কাদের যেখানে একা, অনন্য
১২ জানুয়ারি ২০২৪ ১৭:৪৯
ঢাকা: নতুন সরকারের মন্ত্রিসভা গঠন করেছেন নতুন সংসদের সংখ্যাগরিষ্ঠ দল আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। টানা চতুর্থ মেয়াদে সরকার গঠন করতে গিয়ে শেখ হাসিনা ঠিক আগের মন্ত্রিসভার মাত্র ১৭ জনকে স্থান দিয়েছেন। তাদের মধ্যে রয়েছেন দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরও। তবে ঠিক যে জায়গাটিতে কাদের অনন্য সেটি হলো— এখন পর্যন্ত শেখ হাসিনা যতগুলো মন্ত্রিসভা গঠন করেছেন, তার প্রতিটিতেই একমাত্র ব্যক্তি হিসেবে জায়গা পেয়েছেন তিনি।
বুধবার (১০ জানুয়ারি) রাতে মন্ত্রিসভার সদস্যদের নামের তালিকা গণমাধ্যমে প্রকাশ করেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব মাহবুব হোসেন। গতকাল সন্ধ্যায় মন্ত্রিসভার এসব সদস্য বঙ্গভবনে রাষ্ট্রপতির কাছে শপথও নিয়েছেন।
নতুন মন্ত্রিসভায় আগের মতোই সড়ক পরিবহন ও যোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পেয়েছেন ওবায়দুল কাদের। দীর্ঘ দিন ধরেই তিনি একই মন্ত্রণালয় সামলে যাচ্ছেন। এবারেও মন্ত্রিসভায় স্থান পাওয়ার মধ্য দিয়ে ওবায়দুল কাদের শেখ হাসিনার নেতৃত্বে গঠিত প্রতিটি মন্ত্রিসভায় জায়গা করে নেওয়ার রেকর্ড গড়লেন।
আরও পড়ুন-
- শপথ নিলেন ২৫ নতুন মন্ত্রী
- শপথ নিলেন ১১ নতুন প্রতিমন্ত্রী
- শপথ নিলেন মন্ত্রিসভার ৩৬ সদস্য
- নতুন অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী
- কে কোন মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে [তালিকাসহ]
- ২৫ মন্ত্রী ও ১১ প্রতিমন্ত্রী নিয়োগের প্রজ্ঞাপন জারি
- প্রধানমন্ত্রীর কাছে থাকল যেসব মন্ত্রণালয় ও বিভাগ
- পঞ্চমবারের মতো প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ শেখ হাসিনার
- প্রধানমন্ত্রীর ছয় উপদেষ্টা নিয়োগ, নতুন মুখ কামাল নাসের
- মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রীদের দফতর বণ্টন: একাদশের ১৫ জন অপরিবর্তিত
১৯৯৬, ২০০৯, ২০১৪, ২০১৯ ও ২০২৪— এই পাঁচ বার শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সরকার গঠন করে আওয়ামী লীগ। পাঁচ মেয়াদেই শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রী। তার এসব মন্ত্রিসভায় স্থান মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী, উপমন্ত্রী হিসেবে স্থান পেয়েছেন প্রায় দুই শ জন। এর মধ্যে একাধিকবার জায়গা পেয়েছেন অনেকেই। শেখ হাসিনার দুই ও তিন মন্ত্রিসভাতেও স্থান পেয়েছেন কেউ কেউ। কিন্তু ওবায়দুল কাদেরই একমাত্র ব্যক্তি হিসেবে শেখ হাসিনার পাঁচটি মন্ত্রিসভাতেই জায়গা পেয়েছেন।
১৯৯৬ সালে শেখ হাসিনা প্রথমবার সরকার গঠন করলে সে মন্ত্রিসভায় যুব, ক্রীড়া ও সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পান ওবায়দুল কাদের। এরপর ২০০৯ সালে শেখ হাসিনা দ্বিতীয়বার সরকার গঠন করেন। সেবার শুরুতে না হলেও বছর দুয়েক পরেই যোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের পূর্ণ মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পান কাদের। ২০১৪ সালে সরকার গঠনের পরও মন্ত্রিসভায় একই দফতরের দায়িত্ব দেওয়া হয় তাকে। পরে যোগাযোগ মন্ত্রণালয় ভেঙে সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয় এবং রেলপথ মন্ত্রণালয় নামে দুটি আলাদা মন্ত্রণালয় গঠন করা হয়। ওই সময় ওবায়দুল কাদের সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পান।
এরপর ২০১৮ সালে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর ২০১৯ সালের জানুয়ারিতে গঠিত মন্ত্রিসভাতেও সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্বভার গ্রহণ করেন ওবায়দুল কাদের। দ্বাদশে এসেও ওবায়দুল কাদেরের ওপর একই মন্ত্রণালয়েই আস্থা রেখেছেন শেখ হাসিনা। এ নিয়ে শেখ হাসিনা টানা চতুর্থ ও সার্বিকভাবে পঞ্চম মন্ত্রিসভার প্রতিটিতেই জায়গা করে নিলেন ওবায়দুল কাদের।
আওয়ামী লীগের এই সাধারণ সম্পাদক নোয়াখালী-৫ আসনের সংসদ সদস্য। ওই আসন থেকেও তিনি ১৯৯৬, ২০০৮, ২০১৪, ২০১৮ ও ২০২৪ সালে অনুষ্ঠিত জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন। অর্থাৎ যে পাঁচবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন ওবায়দুল কাদের, প্রত্যেকবারই তিনি মন্ত্রিসভাতেও স্থান করে নিয়েছেন!
ছাত্রলীগে যুক্ত হওয়ার মাধ্যমে ছাত্রজীবনেই রাজনীতির হাতেখড়ি ওবায়দুল কাদেরের। সত্তরের দশকে ছাত্রলীগের সভাপতিও ছিলেন। ২০০২ সালের দলীয় কাউন্সিলে তিনি আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। ২০০৯ সালের কাউন্সিলে তিনি দলটির সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য হন। ২০১৬ সালের কাউন্সিলে সৈয়দ আশরাফুল ইসলামের উত্তরসূরী হিসেবে সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্বভার পান। এরপর থেকে টানা তিন তিন মেয়াদে তিনি শেখ হাসিনার রানিং মেট হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসছেন। এখন শেখ হাসিনার সব মন্ত্রিসভায় তিনিই একমাত্র অপরিবর্তিত নাম।
সারাবাংলা/টিআর
ওবায়দুল কাদের দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন মন্ত্রিসভা মন্ত্রী শেখ হাসিনা শেখ হাসিনার মন্ত্রিসভা সেতুমন্ত্রী