বিএনপির তফসিল প্রত্যাখানের জবাবে নির্বাচনে আসার আহ্বান আ.লীগের
১৬ নভেম্বর ২০২৩ ২১:২৫
ঢাকা: কয়েকদিন ধরেই আলোচনায় দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল। ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের অবস্থান ছিল বরাবরের মতোই সংবিধান অনুযায়ী নির্ধারিত সময়ে নির্বাচনের পক্ষে। অন্যদিকে বিএনপি ছিল সরকারের পদত্যাগ এবং নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকারের পক্ষে অনড়।
এমন পরিস্থিতির মধ্যেই ঘোষণা হয়েছে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল। স্বাভাবিকভাবেই সেটি প্রত্যাখ্যান করেছে বিএনপি। অন্যদিকে আওয়ামী লীগ স্বাগত জানিয়েছে তফসিলকে। সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের দলের পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে সব রাজনৈতিক দলকে নির্বাচনে আসার আহ্বান জানিয়েছেন।
বুধবার (১৫ নভেম্বর) সন্ধ্যা ৭টায় সরাসরি জাতির উদ্দেশে ভাষণ দেওয়ার মাধ্যমে জাতীয় নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল।
আরও পড়ুন- ৭ জানুয়ারি ভোট
এরপর রাতেই এক ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির তফসিল প্রত্যাখ্যান করার কথা জানান দলটির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। তিনি বলেন, দেশের জনগণের প্রত্যাশা ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের উপর্যুপরি আহ্বান উপেক্ষা করে নিশি রাতের সরকারের তল্পিবাহক নির্বাচন কমিশন একতরফা নির্বাচনের তামাশার তফসিল ঘোষণা করেছে। শেখ হাসিনার নির্দেশে অতীতের মতোই আরেকটি প্রহসনের নির্বাচনের মাধ্যমে গণতন্ত্র ও জনগণের ভোটাধিকার হরণের জন্য মেরুদণ্ডহীন ও পক্ষপাতদুষ্ট নির্বাচন কমিশন যে তফসিল ঘোষণা করেছে, তা আমরা চরম ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করছি।
রিজভী আরও বলেন, ‘দেশে একটি ভীতিকর, যুদ্ধকালীন পরিস্থিতি তৈরি করে হাসিনা মার্কা একতরফা নির্বাচনের এই তথাকথিত তফসিল রঙ্গ জনগণ মানে না। এই নীল নকশা নির্বাচনে তফসিলে বাংলাদেশের মাটিতে কোনো দিন নির্বাচন হবে না। দেশের সবচেয়ে বড় রাজনৈতিক দল বিএনপির পক্ষ থেকে আমি সরকার ও নির্বাচন কমিশনকে আবারও হুঁশিয়ার করে বলতে চাই, এই অবিমৃষ্যকারিতার পরিপ্রেক্ষিতে দেশে যে ভয়াবহ অচলাবস্থা ও যে চরম রাজনৈতিক অস্থিরতা তৈরি হবে, তার পুরো দায়ভার তাদেরকেই বহন করতে হবে।’
এদিকে সিইসির ঘোষণার পরপরই তফসিলকে স্বাগত জানিয়েছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। রাজধানী ঢাকাসহ সারাদেশেই আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা আনন্দ মিছিল করেছেন। বিভিন্ন এলাকায় মিষ্টি বিতরণ করা হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবারও আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে তফসিল নিয়ে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন ওবায়দুল কাদের। তাতে সব রাজনৈতিক দলকে নির্বাচনে অংশ নেওয়ার আহ্বান জানান তিনি।
রাজধানীর তেজগাঁওয়ে আওয়ামী লীগের ঢাকা জেলা কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে ওবায়দুল কাদের বলেন, এখন আর কিছু নাই। জাতীয় নির্বাচনের নির্ঘণ্ট ঘোষণা হয়ে গেছে। এখন আর কী দিয়ে আন্দোলন?
বিএনপি নেতাদের কারাগারে থাকার প্রসঙ্গ ইঙ্গিত করে ওবায়দুল কাদের বলেন, নেতা নেই, আছে ওই যে আবাসিক প্রতিনিধি (রুহুল কবির রিজভী), তার আবার আবাস নেই। হঠাৎ হঠাৎ গোপন গুহা থেকে বের হন। নেত্রী একদিন বলছিলেন একজন অফিসারকে দরকার নাই। একজন আছে বলুক। একজন আছে বলুক যা খুশি বলুক। বিরোধী কণ্ঠ লাগবে না? তাকে ধরার জোর চেষ্টা সরকারের পক্ষ থেকে করা হয়নি। সেজন্য এখন খুব লাফালাফি করছেন। হঠাৎ দেখি ডেমরা রাস্তায় সঙ্গে পাঁচ থেকে সাতজন। কোথাও কোথাও ১০ থেকে ১২ জন। এই করে করে আন্দোলনের নামে প্রহসন চলছে। এসব করে কিছুই হবে না।
আওয়ামী লীগের এই সাধারণ সম্পাদক আরও বলেন, আমি সবাইকে আহ্বান জানাব— সময় আছে, (নির্বাচনে) অংশ নিন। সরকারি দল হিসেবে আপনাদেরকে অনুরোধ করছি, কারও জন্য কোনো বাধা নেই। আপনাদের জন্য নির্বাচনের দরজা বন্ধ হয়নি। ইভেন বিএনপিও যদি তাদের মত পরিবর্তন করে নির্বাচনে আসে, ওয়েলকাম। আমরা কাউকে নির্বাচনের পথে নিরুৎসাহিত করব না।
আরও পড়ুন-
তফসিল ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করল বিএনপি
‘সবাই নির্বাচনে আসুন, একা ক্ষমতায় যেতে চাই না’
দলগুলোকে সমাধান খুঁজতে ও জনগণকে ভোটাধিকার প্রয়োগের আহ্বান
সারাবাংলা/টিআর
আওয়ামী লীগ তফসিল তফসিল প্রত্যাখ্যা নির্বাচনি তফসিল বিএনপি ভোটে আসার আহ্বান