উপজেলা চেয়ারম্যান সোহেলের দায়িত্ব পালন অবৈধ, বেতন ফেরতের নির্দেশ
১৬ মে ২০২৪ ২২:১০
ঢাকা: ফেনীর ছাগলনাইয়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান হিসেবে মেজবাউল হায়দার চৌধুরী সোহেলের দায়িত্ব পালন অবৈধ ঘোষণা করেছেন হাইকোর্ট। তিনি ২০১৯ সালে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছিলেন।
এ সংক্রান্ত তিনটি রুলের চূড়ান্ত শুনানি শেষে বৃহস্পতিবার (১৬ মে) বিচারপতি জে বি এম হাসান ও বিচারপতি রাজিক আল জলিলের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রায় দেন।
রায়ে ২০১৯ সালের ২৩ সেপ্টেম্বর থেকে উপজেলা চেয়ারম্যান হিসেবে তিনি যে বেতন-ভাতা ও সুবিধা গ্রহণ করেছেন, তা তিন মাসের মধ্যে ফেরতের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
আদালতে ২০১৯ সালের উপজেলা নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতাকারী অপর দুই প্রার্থী আব্দুল হালিম ও শহিদুল্লাহ মজুমদারের পক্ষে ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মাহবুব উদ্দিন খোকন ও এস এম কফিল উদ্দিন।
মেজবাউল হায়দার চৌধুরী সোহেলের পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এ এফ হাসান আরিফ ও মো. অজি উল্লাহ।
রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল কাজী মাঈনুল হাসান।
২০১৯ সালের ফেনীর ছাগলনাইয়া উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন দেওয়া হয় উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মেজবাউল হায়দার চৌধুরীকে। তখন দল থেকে মনোনয়ন না পেয়ে চেয়ারম্যান পদে আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও ফেনী জেলা জজ আদালতের এপিপি শহিদুল্লাহ মজুমদার ও সাবেক ছাত্রলীগ নেতা আবদুল হালিম স্বতন্ত্র প্রার্থী হন। কিন্তু যাচাই-বাছাইয়ের পর ওই বছর ৬ মার্চ রিটার্নিং কর্মকর্তা তাদের মনোনয়নপত্র বাতিল করেন।
পরে এ আদেশের বিরুদ্ধে একই বছরের ১০ মার্চ ইসিতে আপিল করেও তারা প্রার্থিতা ফিরে পাননি।
এ অবস্থায় ইসির সিদ্ধান্ত চ্যালেঞ্জ করে দুজনই হাইকোর্টে পৃথক রিট দায়ের করেন।
শুনানির পর ১৪ মার্চ হাইকোর্ট তাদের মনোনয়নপত্র বৈধ বলে আদেশ দেওয়ার পাশাপাশি রুল দেন। প্রার্থিতা ফিরে পেয়ে যথারীতি তারা নির্বাচনি প্রচারেও নামেন। এ অবস্থায় হাইকোর্টের আদেশ স্থগিত চেয়ে আপিল বিভাগের চেম্বার আদালতে আবেদন করেন মেজবাহুল হায়দার চৌধুরী সোহেল। শুনানির পর ২৫ মার্চ নির্বাচন স্থগিত করেন চেম্বার বিচারপতি। একই সঙ্গে দুই প্রার্থীর মনোনয়ন বৈধ বলে দেওয়া হাইকোর্টের আদেশ স্থগিত করা হয়। পরে আপিল বিভাগের নিয়মিত বেঞ্চ স্থগিতাদেশ বহাল রাখলে একই বছরের ৩১ মার্চ অনুষ্ঠিত নির্বাচনে মেজবাহুল হায়দার চৌধুরী সোহেলকে বিজয়ী ঘোষণা করা হয়।
পরে ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মেজবাউল হায়দার চৌধুরীর পদে থাকা নিয়ে উপজেলার শুভপুর ইউনিয়নের কাজী জায়েদ মোহাম্মদ গোলাম ফারুক হাইকোর্টে রিট করেন।
হাইকোর্ট প্রাথমিক শুনানির পর রুল জারি করেন। তিনটি রুলের চূড়ান্ত শুনানির পর বৃহস্পতিবার রায় দেন হাইকোর্ট।
পরে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল কাজী মাঈনুল হাসান সাংবাদিকদের বলেন, মেজবাউল হায়দার চৌধুরী সোহেলকে বিজয়ী ঘোষণা করলেও আইনি জটিলতায় তিনি চেয়ারম্যান হিসেবে শপথ নিতে পারেননি। শপথ না নিয়ে তিনি উপজেলা চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন। সেটিকে অবৈধ ঘোষণা করেছেন হাইকোর্ট।
তিনি আরও বলেন, রায়ের অনুলিপি পাওয়ার তিন মাসের মধ্যে বেতন-ভাতা, যানবাহনসহ অন্যান্য যেসব সুবিধা তিনি গ্রহণ করেছেন, তা ফেরত দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
সারাবাংলা/কেআইএফ/একে