ছেলের আশায় বসে থেকে মা পেলেন লাশ
২১ নভেম্বর ২০২৩ ২২:৩৬
চট্টগ্রাম ব্যুরো: ‘সকালে আমার ছেলে যাওয়ার সময় বলেছে, মা তুমি চিন্তা কোরো না। আমি বাজারের টাকা দিয়ে যাব ১০টা বাজে। তুমি বাজারগুলো রান্না কোরো। এ কথা বলে ছেলে বের হয়েছে। আর ফেরেনি।’
মঙ্গলবার (২১ নভেম্বর) রাতে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে এভাবেই কান্নাজড়িত কণ্ঠে বিলাপ করতে করতে কথাগুলো বলছিলেন রুমা বেগম। নগরীর খুলশীতে ছুরিকাঘাতে খুন হওয়া মো. হৃদয়ের (২২) মা তিনি।
রুমা বেগম বলেন, ‘ঘরে কিছু ডিম ছিল। ওগুলা রান্না করে আমি কেবল বসেছি। ঘরে ভাত দুটো খাব। এমন সময় ছেলে একটা এসে বলে, তাড়াতাড়ি আসেন। আপনার ছেলে মেডিকেলে। কী হইছে— জিজ্ঞাসা করলে বলে, ছুরি মেরেছে। এরপর দৌড়ে হাসপাতালে আসছি। প্রথমে পাইনি। এরপর আবার আমবাগানে গেছি। সেখানেও পাইনি। পরে আবার হাসপাতালে আসলে পুলিশ আমাকে বসতে বলে।’
কান্না জড়িত কন্ঠে রুমা বলেন, ‘আমার ছেলেকে কারা মেরেছে জানি না। সে কোনো রাজনীতিতে নাই। কারও সঙ্গে মারামারি বা বিবাদেও নাই। আমার একটা ছেলে। আল্লাহ নিয়ে গেল। আমার স্বামী ২০ দিন ধরে মিথ্যা মামলার আসামি হয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে। কাউকে কিছু বলতে পারি না। বাজার নাই, ঘরে খাবার নাই। কত কষ্ট করে চলছি। স্বামীও ঘরে নাই। এখন ছেলে ছাড়া আমি কীভাবে থাকব?’
খুলশী থানার উপপরিদর্শক (এস আই) মো. হেলাল সারাবাংলাকে বলেন, ‘আমরা মোবাইল ডিউটি করার সময় আমবাগান স্কুলের সামনে মারামারির খবর পাই। দ্রুত সেখানে যাই। এর আগেই হৃদয়কে উদ্ধার করে কয়েকজন হাসপাতালে নিয়ে আসে। আমরা এখানে এসে লাশ শনাক্ত করি। এদের কিশোর গ্যাং বলা যাচ্ছে না। কিশোরও আছে। বড়ও আছে। স্থানীয় লোকজনের ভাষ্যমতে, আগের কোনো দ্বন্দ্বের জের ধরে মারামারির হচ্ছিল।’
খুলশী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রুবেল হাওলাদার সারাবাংলাকে বলেন, ‘খুনের ঘটনায় জড়িতদের ধরতে আমরা অভিযান চালাচ্ছি। ঘটনাস্থলের আশপাশের সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করা হয়েছে। এখনো মামলা হয়নি। মামলার প্রক্রিয়া চলছে।’
সারাবাংলা/আইসি/টিআর