুরা আগামী দিনের সৈনিক। যারা স্মার্ট বাংলাদেশের নেতৃত্বে দেবে এবং বাংলাদেশ পরিচালনা করবে বলে আশাবাদ করেন। তাই শিশুদের সেইভাবে নিজেদেরকে তৈরি করার আহ্বান জানান।

শিক্ষা অর্জনে শিক্ষার্থীদের মনোযোগী হওয়ার আহ্বান জানিয়ে সরকারপ্রধান বলেন, একটা কথা মনে রাখতে হবে, শিক্ষাই জীবনের সবচেয়ে বড় সম্পদ। টাকা-পয়সা, ধন-দৌলত, কোনো কিছুই সম্পদ না। সম্পদ হচ্ছে একমাত্র শিক্ষা। কারণ এই শিক্ষা চোরে নিতে পারবে না, কেউ ডাকাতিও করতে পারবে না।  শিক্ষাটা থাকলে পরে দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হয়ে এই বাংলাদেশকে উন্নত সমৃদ্ধ করা যাবে।

আজকের শিশুরা আগামী দিনের স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার সৈনিক মন্তব্য করে শেখ হাসিনা বলেন, আমাদের আজকের ছোট শিশুরাই হবে আগামী দিনের স্মার্ট বাংলাদেশের সৈনিক। সেইজন্য তোমাদেরকে নিয়ে এলাম। আমরা স্মার্ট জনগোষ্ঠী, স্মার্ট গর্ভনমেন্ট, স্মার্ট ইকোনমি, স্মার্ট সোসাইটি গড়ে তুলব। সেই লক্ষ্য নিয়ে কাজ করে যাচ্ছি।

‘মৃত্যুঞ্জয়ী প্রাঙ্গণ’ স্থাপনাটি চমৎকারভাবে করা হয়েছে বলে মন্তব্য করেন প্রধানমন্ত্রী। এসময় তিনি শিল্পী-কলাকৌশলীসহ সংশ্লিষ্ট সবার প্রতি আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, বাংলাদেশ এগিয়ে যাবে অপ্রতিরোধ্য গতিতে। বাংলাদেশের এই অগ্রযাত্রা আর কেউ বাধা দিতে পারবে না।

অনুষ্ঠানে ধন্যবাদ জানিয়ে বক্তব্য দেন সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল এস এম শফিউদ্দিন আহমেদ। আরও উপস্থিত ছিলেন মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ.ক.ম. মোজাম্মেল হক, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তা বিষয়ক উপদেষ্টা মেজর জেনারেল (অব.) তারিক আহমেদ সিদ্দিক, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র মো. আতিকুল ইসলামসহ সামরিক-বেসামরিক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা এবং বিভিন্ন শ্রেণির স্কুল শিক্ষার্থী।

সারাবাংলা/এনআর/এনইউ

উদ্বোধন প্রধানমন্ত্রী মৃত্যুঞ্জয়ী প্রাঙ্গণ

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর