বঙ্গোপসাগরে লঘুচাপ, রূপ নিতে পারে ঘূর্ণিঝড়ে
২২ মে ২০২৪ ২২:৫৯
ঢাকা: দক্ষিণ-পশ্চিম বঙ্গোপসাগর ও এর তৎসংলগ্ন পশ্চিম বঙ্গোপসাগর এলাকায় একটি লঘুচাপের সৃষ্টি হয়েছে। এটি আরও ঘনীভূত হতে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদফতর। যা এক পর্যায়ে নিম্নচাপে রূপ নিতে পারে বলে জানিয়েছেন আবহাওয়াবিদরা। তারা বলছেন, লঘুচাপটি নিম্নচাপে রূপ নিয়ে তা ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হতে পারে। ফলে সারাদেশে ঝড়-বৃষ্টির পূর্বাভাস দিয়ে বিএমইডি। তবে এখন পর্যন্ত সমুদ্রে কোনো সতর্কতা জারি করা হয়নি।
বুধবার (২২ মে) আবহাওয়া অধিদফতরের পূর্বাভাসেও সারাদেশে বৃষ্টির কথা বলা হয়েছে। এদিকে, গত ২৪ ঘণ্টায় রাজধানী ঢাকায়ও তাপমাত্রা অন্যান্য দিনের চেয়ে কম অনুভূত হয়েছে। আবহাওয়াবিদ মো. ওমর ফারুক জানান, বঙ্গোপসাগরে যে লঘুচাপটি সৃষ্টি হয়েছে, তা ক্রমান্বয়ে ঘনীভূত হয়ে নিম্নচাপে পরিণত হতে পারে। আর নিম্নচাপ হলে সেটি ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিতে পারে।
এদিকে, বিশ্বের বিভিন্ন আবহাওয়া মডেলের বরাত দিয়ে কানাডার সাসকাচুয়ান বিশ্ববিদ্যালয়ে আবহাওয়া ও জলবায়ুবিষয়ক পিএইডি গবেষক মোস্তফা কামাল পলাশ সারাবাংলাকে বলেন, “ঘূর্ণিঝড় ‘রেমাল’ ২৬ মে সকাল ৬টার পর থেকে রাত ১২টার মধ্যে বরিশাল বিভাগের বরগুনা জেলা থেকে শুরু করে চট্টগ্রাম বিভাগের কক্সবাজার জেলার মধ্যবর্তী উপকূলীয় এলাকার ওপর দিয়ে স্থলভাগে আঘাত করতে পারে।”
তিনি আরও বলেন, ‘ঘূর্ণিঝড় বৃত্তের অগ্রবর্তী অংশ উপকূলীয় এলাকায় প্রবেশ শুরু করতে পারে সকাল ৬টার পর থেকে। ঘূর্ণিঝড়ের কেন্দ্র উপকূল অতিক্রম করার সম্ভাব্য সময় ২৬ মে দুপুর ১২টার পর থেকে বিকেল ৬টার মধ্যে। ঘূর্ণিঝড় বৃত্তের পিছন দিকের অর্ধেক অংশ পুরোপুরি স্থল ভাগে প্রবেশ করতে রাত ১২টা পর্যন্ত লেগে যেতে পারে। বাংলাদেশের খুলনা, বরিশাল ও চট্টগ্রাম বিভাগের উপকূলীয় জেলাগুলোর উপকূলে আঘাতের সময় ঘূর্ণিঝড়টির বাতাসের সর্বোচ্চ গতিবেগ থাকতে পারে ঘণ্টায় ১০০ থেকে ১২০ কিলোমিটার। যা দমকা হাওয়ারূপে ঘণ্টায় ১৪০ কিলোমিটার পর্যন্ত বাড়তে পারে।’
আজকের আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, রংপুর, রাজশাহী, ঢাকা, ময়মনসিংহ, খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের দুয়েক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা/ঝোড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি/বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। তবে দেশের অপরপ্রান্তে আবার তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। মাদারীপুর, গোপালগঞ্জ, সিলেট, চট্টগ্রাম, রাঙ্গামাটি, চাঁদপুর, নোয়াখালী, দনী, বান্দরবান, খুলনা, মংলা, সাতক্ষীরা, চুয়াডাঙ্গা, বেসুগাড়া এবং ভোলা জেলাগুলোর ওপর দিয়ে মৃদু তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে এবং তা অব্যাহত থাকতে পারে। এদিন সারাদেশে দিন এবং রাতের তাপমাত্রা সামান্য বাড়তে পারে। আর জলীয় বাষ্পের আধিক্যের কারণে অস্বস্তিভাব বিরাজ করতে পারে।
আবহাওয়াবিদ মো. ওমর ফারুক জানান, বৃহস্পতিবারও (২৩ মে) ঢাকা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের দুয়েক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা/ঝোড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি/বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। এ ছাড়া, দেশের অন্যত্র অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকতে পারে। এ সময় সারাদেশে দিন ও রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে। জলীয় বাষ্পের আধিক্যের কারণে অস্বস্তিভাব বিরাজমান থাকতে পারে।
আর শুক্রবার (২৪ মে) খুলনা, বরিশাল ও চট্টগ্রাম বিভাগের অনেক জায়গায় এবং ঢাকা ও সিলেট বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা/ঝোড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি/বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। এ ছাড়া, দেশের অন্যত্র অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ আবহাওয়া প্রধানত শুল্ক থাকতে পারে। ওইদিন সারাদেশে দিনের তাপমাত্রা এক থেকে দুই ডিগ্রি কমতে পারে এবং রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে। জলীয় বাষ্পের আধিক্যের কারণে অস্বস্তিভাব বিরাজ করতে পারে। এদিকে, বর্ধিত ৫ দিনের আবহাওয়ার অবস্থা বলছে, বৃষ্টিপাতের প্রবণতা বাড়তে পারে।
সারাবাংলা/জেআর/পিটিএম