ইতিহাস থেকে শিক্ষা নিতে হবে: শেখ হাসিনা
৭ মার্চ ২০২৪ ১৯:৩৫
ঢাকা: দলের নেতাকর্মীসহ দেশবাসীকে ইতিহাস থেকে শিক্ষা নেওয়ার আহ্বান জানিয়ে আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ইতিহাস থেকে শিক্ষা না নিলে সামনের দিক এগিয়ে যাওয়া যায় না। শুধু ক্ষমতায় থেকে আমরা সুবিধা দিচ্ছি; সুযোগ-সুবিধা ভোগ করবেন তা না! সঙ্গে সঙ্গে এই পর্যন্ত আসতে যে সংগ্রামের ইতিহাস আত্মত্যাগের ইতিহাস; সে সম্পর্কে মানুষকে জানাতে হবে। সেটি শুধু নিজেরাই জানলে হবে না, সবাইকে জানাতে হবে। দিবসগুলোর কথা সবাইকে জানতেই হবে। তাহলেই আমাদের ইতিহাসটা সম্পর্কে তাদের সম্যক জ্ঞান পাবে। কারণ ইতিহাস আমাদের শিক্ষা দেয়। আগামী দিনের পথচলার পথ দেখায় এবং সাফল্য হওয়ার শিক্ষা দেয়।
বৃহস্পতিবার (৭ মার্চের) বিকালে রাজধানীর তেজগাঁওয়ে অবস্থিত ঢাকা জেলা শাখা আওয়ামী লীগ কার্যালয় ভবনে ঐতিহাসিক ৭ই মার্চ উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় তিনি এ সব কথা বলেন।
বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ আয়োজিত আলোচনা সভার শুরুতে দফতর সম্পাদক ও প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারী ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া’র লেখা বই ‘বঙ্গবন্ধু থেকে দেশরত্ন: অনুপ্রেরণার মহাকাব্য’ গ্রন্থের মোড়ক উন্মোচন করেন প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। এ সময় গ্রন্থকার বিপ্লব বড়ুয়া ও প্রকাশক কবি তারিক সুজাতসহ আওয়ামী লীগের জাতীয় ও কেন্দ্রীয় নেতারা উপস্থিত ছিলেন। বইটির মুখবন্ধ লিখেছেন বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা।
বিশ্বের সামরিক অসামরিক যত নেতৃত্ব মানুষকে স্বাধীনতার চেতনায় উদ্বুদ্ধ করার জন্য ভাষণ দিয়েছে ৭ই মার্চের ভাষণ তার মধ্যে সর্বশ্রেষ্ঠ ভাষণ বলে উল্লেখ করেন আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা।
তিনি বলেন, ‘৭ মার্চের ভাষণের মধ্যদিয়ে আমরা স্বাধীনতা পেয়েছি। সেই দিবসটি আমরা পালন করছি। পালন করছি এই কারণে; দুঃখী মানুষের মুখে হাসি ফোটানোর যে স্বপ্ন জাতির পিতা দেখেছিলেন সেটিই আমাদের বাস্তবায়ন করতে হবে। যে কাজটা তিনি করতে চেয়েছিলেন তাকে করতে দেওয়া হয়নি। ১৫ আগস্ট নির্মমভাবে হত্যা করে মানুষের ভাগ্য নিয়ে ছিনিমিনি খেলা হয়েছে।’
‘কাজেই এই দেশের মানুষের ভাগ্য নিয়ে আর কেউ যেন ছিনিমিনি খেলতে না পারে। যারা জয় বাংলার স্লোগানে বিশ্বাস করে না। ৭ই মার্চের ভাষণকে যারা প্রেরণা বলে মনে করে না। তার অর্থ তারা স্বাধীন বাংলাদেশ চায় না। বাংলাদেশের উন্নয়ন চায় না। বাংলাদেশের মানুষের আর্থ-সামাজিক উন্নতি চায় না। তো তাদেরকে কেন মানুষ ভোট দেবে? সেই জন্যই তো তারা বারবার তারা সেই ২০০৮’ এর নির্বাচনে তিনশ সিটের মধ্য ৩০টি সিট পেয়েছিল। এরপরে তো আরও দুরবস্থা। পরে তো ৭টি সিট। এখন ইলেকশন না করে ইলেকশন বানচাল এবং মানুষের কীভাবে দুর্ভোগটা বাড়াবে, অগ্নিসন্ত্রাস জঙ্গিবাদ এইসব সৃষ্টি করে দেশটাকে ধ্বংস করতে চায়।’
এখানে সারাদেশের মানুষকেই আমি বলব, ‘এই ভাষণ এখনও এর আবেদন রয়েছে। কাজেই দেশের মানুষের ভাগ্য পরিবর্তন করার জন্য দেশকে উন্নত করার জন্য উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা পেয়েছি। সেটি কার্যকর করে উন্নত বাংলাদেশ; যে বাংলাদেশ ডিজিটাল বাংলাদেশ হয়েছে, এখন হবে ২০৪১ সালের মধ্যে স্মার্ট বাংলাদেশ। সেই বাংলাদেশ যেন গড়তে পারি।’ এ জন্য সবাইকে প্রস্তুতি নিতে হবে বলে মনে করেন প্রধানমন্ত্রী।
দলীয় নেতাকর্মীদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, ‘এখানে ছাত্রলীগের নেতারা আছে তাদেরকেও বলব, আওয়ামী লীগের সব নেতাদের বলব, নিজের ছেলেমেয়ে নাতিপুতি আমরাও এটি মনে করি; সবাইকে এটি শিক্ষা দেওয়া উচিত। ২১ শে ফেব্রুয়ারি আমাদের ভাষা শহীদ দিবস এবং আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস, ১৭ই মার্চ জাতির পিতার জন্মদিবস, ২৬ শে মার্চ আমাদের স্বাধীনতা দিবস। ১৬ ডিসেম্বর আমাদের বিজয় দিবস; এই দিবসগুলো সম্পর্কে যেন আমাদের যুবসমাজ প্রত্যেকেই জানতে পাারে এবং সবারই জানা উচিত।’
‘কাজেই ইতিহাস থেকে শিক্ষা নিতে হয়। ওই শিক্ষা না নিলে সামনের দিক এগিয়ে যাওয়া যায় না। শুধু ক্ষমতায় থেকে আমরা সুবিধা দিচ্ছি সব সুযোগ-সুবিধা ভোগ করবেন তা না! এ পর্যন্ত আসতে যে সংগ্রামের ইতিহাস আত্মত্যাগের ইতিহাস; সেগুলো তো মানুষকে জানতে হবে! বুঝতে হবে। সেটি নিজেরাই জানলে হবে না, সবাইকে জানাতে। আর দিবসগুলোর কথা সবাইকে জানতেই হবে। তাহলেই আমাদের ইতিহাসটা সম্পর্কে তাদের সম্যক জ্ঞান পাবে। এটিই আমাদের আবেদন থাকবে সবার কাছে মানুষ যেন ইতিহাস ভুলে না যায়। কারণ ইতিহাস আমাদের শিক্ষা দেয়। আগামী দিনের পথচলার পথ দেখায় এবং সফল হওয়ার শিক্ষা দেয়। কারণ জাতির পিতার প্রতিটি আন্দোলনেই ছিল সাফল্যে ভরপুর।’
এই স্বাধীনতাও যারা চেয়েছিল ধ্বংস করতে ২১ বছর এরপর আবার ৮ বছর; এই ২৯ বছর তারা ব্যর্থ তারা পারেনি। তারা সেটি মুছতে পারেনি। আজকে আমরা সরকারি আছি। জনগণ আমাদের বারবারে ভোট দিয়েছে। গণতান্ত্রিক ধারা অব্যাহত আছে। আর গণতান্ত্রিক ধারা অব্যাহত আছে বলেই দেশের আর্থ-সামাজিক উন্নতি হচ্ছে বলে মনে করেন প্রধানমন্ত্রী।
তিনি আরও বলেন, ‘আর যে দলটি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব নিজের হাতে গড়ে তুলেছেন। যে দল দেশের স্বাধীনতা সংগ্রাম করেছে। যুদ্ধ পরিচালনা করেছে। যুদ্ধের মধ্য দিয়ে বিজয় এনে দিয়েছে। একমাত্র আওয়ামী লীগ সেই দল। যেই দল ক্ষমতায় আসলে জনগণের ভাগ্যের পরিবর্তন হয় দেশের উন্নয়ন হয়।’
যে যত কথাই বলুক এই বাস্তবতা সবাইকে স্বীকার করতে হবে। আসলে যার ঘা তার ব্যথা। যারা কষ্ট করে তারা বোঝে। এই মানুষকে কী দিতে হবে? আজকে আওয়ামী লীগ আছে বলেই তো দেশ উন্নয়নশীল দেশ হিসাবে মর্যাদা পেয়েছে বলেও দাবি করেন সরকারপ্রধান শেখ হাসিনা।
তিনি আরও বলেন, ‘জাতির পিতা যেখানে স্বল্পোন্নত দেশে রেখে গিয়েছিলেন; কই এই ২৮ বছর/২১ বছরে তো এক কদমও এগিয়ে যেতে পারেনি। কিন্তু আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পরেই তো দেশ সামনের দিকে এগিয়ে গেছে এবং ইনশাআল্লাহ বাংলাদেশও একদিন উন্নত সমৃদ্ধ সোনার বাংলা, স্মার্ট বাংলাদেশ আমরা গড়ে তুলব। আজকের দিনে সেই প্রতিজ্ঞা আমরা নিচ্ছি।’
আওয়ামী লীগের প্রচার প্রকাশনা সম্পাদক আবদুস সোবহান গোলাপ ও উপ-প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক সৈয়দ আবদুল আউয়াল শামীমের পরিচালনা করেন। সভায় দলের কেন্দ্রীয় ও মহানগর নেতারা বক্তব্য রাখেন।
সারাবাংলা/এনআর/একে
৭ই মার্চের ভাষণ আওয়ামী লীগ জাতির পিতা প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু মুক্তিযুদ্ধ শেখ মুজিবুর রহমান শেখ হাসিনা স্বাধীনতা