হাইকোর্টে গিয়ে প্রার্থিতা ফিরে পেলেন আরও ১৪ জন
১৮ ডিসেম্বর ২০২৩ ২৩:৩৯
ঢাকা: আগামী ৭ জানুয়ারির নির্বাচনে অংশ নিতে হাইকোর্টে নির্বাচন কমিশনের (ইসি) আদেশ চ্যালেঞ্জ করে প্রার্থিতা ফিরে পেয়েছেন আরও ১৪ প্রার্থী। সেইসঙ্গে এই ১৪ প্রার্থীকে প্রতীক বরাদ্দের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। পাশাপাশি প্রার্থিতা বাতিল করে নির্বাচন কমিশনের দেওয়া আদেশ স্থগিত করেছেন হাইকোর্ট।
সোমবার (১৮ ডিসেম্বর) বিচারপতি মো. ইকবাল কবির ও বিচারপতি এস এম মনিরুজ্জামানের হাইকোর্ট বেঞ্চ ও বিচারপতি আবু তাহের মো. সাইফুর রহমান এবং মো. বশির উল্লাহর সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট রুলসহ এই আদেশ দেন।
এর আগে গতকাল রোববার (১৭ ডিসেম্বর) হাইকোর্টে আপিল করে প্রার্থিতা ফিরে পান ছয় প্রার্থী। আজকের ১৪ জন নিয়ে আদালত থেকে প্রার্থিতা ফিরে পেলেন ২০ জন। আগে ইসি ঘোষিত বৈধ প্রার্থী ছিলেন ১ হাজার ৮৯৬ জন। আদালত থেকে ২০ জন প্রার্থিতা ফিরে পাওয়ায় সেই সংখ্যা দাঁড়াল ১ হাজার ৯১৬।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বিচারপতি ইকবাল কবির ও বিচারপতি এস এম মনিরুজ্জামানের হাইকোর্টে বেঞ্চের নির্দেশে আজ যারা প্রার্থিতা ফিরে পেলেন তারা হলেন- কুমিল্লা-৭ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী মুনতাকিম আমরাফ। আদালতে মুনতাকিমের পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী শাহ মুনজুরুল হক। মুনতাকিমের আপিল আবেদন গত ১৩ ডিসেম্বর নামঞ্জুর করেছিল নির্বাচন কমিশন।
ফেনী-৩ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী আবদুল কাশেম আজাদের আপিল আবেদন গত ১৪ ডিসেম্বর নামঞ্জুর করেছিল ইসি। পরে ইসির আদেশ চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে রিট করেন আবদুল কাশেম আজাদ। চট্টগ্রাম-৫ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী মোহাম্মদ নাছির হায়দার করিমের আপিল আবেদন গত ১১ ডিসেম্বর নামঞ্জুর করে ইসি। পরে প্রার্থিতা ফিরে পেতে তিনি হাইকোর্টে রিট করেন।
রাজবাড়ী-১ ও ২ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. আ. মান্নান মুসল্লীর আপিল আবেদন গত ১০ ডিসেম্বর নামঞ্জুর করে নির্বাচন কমিশনের আপিল ট্রাইব্যুনাল। পরে ইসির আদেশ চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে রিট করেন মান্নান মুসল্লী।
আরও পড়ুন:
- হাইকোর্টে প্রার্থিতা ফিরে পেলেন ৬ জন
- হাইকোর্টেও প্রার্থিতা ফিরে পাননি নৌকার বাবুল
- হাইকোর্টে প্রার্থিতা ফিরে পেলেন সাদিক আব্দুল্লাহ
- প্রার্থিতা ফিরে পেলেন ময়মনসিংহ-৯ এর আ.লীগ প্রার্থী সালাম
- হাইকোর্টেও প্রার্থিতা ফিরে পেলেন না শামীম হক ও শাম্মী আহমেদ
ময়মনসিংহ-৫ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. নজরুল ইসলামের প্রার্থিতা ফিরে পেতে ইসিতে করা আপিল আবেদন গত ১৫ ডিসেম্বর নামঞ্জুর হয়। পরে ইসির আদেশ চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে রিট করেন তিনি। কুমিল্লা-১ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী নাঈম হাসানের আপিল আবেদন গত ১৪ ডিসেম্বর নামঞ্জুর করেছিল নির্বাচন কমিশন। পরে ওই আদেশ চ্যালেঞ্জ করেন তিনি।
কুমিল্লা-৯ আসনের বিএনএমের প্রার্থী মো. হাছান মিয়ার প্রার্থিতা বাতিলের বিরুদ্ধে করা আবেদন গত ১১ ডিসেম্বর নামঞ্জুর করেছিল ইসির আপিল ট্রাইব্যুনাল। পরে ইসির আদেশ চ্যালেঞ্জ করে তিনি রিট করেন।
কুড়িগ্রাম-৪ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. ফারুকুল ইসলামের প্রার্থিতা ফিরে পেতে নির্বাচন কমিশনে করা আবেদন গত ১৪ ডিসেম্বর নামঞ্জুর হয়। এরপর প্রার্থিতা ফিরে পেতে হাইকোর্টে আসেন তিনি।
টাঙ্গাইল-৪ আসনের জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জাসদ) প্রার্থী এস এম আবু মোস্তফার আপিল আবেদন গত ১২ ডিসেম্বর নামঞ্জুর করে নির্বাচন কমিশন। পরে সেই আদেশের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে আবেদন করা হয়।
একইভাবে বিচারপতি আবু তাহের মো. সাইফুর রহমান ও বিচারপতি মো. বশির উল্লাহর বেঞ্চের আদেশে যারা প্রার্থিতা ফিরে পেয়েছেন তারা হলেন- খুলনা-৪ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী এসএম মোর্ত্তজা রশিদী দারা। গত ১০ ডিসেম্বর ইসিতে তার আপিল নামঞ্জুর হলে তিনি হাইকোর্টে রিট দায়ের করেন।
নওগাঁ-২ এর স্বতন্ত্র প্রার্থী এইচ এম আকতারুল আলমের আপিল গত ১১ ডিসেম্বর ইসিতে নামঞ্জুর হলে প্রার্থিতা ফিরে পেতে হাইকোর্টে আবেদন করেন তিনি।
সিরাজগঞ্জ-৩ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. শাখাওয়াত হোসেনের প্রার্থিতা ফিরে পেতে করা আপিল গত ১৩ ডিসেম্বর নামঞ্জুর হয়। এরপর তিনি ইসির আদেশের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে আসেন।
ময়মনসিংহ-৯ আসনের আওয়ামী লীগের প্রার্থী মেজর জেনারেল (অব.) এম এ সালামের প্রার্থিতা ফিরে পেতে করা আপিল গত ১৫ ডিসেম্বর নামঞ্জুর করে নির্বাচন কমিশনের আপিল ট্রাইব্যুনাল। পরে ইসির আদেশ চ্যালেঞ্জ করে রিট করেন তিনি। আজ শুনানি শেষে প্রার্থিতা ফিরে পান। তার পক্ষে আদালতে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী প্রবীর নিয়োগী।
বরিশাল-৫ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহ আপিল আবেদন গত ১৫ ডিসেম্বর নামঞ্জুর করেছিল নির্বাচন কমিশনের আপিল ট্রাইব্যুনাল। পরে ইসির ওই আদেশ চ্যালেঞ্জ করে গতকাল (১৭ ডিসেম্বর) হাইকোর্টে রিট করেন তিনি। আজ শুনানি শেষে আদালত তাকে প্রতীক দেওয়ার নির্দেশ দেন।
আদেশের বিষয়টি সারাবাংলাকে নিশ্চিত করে আইনজীবী ইফতাবুল কামাল অয়ন বলেন, ‘আদালত সাদিক আব্দুল্লাহকে প্রতীক বরাদ্দ দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। একইসঙ্গে নির্বাচন কমিশনের দেওয়া আদেশ স্থগিত করেছেন। পাশাপাশি ইসির দেওয়া আদেশ কেন বাতিল করা হবে না, এই মর্মে রুল জারি করেছেন।’
এর আগে, গতকাল (১৭ ডিসেম্বর) হাইকোর্টের আদেশে ছয়জন প্রার্থিতা ফিরে পেয়েছেন। গত ১০ ডিসেম্বর থেকে ১৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত সময়ে প্রার্থীদের আপিল শুনানি নিয়ে নির্বাচন কমিশন ২৮৬টি আপিল মঞ্জুর করে। এবং একই সময়ে ২৭৩টি আবেদন নামঞ্জুর করে। এরপর প্রার্থিতা ফিরে পেতে অনেক প্রার্থী হাইকোর্টে আবেদন করেছেন। সেই ধারাবাহিকতায় আজ ১৪ জন প্রার্থিতা ফিরে পেলেন।
সারাবাংলা/কেআইএফ/পিটিএম