Saturday 07 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

‘বরই খেয়ে’ ২ বোনের মৃত্যু, মা-বাবা আইসোলেশনে

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট
১৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ১২:৩১

রাজশাহী: রাজশাহী বরই খাওয়ার পর সাড়ে চার ও দুই বছর বয়সী দুই বোনের মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। জ্বরে ভুগে চার দিনের মধ্যে দুই মেয়ের মৃত্যুর পর তাদের মা-বাবাকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে আইসোলেশনে নেওয়া হয়েছে।

চিকিৎসকদের ধারণা, নিপাহ ভাইরাস কিংবা অন্য কোনো ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে দুই বোনের মৃত্যু হয়ে থাকতে পারে। পরীক্ষার জন্য নমুনা পাঠানো হয়েছে ঢাকায়। পরীক্ষার ফলাফল মিললে তাদের মৃত্যুর কারণ নিশ্চিত হওয়া যাবে।

জ্বর আর বমি উপসর্গে আক্রান্ত ছিল দুই বোন মুফতাউল মাশিয়া ও দুই বছরের মুনতাহা মারিশা। বুধবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) হাসপাতালে নেওয়ার পথেই মৃত্যু হয় শিশু মারিশার। রামেক হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) চিকিৎসাধীন অবস্থায় শনিবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) মৃত্যু হয় মাশিয়ার। চার দিনের মধ্যে দুই সন্তানকে হারিয়ে শোকস্তব্ধ দম্পতি।

মারিশা-মাশিয়ার বাবা মনজুর রহমান (৩৫) রাজশাহী ক্যাডেট কলেজের গণিত বিভাগের প্রভাষক। তার স্ত্রী পলি খাতুন (৩০) গৃহিণী। রাজশাহীর দুর্গাপুর উপজেলার চুনিয়াপাড়া গ্রামে তাদের বাড়ি। থাকেন সারদায় ক্যাডেট কলেজের কোয়ার্টারে।

শিশু দুটির মা পলি খাতুন জানান, গত মঙ্গলবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) সকালে কোয়ার্টারের গৃহসহকারী কলেজ ক্যাম্পাসের গাছ থেকে বরই কুড়িয়ে দুই মেয়েকে খেতে দিয়েছিলেন। না ধুয়েই ওই বরই খেয়েছিল মারিশা ও মাশিয়া। পরদিন বুধবার সকালেই মারিশার জ্বর আসে। সে বারবার পানি খাচ্ছিল। দুপুরের পর শুরু হয় বমি। শরীরে কালো ছোপ ছোপ দাগ উঠতে শুরু করে। রাজশাহীর সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) নেওয়ার পথেই তার মৃত্যু হয়।

পলি খাতুন আরও জানান, শুক্রবার সকালে মাশিয়ারও জ্বর আসে। শুরু হয় বমি। তাকে প্রথমে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও পরে রাজশাহী সিএমএইচে নেওয়া হয়। রাতে মাশিয়ারও পুরো শরীরে ছোপ ছোপ কালো দাগ উঠতে শুরু করে। পরে সিএমএইচ থেকে চিকিৎসকরা মাশিয়াকে রামেক হাসপাতালে নেওয়ার পরামর্শ দেন। রাতেই তাকে রামেক হাসপাতালে নিয়ে আইসিইউতে ভর্তি করা হয়। শনিবার বিকেলে মৃত্যু হয় তার।

রামেক হাসপাতালের আইসিইউ বিভাগের ইনচার্জ ডা. আবু হেনা মোস্তফা কামাল বলেন, শিশু দুটির মা-বাবা জানিয়েছেন, তারা খেজুরের রস খায়নি। না ধুয়ে বরই খেয়েছিল। তারা নিপাহ ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে থাকতে পারে। অন্য কোনো ভাইরাসের সংক্রমণও হয়ে থাকতে পারে। আমরা আইসিইউতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করা মারিশা ও তার মা-বাবার নমুনা সংগ্রহ করে ঢাকায় পাঠিয়েছি। রিপোর্ট পেলে ভাইরাস সংক্রমণের বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া যাবে।

এ বছর এখন পর্যন্ত রাজশাহীতে কারও নিপাহ ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মারা যাওয়ার প্রমাণ পাওয়া যায়নি বলে জানান ডা. আবু হেনা। বলেন, তা না হলেও বাচ্চা দুটি কোনো না কোনো ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েই মারা গেছে। লক্ষণগুলো সুনিশ্চিত নয়। আবার চিকিৎসার জন্যও খুব বেশি সময় পাওয়া যায়নি। এ কারণে তাদের মা-বাবাকে বাসায় যেতে দেওয়া হয়নি। হাসপাতালে আইসোলেশনে রাখা হয়েছে তাদের।

এদিকে স্বজনদের মাধ্যমে মাশিয়ার মরদেহ তাদের গ্রামের বাড়িতে পাঠানো হয়েছে। সেখানেই দাফন করা হয়েছে তাকে। এর আগে গত বুধবার রাতে মারিশাকেও একই স্থানে দাফন করা হয়েছে।

সারাবাংলা/টিআর

টপ নিউজ নিপাহ ভাইরাস ভাইরাসে আক্রান্ত রাজশাহী রামেক হাসপাতাল


বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ
সম্পর্কিত খবর