‘জাতীয় পার্টির সঙ্গে আসন ভাগাভাগির বিষয়ে আলোচনা হয়নি’
৭ ডিসেম্বর ২০২৩ ১৮:২৮
ঢাকা: জাতীয় পার্টির সঙ্গে আমি সিট ভাগাভাগির বিষয়ে আলোচনা হয়নি দাবি করে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, সিট ভাগাভাগির বিষয়ে কোনো আলোচনা হয়নি। আমরা রাজনৈতিক আলোচনা করেছি। আগামী নির্বাচনে জনগণের ভোটের মাধ্যমেই সরকারি দলও আসবে, বিরোধী দলও হয়ে যাবে।
বৃহস্পতিবার (৭ ডিসেম্বর) দুপুরে রাজধানীর ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে সমসাময়িক প্রেক্ষাপটে আয়োজিত প্রেস ব্রিফিংয়ে তিনি এ সব কথা বলেন।
জাতীয় পার্টির সঙ্গে বৈঠক নিয়ে লুকোচুরির কী দরকার ছিল? এ বিষয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘কোনো লুকোচুরি করি না। এখানে লুকোচুরির কোনো বিষয় না। নির্বাচনমুখী রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আমাদের একটা সমন্বয় থাকা দরকার। কারণ নির্বাচনবিরোধী শক্তি যে অপরজানীতি করছে এটি মোকাবিলা করার জন্য একটা সমন্বয় ও একটা ঐক্য দরকার। কারণ নির্বাচনকে পিসফুল করা, নির্বাচনটাকে ক্রেডিবল করা ফ্রি অ্যান্ড ফেয়ার করা; এই অঙ্গীকার আমাদের রয়েছে। এ জন্য নিজেরা আমরা আলাপ আলোচনা করছি। এখানে লুকোচুরির কোনো ব্যাপার না। আমরা পলিটিক্স করি, পলিটিক্যাল বিষয়েই আমাদের কথাবার্তা হয়েছে। তাদের রাজনৈতিক দল হিসাবে নিজেদের শক্তিমত্তা প্রদর্শন করা এটা তো তারা চাইবেই। আর বাস্তবে কি হবে? সেটা পরের কথা। চাইতে তো আর দোষ নেই।’
জাতীয় পার্টির সঙ্গে আসন সমঝোতার বিষয়ে আলোচনা হয়েছি কি না? এ বিষয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘সিট ভাগাভাগির কোনো বিষয় আমি জানি না। সিট ভাগাভাগি হয়েছে এমন কোনো আলোচনা হয়নি। আমরা রাজনৈতিক আলোচনা করেছি।’
সারাদেশে নৌকার প্রার্থীর বিপক্ষে স্বতন্ত্র প্রার্থীরা ভোটের মাঠে দাঁড়িয়েছে এক্ষেত্রে তৃণমূলের নেতাককর্মীরা দ্বিধাবিভক্তে পড়েছে? এমন কৌশল ভবিষ্যতে দলের জন্য বিষফোঁড়া হবে কি না? এ বিষয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘এটি বিষফোঁড়া কেন হবে আমি জানি না? এটি আমাদের নির্বাচনি রণকৌশল। আমাদের ইলেকশনটাকে অর্থবহ করতে হবে। ভোটার টার্ন আউটের ব্যাপারেও আমরা মাথায় রাখছি।’
‘এটি একটি ফেয়ার কম্পিটিশন হবে। এখানে তো মারামারি সংঘাতের বিষয় নেই। ইলেকশনে প্রতিযোগিতা হবে এবং প্রধানমন্ত্রী নিজেই বলেছেন স্বতন্ত্র যারা করতে চায় তারা করবে। এতে আমাদের দলের পক্ষ থেকে আমরা কোনো ভিন্ন অবস্থান নিইনি। আমরা মনে করি, একটি ফেয়ার কম্পিটিশনে যেই জিতে, জিতবে। অসুবিধা কী? স্বতন্ত্র হলে তার জেতার অধিকার নেই? তা তো না! আবার আমরা দলগতভাবে দলকে অবশ্যই বেছে নেব প্রথমে। কারণ দলের আমাদের কাছে মূল বিষয়। সেখানে স্বতন্ত্রকে দেওয়া হয়েছে প্রতিযোগিতা করার জন্য। যদি জনগণের ভোটে তারা এগিয়ে যায় সেখানে আমাদের কি বলার আছে?’
নির্বাচনের গ্রহণযোগ্যতা দিতে আওয়ামী লীগ কি চুপিসারে অন্য দলগুলোর সঙ্গে সমঝোতা করছে কি না? এর জবাবে ওবায়দুল কাদের বোঝাচ্ছেন আমি জানি না?
ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘এখানে তো হাঁকডাক-লুকোচুরির কিছু নেই। আমরা আলোচনার সুবিধার্থে দেখুন আমরা একটি বৈঠক করছি। এরকম দলীয় বৈঠকে দলীয় নেতাকর্মীদেরও একটি আগ্রহ থাকে। অনেকে ভিড় জমাতে পারেন। এটিকে আমরা এড়িয়ে চলতে চেয়েছি।’
জাতীয় পার্টির সঙ্গে জোটগত না আলাদাভাবে নির্বাচন করতে যাচ্ছেন? ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘আমরা কথাবার্তা বলছি। এই ব্যাপারে আলাপ করিনি, এ জন্য সিদ্ধান্ত হয়নি। গতকাল আলোচনাটা রাজনৈতিক আলোচনাতেই সীমাবদ্ধ ছিল।’
জাতীয় নির্বাচনের পর বর্তমান সরকারের ব্যাপারে যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান কোনো পাল্টাবে কি না এবং কারা বিরোধীদল হতে পারে বলে মনে করেন? আরেক প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘ইলেকশনটা হয়ে যাক তারপর কারা কত সিট পায় আমরা দেখি। কারা বিরোধিতা করবে এবং বিরোধী দল হিসেবে আগ্রহী সেটি তো তখন দেখা যাবে। এখন আমি কী করে বলব?’
‘যুক্তরাষ্ট্র ইচ্ছা করলে কোনো কিছুর ব্যাপারে আমাদের ওপর একতরফা কোনো সিদ্ধান্ত দিতে পারবে না। কারণ যুক্তরাষ্ট্রের যে বন্ধুরা আছে এই এশিয়া প্রশান্ত মহাসাগরীয় এলাকায়, যুক্তরাষ্ট্রের যে বন্ধুরা আছে ইউরোপে বন্ধুরা কিন্তু বাংলাদেশের ব্যাপারে চরম কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়ার পক্ষপাতী নয়। এটিই আমরা জানি’ বলে দাবি করেন ওবায়দুল কাদের।
সরকার এই নিরবাচনের মধ্য দিয়ে আগামীতে একটি অর্থবহ বিরোধী দল খুঁজছে কি না? এ বিষয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘বাংলাদেশে স্ট্রং ডেমোক্রেসির জন্য স্ট্রং অপজিশন দরকার। এটি আমরা আগেও বলেছি, এখনও বলছি। আমরা খুঁজব কেন, অটোমেটিক্যালি চলে আসবে। জনগণের ভোটের মাধ্যমেই সরকারি দলও আসবে, বিরোধী দলও হয়ে যাবে।’
প্রেস ব্রিফিংয়ে দলের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফ, আ ফ ম বাহাউদ্দীন নাছিম, সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম, দফতর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া, উপদফতর সম্পাদক সায়েম খান, প্রধানমন্ত্রীর সাবেক সহকারী প্রেস সচিব মু. আশরাফ সিদ্দিকী বিটুসহ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
সারাবাংলা/এনআর/একে