মার্চে সড়কে ৫৬৫ প্রাণহানি, সবচেয়ে বেশি ঢাকায়
১৭ এপ্রিল ২০২৪ ১৯:৪৭
ঢাকা: মার্চ মাসে সারাদেশে সড়ক দুর্ঘটনা ঘটেছে ৫৫২টি। এসব দুর্ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছেন ৫৬৫ জন। আহত হয়েছেন আরও এক হাজার ২২৮ জন। এর মধ্যে এক-তৃতীয়াংশেরও বেশি প্রাণহানি ঘটেছে মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায়। অন্যদিকে সবচেয়ে বেশি দুর্ঘটনা ও প্রাণহানি ঘটেছে ঢাকা বিভাগে।
বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদের ভিত্তিতে এ তথ্য দিয়েছে বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতি। বুধবার (১৭ এপ্রিল) সংগঠনটি থেকে পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সড়ক দুর্ঘটনার বাইরে মার্চ মাসে রেলপথে ৩৮টি দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছেন ৩১ জন, আহত হয়েছেন ৮৬ জন। নৌ পথে সাতটি দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছেন ১৬ জন, আহত হয়েছেন ১৭ জন। সব মিলিয়ে মার্চে মোট ৫৯৭টি দুর্ঘটনায় ৬১২ জন নিহত ও এক হাজার ৩৩১ জন আহত হয়েছেন।
আরও পড়ুন-বেপরোয়া গতিতে চলছিল ট্রাকটি, ৪ গাড়িকে চাপা দিয়ে পড়ে খাদে
মার্চ মাসে ৫৫২টি সড়ক দুর্ঘটনার মধ্যে মোটরসাইকেল দুর্ঘটনা ঘটেছে ১৮১টি, যা মোট সড়ক দুর্ঘটনার ৩২ দশমিক ৭৮ শতাংশ। এসব দুর্ঘটনায় নিত হয়েছেন ২০৩ জন, যা সড়ক দুর্ঘটনায় নিহতদের ৩৫ দশমিক ৯২ শতাংশ। আর এসব দুর্ঘটনায় আহত হয়েছেন ১৬৬ জন, যা সড়ক দুর্ঘটনায় আহতের ১৩ দশমিক ৫১ শতাংশ।
সড়ক দুর্ঘটনার বিভাগভিত্তিক পরিসংখ্যান বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, সবচেয়ে বেশি ১৬২টি সড়ক দুর্ঘটনা সংগঠিত হয়েছে ঢাকা বিভাগে। এসব দুর্ঘটনায় ১৬৫ জন নিহত ও ৩০৬ জন আহত হয়েছেন। আর বরিশাল বিভাগে দুর্ঘটনা ঘটেছে কম। এ বিভাগে ২৩টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৩২ জন নিহত ও ৯২ জন আহত হয়েছেন।
যাত্রী কল্যাণ সমিতির মহাসচিব মো. মোজাম্মেল হক চৌধুরীর সই করা সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, সড়ক দুর্ঘটনায় আক্রান্ত ব্যক্তির মধ্যে ১২ জন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য, ১৮৩ জন চালক, ৮২ জন পথচারী, ৮২ জন পরিবহন শ্রমিক, ৩১ জন শিক্ষার্থী, সাতজন শিক্ষক, তিনজন চিকিৎসক, একজন মুক্তিযোদ্ধা ও ছয়জন বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীর পরিচয় মিলেছে। নিহতদের মধ্যে ১০৯ জন নারী, ৭০ জন শিশু।
আরও পড়ুন- ঝালকাঠির সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত বেড়ে ১৪, তদন্ত কমিটি গঠন
তথ্য বিশ্লেষণে আরও দেখা যায়, মার্চে সড়ক দুর্ঘটনা কবলিত যানবাহনের মধ্যে ২৪ দশমিক ৭১ শতাংশ মোটরসাইকেল, ২৫ দশমিক ৮৫ শতাংশ ট্রাক-পিকাপ-কাভার্ডভ্যান ও লরি, ১১ দশমিক ২২ শতাংশ বাস, ১৬ দশমিক ৩৯ শতাংশ ব্যাটারিচালিত রিকশা ও ইজিবাইক, ৫ দশমিক ১৭ শতাংশ সিএনজিচালিত অটোরিকশা, ১০ দশমিক ৪৬ শতাংশ নছিমন-করিমন-মাহিন্দ্রা-ট্রাক্টর ও লেগুনা ও ৬ দশমিক ৪৩ শতাংশ কার-জিপ-মাইক্রোবাস।
দুর্ঘটনাগুলোর মধ্যে ৫৭ দশমিক ৪২ শতাংশ গাড়ি চাপা দেওয়ার ঘটনা, ১৭ দশমিক ২১ শতাংশ মুখোমুখি সংঘর্ষ, ২১ দশমিক ৭৩ শতাংশ নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে খাদে পড়ে, ২ দশমিক ৮৩ শতাংশ বিবিধ কারণে এবং শূন্য দশমিক সাত দুই শতাংশ ট্রেন-যানবাহনের সংঘর্ষে ঘটে।
আরও পড়ুন- ট্রাক-প্রাইভেটকার-অটোরিকশার ত্রিমুখী সংঘর্ষে নিহত ১১
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, এ মাসে সংগঠিত মোট দুর্ঘটনার ৩৪ দশমিক ৬০ শতাংশ জাতীয় মহাসড়কে, ১৭ দশমিক ২১ শতাংশ আঞ্চলিক মহাসড়কে ও ৩৯ দশমিক ৪৯ শতাংশ ফিডার রোডে সংঘটিত হয়েছে। এ ছাড়াও সারা দেশে সংঘটিত মোট দুর্ঘটনার ৭ দশমিক ৭৮ শতাংশ ঢাকা মহানগরীতে, শূন্য দশমিক এক আট শতাংশ চট্টগ্রাম মহানগরীতে ও শূন্য দশমিক সাত দুই শতাংশ রেলক্রসিংয়ে সংগঠিত হয়েছে।
মোজাম্মেল হক চৌধুরী বলেন, প্রকাশিত এ তথ্য দেশে সংঘটিত সড়ক দুর্ঘটনার প্রকৃত চিত্র নয়। এটি কেবল গণমাধ্যমে প্রকাশিত তথ্য। এর বাইরেও প্রচুর দুর্ঘটনা ঘটে, যা গণমাধ্যমে স্থান পায় না। তার সংখ্যা ৬০ থেকে ৭০ শতাংশ পর্যন্ত হতে পারে। তাই এসব তথ্য আমাদের প্রতিবেদনে তুলে ধরা সম্ভব হয় না।
সারাবাংলা/জেআর/টিআর