Thursday 21 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

নভেম্বরে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ৪৬৭

সারাবাংলা ডেস্ক
৯ ডিসেম্বর ২০২৩ ১৫:৫২

ঢাকা: গত নভেম্বর মাসে দেশে ৫৪১টি সড়ক দুর্ঘটনা ঘটেছে। এতে ৪৬৭ জন নিহত এবং আহত ৬৭২ জন হয়েছেন। এর মধ্যে ৬৬ শিশু ও ৫৩ জন নারী রয়েছেন। এছাড়া ২০৭টি মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় ১৮১ জন নিহত হয়েছেন, যা মোট নিহতের ৩৮ দশমিক ৭৫ শতাংশ। মোট দুর্ঘটনার মধ্যে এ হার ৩৮ দশমিক ২৬ শতাংশ। দুর্ঘটনায় ১০৬ জন পথচারী নিহত হয়েছেন, যা মোট নিহতের ২২ দশমিক ৬৯ শতাংশ। যানবাহনের চালক ও সহকারী নিহত হয়েছেন ৬৮ জন, যা ১৪ দশমিক ৫৬ শতাংশ।

বিজ্ঞাপন

এই সময়ে ৫টি নৌ-দুর্ঘটনায় পাঁচজন নিহত ও তিনজন আহত হয়েছেন। আর ২২টি রেলপথ দুর্ঘটনায় ১৯ জন নিহত এবং ১৬ জন আহত হয়েছেন। শনিবার (৯ ডিসেম্বর) সংবাদমাধ্যমে পাঠানো এক প্রতিবেদনে এসব তথ্য জানায় রোড সেফটি ফাউন্ডেশন। দেশের ৯টি জাতীয় দৈনিক, ৭টি অনলাইন নিউজ পোর্টাল এবং ইলেক্টনিক গণমাধ্যমের তথ্যের ভিত্তিতে প্রতিবেদনটি তৈরি করা হয়েছে বলে জানিয়েছে সংস্থাটি।

ওই প্রতিবেদনে দুর্ঘটনায় যানবাহনভিত্তিক নিহতের পরিসংখ্যানে দেখা যায়, মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় চালক ও আরোহী নিহত হয়েছেন ১৮১ জন, যা মোট নিহতের ৩৮ দশমিক ৭৫ শতাংশ। বাস যাত্রী ৮ জন, যা মোট নিহতের ১ দশমিক ৭১ শতাংশ। ট্রাক-কাভার্ডভ্যান-পিকআপভ্যান-পুলিশভ্যান আরোহী ২০ জন, যা ৪ দশমিক ২৮ শতাংশ। প্রাইভেটকার-মাইক্রোবাস-অ্যাম্বুলেন্স-পাজেরো জীপ আরোহী ১৩ জন, যা ২ দশমিক ৭৮ শতাংশ। থ্রি-হুইলার যাত্রী (ইজিবাইক-সিএনজি-অটোরিকশা-অটোভ্যান-লেগুনা) ১০৬ জন, যা ২২ দশমিক ৬৯ শতাংশ। স্থানীয়ভাবে তৈরি যানবাহনের যাত্রী (নসিমন-করিমন-চান্দের গাড়ি-টমটম-পাওয়ারটিলার-ইটভাঙ্গার মেশিন গাড়ি) ১৪ জন, যা ২ দশমিক ৯৯ শতাংশ। এছাড়া বাইসাইকেল-প্যাডেল রিকশা-রিকশা ভ্যান আরোহী ১৯ জন, যা মোট নিহতের ৪ দশমিক ০৬ শতাংশ।

দুর্ঘটনা সংঘটিত সড়কের ধরন

রোড সেফটি ফাউন্ডেশনের পর্যবেক্ষণ ও বিশ্লেষণ বলছে, দুর্ঘটনাগুলোর মধ্যে ১৮৭টি জাতীয় মহাসড়কে, ২৩২টি আঞ্চলিক সড়কে, ৮১টি গ্রামীণ সড়কে, ৩৩টি শহরের সড়কে এবং অন্যান্য স্থানে ৮টি সংঘটিত হয়েছে।

দুর্ঘটনার ধরন

দুর্ঘটনাগুলোর মধ্যে ৮১টি মুখোমুখি সংঘর্ষে ও নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে, ১০৫টি পথচারীকে চাপা বা ধাক্কা দিয়ে, ৯০টি যানবাহনের পেছনে আঘাত করে এবং ১১টি অন্যান্য কারণে ঘটেছে।

বিজ্ঞাপন

দুর্ঘটনার বিভাগওয়ারী পরিসংখ্যান

দুর্ঘটনার বিভাগওয়ারী পরিসংখ্যান বলছে, ঢাকা বিভাগে সবচেয়ে বেশি দুর্ঘটনা ও প্রাণহানি ঘটেছে। এই বিভাগে ১৩৮টি দুর্ঘটনায় ১১৯ জন নিহত হয়েছেন। সিলেট বিভাগে সবচেয়ে কম ২১টি দুর্ঘটনায় ১৬ জনের প্রাণহানি ঘটেছে। একক জেলা হিসেবে চট্টগ্রাম জেলায় সবচেয়ে বেশি ৩৮টি দুর্ঘটনায় ৪৯ জন নিহত হয়েছেন। সবচেয়ে কম দুর্ঘটনা ঘটেছে খাগড়াছড়ি জেলায়। ২টি দুর্ঘটনা ঘটলেও কোনো প্রাণহানি ঘটেনি। এছাড়া রাজধানী ঢাকায় ২৬টি দুর্ঘটনায় ২০ জন নিহত এবং ৩১ জন আহত হয়েছেন।

সড়ক দুর্ঘটনার প্রধান ১০টি কারণ উল্লেখ করা ওই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে। সেগুলো হলো— ১. ত্রুটিপূর্ণ যানবাহন, ২. বেপরোয়া গতি, ৩. চালকদের বেপরোয়া মানসিকতা, অদক্ষতা ও শারীরিক-মানসিক অসুস্থতা, ৪. বেতন-কর্মঘণ্টা নির্দিষ্ট না থাকা, ৫. মহাসড়কে স্বল্পগতির যানবাহন চলাচল, ৬. তরুণ-যুবদের বেপরোয়া মোটরসাইকেল চালানো, ৭. জনসাধারণের মধ্যে ট্রাফিক আইন না জানা ও না মানার প্রবণতা, ৮. দুর্বল ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা, ৯. বিআরটিএ’র সক্ষমতার ঘাটতি এবং ১০. গণপরিবহন খাতে চাঁদাবাজি।

সড়ক দুর্ঘটনা রোধে ১০টি সুপারিশ করা হয়েছে রোড সেফটির প্রতিবেদনে। সুপারিশগুলো হলো— ১. দক্ষ চালক তৈরির উদ্যোগ বৃদ্ধি করতে হবে, ২. চালকদের বেতন-কর্মঘণ্টা নির্দিষ্ট করতে হবে, ৩. বিআরটিএ’র সক্ষমতা বৃদ্ধি করতে হবে, ৪. পরিবহন মালিক-শ্রমিক, যাত্রী ও পথচারীদের প্রতি ট্রাফিক আইনের বাধাহীন প্রয়োগ নিশ্চিত করতে হবে, ৫. মহাসড়কে স্বল্পগতির যানবাহন বন্ধ করে এগুলোর জন্য আলাদা সার্ভিস রোড তৈরি করতে হবে, ৬. পর্যায়ক্রমে সকল মহাসড়কে রোড ডিভাইডার নির্মাণ করতে হবে, ৭. গণপরিবহনে চাঁদাবাজি বন্ধ করতে হবে, ৮. রেল ও নৌ-পথ সংস্কার করে সড়ক পথের উপর চাপ কমাতে হবে, ৯. টেকসই পরিবহন কৌশল প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন করতে হবে, এবং ১০. ‘সড়ক পরিবহন আইন-২০১৮’ বাধাহীনভাবে বাস্তবায়ন করতে হবে।

সারাবাংলা/এনএস

নভেম্বর রোড সেফটি ফাউন্ডেশন সড়ক দুর্ঘটনা

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর