ভোটের মাঠে সেনাবাহিনী থাকবে ১৩ দিন
১৮ ডিসেম্বর ২০২৩ ১৬:৫৩
ঢাকা: দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দিন এবং এর আগে-পরে মিলিয়ে মোট ১৩ দিন সেনাবাহিনীর সদস্যরা মাঠে থাকবে। নির্বাচন কমিশন জানিয়েছে, শান্তিশৃঙ্খলা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে স্থানীয় বেসামরিক প্রশাসনকে সহায়তা করতে ‘ইন এইড টু দ্য সিভিল পাওয়ার’-এর আওতায় সশস্ত্র বাহিনী নিয়োজিত থাকবে।
সোমবার (১৮ ডিসেম্বর) নির্বাচন কমিশন থেকে সশস্ত্র বাহিনীর প্রিন্সপাল স্টাফ অফিসারকে পাঠানো চিঠিতে ২৯ ডিসেম্বর থেকে ১০ জানুয়ারি পর্যন্ত ১৩ দিনের জন্য সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যদের ভোটের মাঠে দায়িত্বপালনের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে। এ হিসাবে ভোটের আগে ৯ দিন, ভোটের দিন এবং ভোটের পরে আরও তিন দিন মাঠে সেনা সদস্যরা মোতায়েন থাকবেন।
চিঠিতে বলা হয়েছে, দেশের ৩০০টি নির্বাচনি এলাকায় ২৯ ডিসেম্বর থেকে ১০ জানুয়ারি পর্যন্ত (যাতায়াতের সময়সহ) সশস্ত্র বাহিনী নিয়োজিত হবে বলে কমিশন সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এ লক্ষ্যে নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে আলোচনার পরিপ্রেক্ষিতে নির্বাচনের কয়েকদিন আগে থেকে নির্বাচনি এলাকার যোগাযোগব্যবস্থা, ভৌত অবকাঠামো এবং নির্বাচনি পরিবেশ পরিস্থিতির ওপর প্রাথমিক তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ করার জন্য প্রতি জেলায় সশস্ত্র বাহিনীর ছোট আকারের একটি করে অগ্রবর্তী দল পাঠানো যেতে পারে।
আরও পড়ুন- নির্বাচনে সেনা মোতায়েনে সম্মতি দিয়েছেন রাষ্ট্রপতি: ইসি সচিব
কমিশন বলছে, ফৌজদারি কার্যবিধি ও অন্যান্য আইনের বিধান অনুযায়ী এবং প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে জারি করা ‘ইনস্ট্রাকশন রিগার্ডিং এইড টু দ্য সিভিল পাওয়ার’-এর সপ্তম ও দশম অনুচ্ছেদের বিধান অনুযায়ী সশস্ত্র বাহিনী পরিচালিত হবে। মোতায়েন করা সশস্ত্র বাহিনী নির্বাচনি কাজে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের পরামর্শে ফৌজদারি কার্যবিধি অনুযায়ী বেসামরিক প্রশাসনকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় সহায়তা করবে।
সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যদের কার্যক্রমের কৌশল হিসেবে বলা হয়েছে, বাহিনীর সদস্যরা জেলা, উপজেলা বা মহানগর এলাকার নোডাল পয়েন্ট ও সুবিধাজনক স্থানে নিয়োজিত থাকবেন। রিটার্নিং কর্মকর্তার সঙ্গে সমন্বয় করে উপজেলা বা থানায় সদস্যদের মোতায়েন করা হবে। সশস্ত্র বাহিনীর দলের সঙ্গে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োজিত করা হবে। সংশ্লিষ্ট রিটার্নিং কর্মকর্তাদের নির্দেশনা অনুযায়ী এলাকাভিত্তিক ‘ডেপ্লয়মেন্ট প্ল্যান’ চূড়ান্ত করা হবে। ভোটগ্রহণের দিন এবং এর আগে ও পরে কার্যক্রম গ্রহণ ও মোতায়েনের সময়কালসহ বিস্তারিত পরিকল্পনা অবহিত করতে হবে। বাস্তবতা ও প্রয়োজনীয়তা অনুযায়ী রিটার্নিং কর্মকর্তা ও সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তার অনুরোধে চাহিদা অনুযায়ী আইনি অন্যান্য কার্যক্রম সম্পাদন করতে হবে। এ বিষয়ে পরে আরও বিস্তারিত নির্দেশনা জারি করা হবে বলেও উল্লেখ করা হয়েছে চিঠিতে।
এর আগে গত সোমবার (১১ ডিসেম্বর) নির্বাচনে সেনা মোতায়েন বিষয়ে সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের প্রিন্সিপাল স্টাফ অফিসার লেফটেন্যান্ট জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামানের সঙ্গে বৈঠক করে নির্বাচন কমিশন। প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়ালের সভাপতিত্বে আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে প্রায় দেড় ঘণ্টা বৈঠক হয়।
আরও পড়ুন- ১৩ দিনের জন্য সেনাবাহিনী চেয়েছে ইসি
ওই বৈঠকের পর প্রিন্সিপাল স্টাফ অফিসার লেফটেন্যান্ট জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান বলেন, নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে আমাদের কাছে ১৩ দিনের জন্য সেনা মোতায়েনের চাহিদার কথা জানানো হয়েছে। আমরা নির্বাচন কমিশনকে আশ্বস্ত করেছি, আমাদের সব ধরনের প্রস্তুতি রয়েছে। রাষ্ট্রপতি অনুমোদন দিলে আমরা তাদের প্রয়োজন অনুযায়ী সেনাবাহিনীর সদস্যদের মাঠে নামাতে পারব।
পরে গতকাল রোববার (১৭ ডিসেম্বর) রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের সঙ্গে তার সরকারি বাসভবন বঙ্গভবনে সাক্ষাৎ করেন সিইসি কাজী হাবিবুল আউয়ালসহ ইসির সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।
সাক্ষাৎ শেষে ইসি সচিব মো. জাহাংগীর আলম সাংবাদিকদের বলেন, সংবিধানের ১২০ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী সশস্ত্র বাহিনীর সর্বাধিনায়ক রাষ্ট্রপতির কাছে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ‘ইন এইড টু সিভিল পাওয়ারে’র আওতায় বেসমারিক প্রশাসনকে সহায়তা করার জন্য সামরিক বাহিনী নিযুক্ত করার জন্য অনুমতি প্রার্থনা করেছে নির্বাচন কমিশন। রাষ্ট্রপতি বিষয়টি শুনেছেন। তিনি নীতিগতভাবে সামরিক বাহিনী মোতায়েনে সম্মত হয়েছেন।
এর পরদিন আজ ইসি থেকে সশস্ত্র বাহিনীকে আনুষ্ঠানিকভাবে চিঠি দিয়ে নির্বাচনের আগে-পরে মিলিয়ে ১৩ দিনের জন্য সেনা মোতায়েনের কথা জানানো হলো।
সারাবাংলা/জিএস/টিআর
আলী হোসেন ভুঁইয়া ইসি জাতীয়-নির্বাচন দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন নির্বাচন কমিশন নির্বাচনে সেনাবাহিনী মোতায়েন] প্রিন্সিপাল স্টাফ অফিসার লেফটেন্যান্ট জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান সংসদ নির্বাচন