Friday 06 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

বাংলাদেশ-ভারত সীমান্ত এখন ভয়ংকর: সাইফুল হক

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট
২ এপ্রিল ২০২৪ ২২:২৭

ঢাকা: বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক বলেছেন, ইসরায়েল-ফিলিস্তিন সীমান্তের পর ভারত-বাংলাদেশ সীমান্ত এখন বিশ্বের ভয়ংকর এক সীমান্ত। সীমান্ত অঞ্চলের মানুষ গুরুতর নিরাপত্তাহীনতায় দিন পার করছে। ভারতের সীমান্ত রক্ষী বাহিনী- বিএসএফ সীমান্তে প্রাণঘাতী অস্ত্র ব্যবহার না করার ঘোষণা তারা রাখেনি। প্রায় প্রতি সপ্তাহে তারা বাংলাদেশি নাগরিকদের হত্যা করছে। বিএসএফ তথা ভারত বাস্তবে বাংলাদেশের সঙ্গে ধারাবাহিকভাবে প্রতারণা করে আসছে। ভারতের এ সব তৎপরতা কোনো সৎ প্রতিবেশীর পরিচয় নয়; বরং তাদের বাংলাদেশ বিরোধী আগ্রাসী চরিত্রের বহিঃপ্রকাশ।

মঙ্গলবার (২ এপ্রিল) সেগুনবাগিচা তার দলীয় কার্যালয় আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ সব কথা বলেন।

সংবাদ সম্মেলনে আরও বক্তব্য রাখেন বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির রাজনৈতিক পরিষদের সদস্য বহ্নিশিখা জামালী, আকবর খান, মীর মোফাজ্জল হোসেন মোশতাক। উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় সদস্য সাইফুল ইসলাম, মোহাম্মদ সালাউদ্দিন, জোনায়েদ হোসেন, শাহাদাৎ হোসেন শান্ত প্রমুখ।

তিনি বলেন, ‘বিএসএফ প্রধান ঢাকা থেকে ভারত ফিরে যাওয়ার পরপরই মাত্র এক সপ্তাহেই নওগাঁ ও লালমনিরহাট সীমান্তে বিএসএফ এর হাতে তিন বাংলাদেশি যুবক প্রাণ হারিয়েছেন। কেবল ২০২৩ সালে বিএসএফ হাতে ৩০ জনের বেশি বাংলাদেশি নিহত হয়েছেন। গত সাত বছরে বিএসএফ এর গুলি ও অত্যাচারে প্রাণ হারিয়েছেন দুই শতাধিক বাংলাদেশি নাগরিক, আহত হয়েছেন অনেকে। অধিকাংশ ক্ষেত্রে সীমান্তে লেনদেনে সমস্যা হলেই বিএসএফ মারমুখী হয়ে ওঠে এবং গুলি চালিয়ে বাংদেশিদের প্রাণনাশ করে।’

সাইফুল হক বলেন বলেন, ‘ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের পাঁচ হাজার কিলোমিটার সীমান্তের চার হাজার কিলোমিটারের বেশি ভারত কর্তৃক কাঁটাতারের বেড়া দেওয়া। বিশ্বের আর কোনো সীমান্তে এত দীর্ঘ কাঁটাতারের বেড়া নেই। ইসরায়েল আর ফিলিস্তিন সীমান্ত আর মেক্সিকো-আমেরিকা সীমান্তেও এতবড় তারকাঁটার সীমান্ত নেই। প্রাকৃতিক বা রাজনৈতিক কোনো দুর্যোগে দুপাশের মানুষ যে পরস্পরের কাছে আশ্রয় নেবে- ভারত তাও এখন বন্ধ করে দিয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘ভারতের উপেক্ষা ও অবহেলার কারণে এখনও পর্যন্ত তিস্তাসহ অভিন্ন নদীর পানিপ্রবাহে বাংলাদেশের ন্যায্য হিস্যা পাওয়া যায়নি। বাণিজ্যিক ভারসাম্য এখনও বাংলাদেশের প্রতিকূলে। বস্তুত বাংলাদেশ ভারতকে ট্রানজিট সুবিধাসহ তাদের নিরাপত্তা সংক্রান্ত সমস্যাদির সমাধান করে দিলেও কাঁটাতারের বেড়ায় ফেলানির লাশের মতো বাংলাদেশের জন্য গুরুত্বপূর্ণ সমস্যাসমূহ তারা ঝুলিয়ে রেখেছে।’

সংবাদ সম্মেলনে সাইফুল হক বলেন, ‘বাংলাদেশের সরকারসমূহের ভারত তোষণ নীতি, বিশেষ করে গত পনের বছর আওয়ামী লীগ সরকারের ভারত অনুগত পররাষ্ট্র নীতির কারণে সীমান্ত হত্যা বন্ধ, পানির ন্যায্য অংশীদারিত্ব, বাণিজ্যিক ভারসাম্য প্রতিষ্ঠাসহ ভারতে বাংলাদেশবিরোধী বহুমুখী অপতৎপরতা বন্ধ করানো যায়নি। বাংলাদেশে আওয়ামী লীগ সরকার যখন প্রায় প্রতিদিন ঘোষণা করছে যে, বাংলাদেশ-ভারত বন্ধুত্ব এখন সর্বোচ্চ শিখরে তখন প্রায় প্রতি সপ্তাহে সীমান্তে বাংলাদেশের মানুষের রক্তে এ বন্ধুত্বের নির্মম দায় শোধ করতে হচ্ছে। আমরা এ সব তৎপরতা অবিলম্বে বন্ধের আহ্বান জানাই।’

সংবাদ সম্মেলনে সাইফুল হক বলেন, ‘এটি অত্যন্ত স্পষ্ট যে, সরকারের দাশানুগ নীতি কৌশলের কারণে এ সরকারের কাছে দেশের সার্বভৌমত্ব, জাতীয় স্বার্থ ও জাতীয় নিরাপত্তা কোনোভাবেই আর নিরাপদ নয়। জবরদস্তি করে ক্ষমতায় থাকতে গিয়ে ভোটের অধিকার হরণসহ দেশের অবশিষ্ট গণতান্ত্রিক কাঠামো তারা ধ্বংস করে দিয়েছে। সে কারণে এ সরকারকে বিদায় দেওয়া ছাড়া দেশের গণতান্ত্রিক ভবিষ্যৎ যেমন নিশ্চিত করা যাবে না, তেমনি জাতীয় স্বার্থ ও জাতীয় নিরাপত্তাও সংরক্ষণ করা যাবে না।’

তিনি দেশ ও দেশের গণতান্ত্রিক ভবিষ্যৎ রক্ষায় দেশবাসীকে ঐক্যবদ্ধভাবে এগিয়ে আসতে উদাত্ত আহ্বান জানান।

সারাবাংলা/এএইচএইচ/একে

ওয়ার্কাস পার্টি সাইফুল হক


বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ

ধানমন্ডি থেকে গ্রেফতার শাজাহান খান
৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ০২:৪৫

সম্পর্কিত খবর